মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে পুলিশের উপস্থিতিতেই তিন প্রতিবন্ধীর বাবা আব্দুল কুদ্দুসকে (৫২) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার ও জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই দফায় সংঘর্ষে আহত হন কয়েকজন। এদের মধ্যে ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস (৫২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
তবে নিহতের পরিবার ও স্বজনদের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হয়েছে। নিহত কুদ্দুস মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের আঁটিপাড়া গ্রামের মৃত মিনাজ উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকাল সাতটার দিকে সিরাজপুর হাটের উত্তর পাশে পাকা রাস্তায় আবু কালামের নেতৃত্বে মিলন, জুবায়ের, আব্দুল আলীম, রাসেল, জব্বার, হারুনসহ ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ শাহিনুর ও ফারুকের ওপর হামলা করে।
এ সময় হামলাকারীদের দায়ের কোপে শাহিনুরের বাম পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে শান্তিপুর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
এরপর নয়টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতেই দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ চলাকালে আঁটিপাড়া মসজিদের সামনের পাকা রাস্তায় ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুসের ওপর আবারও হামলা করে তারা।
এ সময় তাদের এলোপাতাড়ি দায়ের কোপে গুরুতর আহত হন তিনি। কুদ্দুসকে বাঁচাতে বোন জাবেদা এগিয়ে গেলে তিনিও রক্তাক্ত জখম হন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত নয়টার দিকে কুদ্দুসের মৃত্যু হয়।
এদিকে প্রথম সংঘর্ষের ঘটনায় শাহানা ইসলাম বাদী হয়ে আবু কালামকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে ওই মামলার ১০ নং আসামি মৃত রতনের ছেলে হারুনকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপরদিকে দ্বিতীয় ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতেই আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। পুলিশ ব্যবস্থা নিলে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটত না।
সিঙ্গাইর থানার শান্তিপুর (বাঘুলি) তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সালাম বলেন, পুলিশের পক্ষে দুই পক্ষের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি, তবে পুলিশের দায়িত্বে কোনো অবহেলা ছিল না।
এ ব্যাপারে সিঙ্গাইর থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, প্রথম ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে পুলিশের দায়িত্বে কোনো অবহেলা থাকলে সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
ঠিকানা/এনআই