Thikana News
২৫ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুটি বোয়িং কেনা হচ্ছে

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় জোটে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় জোটে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় জোটে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে চেয়েছিল শুরু থেকেই। গত পাঁচ বছর যাবৎই বাংলাদেশ এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে। ভারতও দীর্ঘদিন এই জোট থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত তারাও এতে জড়িত হয়েছে। ভারত বাংলাদেশকেও এতে যোগ দিতে প্রভাবিত করে আসছে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক উন্নয়ন, মানুষের জীবনমান উন্নয়নসহ সামগ্রিক উন্নয়ন ও কল্যাণের লক্ষ্যে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোকে নিয়ে শক্তিশালী জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই জোটে এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপানসহ নয়টি শিল্পোন্নত, উন্নত দেশ যুক্ত হয়েছে। ভারতও শেষ পর্যন্ত এই জোটে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছে। আর্থসামাজিক-কৃষি-শিল্প-পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি সাধনের কথা বলা হলেও এই জোটকে একটা পর্যায়ে সামরিক জোটে রূপান্তর করার পরিকল্পনা পশ্চিমাদের, বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
চীন অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক ও সামরিক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ডিঙিয়ে গেছে এবং তাদের জন্য হুমকি হয়ে নিজের আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছে। বিশেষ করে, নৌশক্তিতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে আছে। দক্ষিণ চীন সাগর ছাড়াও জাপান সাগর, ভূ-মধ্যসাগর, এমনকি প্রশান্ত মহাসাগরসহ বিশ্বের বহু গুরুত্বপূর্ণ, স্পর্শকাতর এলাকায় চীনের নৌশক্তির প্রাধান্যসহ অস্তিত্ব জাহির করছে।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র তার নিরঙ্কুশ আধিপত্য, কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহকে ধাপে ধাপে যুক্তরাষ্ট্র তার অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক বলয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা উল্লেখযোগ্য সাফল্যও পেয়েছে। ভারত দ্বিধান্বিত ছিল। সময়ক্ষেপণ করছিল। শেষ পর্যন্ত তারা মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হতে যাচ্ছে। বঙ্গোপসাগরের ভারতীয় আওতাধীন ১২টি স্থানে মার্কিন সাবমেরিনের অবস্থান করার সুযোগ দিয়েছে ভারত। জ্বালানি সংগ্রহসহ তারা এসব ঘাঁটিতে নিরাপদে অবস্থান করতে পারবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেন্টমার্ন্টিন দ্বীপ দীর্ঘ মেয়াদে লিজ নিতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাতে সম্মত হননি। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ভারত এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে। ভারতীয় কঠোর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রকে বাধ্য করে তার অবস্থানের পরিবর্তন করতে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় জোটে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করার মার্কিন পরিকল্পনায় ভারত অনেকাংশে সফল হতে যাচ্ছে। তবে শুধু কৃষি-অর্থনৈতিক, সামাজিক-পরিবেশগত প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এই জোটভুক্ত হয়ে দেশের ও এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, কল্যাণে ভূমিকা রাখতে আগ্রহী বলে জানা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেখ হাসিনা ও তার সরকারের প্রতি কিছুটা হলেও নমনীয়তার নীতি নেওয়ার এটিই মুখ্য কারণ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইতিবাচক মনোভাব আগেও দেখিয়েছিল। এখন তা আনুষ্ঠানিক রূপ নিতে যাচ্ছে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকারের এ পদক্ষেপে চীনের বিরোধিতার সুযোগ নেই। তবে তারা যুক্তরাষ্ট্র-ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে জড়িয়ে পড়ে কি না, তা-ও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

 

কমেন্ট বক্স