পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ছাত্রকে গুলি করা শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মো. জুলহাজ উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জুলহাজ উদ্দীন বলেন, বলিউডের খ্যাতনামা অভিনেতা নানা পাটেকর অভিনীত ‘আব-তাক ছাপ্পান’ সিনেমার দুটি পার্ট একাধিকবার দেখে আগ্নেয়াস্ত্র কেনার প্রতি ডা. রায়হান অনুপ্রাণিত হন। এই শখের নেশা পূরণে তিনি অনেক দিন ধরেই অস্ত্রের অনুসন্ধান করছিলেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এলাকার এক পেশাদার অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছে থেকে পরপর দুটি বিদেশি পিস্তল কেনেন।
জুলহাজ উদ্দীন বলেন, ডা. রায়হান অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশি চাকু ও ছুরি কিনেছেন। সব অস্ত্রই তিনি শখের বশে কিনেছেন বলে দাবি করেছেন। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আরও কিছু অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা ছিল তার। অস্ত্র ব্যবহার করে বড় ধরনের কোনো নাশকতার পরিকল্পনার ছক তার ছিল না বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, ডা. রায়হান শরীফকে জিজ্ঞাসাবাদে অবৈধ অস্ত্রের একজন জোগানদাতার তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি যার কাছে থেকে অস্ত্র কিনেছিলেন, তিনি পেশাদার অস্ত্র ব্যবসায়ী। তার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে ওই অস্ত্র ব্যবসায়ীর নাম বলা যাচ্ছে না। ওই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনারও চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ বিকেলে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় কথা বলার একপর্যায়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালের পায়ে গুলি করেন ওই কলেজের প্রভাষক ডা. রায়হান শরীফ। ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডা. রায়হান শরীফকে তাদের হেফাজতে নেয়। এরপর তার কাছে থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি ও একাধিক বিদেশি চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ছাত্র আরাফাত আমিন তমালের বাবা আব্দুল্লাহ-আল আমিন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি ও গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে অপর একটি মামলা দায়ের করেন।
ঠিকানা/এনআই