জানা গেছে, শুধু জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালেই রমজানের শুরু থেকে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৪৫ থেকে ৫০ জন ডায়রিয়ার রোগী। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কনসালটেশন সেন্টারেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রমজানের শুরু থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৩৪ জন রোগী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের শয্যা, মেঝে ও বারান্দায় শুয়ে রোগীদের চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক। তারা প্রচণ্ড জ্বর, শরীর ব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা ও পেটের ব্যথায় ভুগছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত পাঁচবিবি উপজেলার শিমুলতলী গ্রামের শিশু মুরছালিনের অভিভাবক মোবারক হোসেন জানান, তারা গত পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। তাদের এলাকার অনেক শিশুও এখানে রয়েছে। আজ আরও কয়েকজন ভর্তি হয়েছেন। পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জায়গা না পেয়ে সবাই জেনারেল হাসপাতালে এসেছেন।

সদর উপজেলার হানাইল গ্রামের জাকির হোসেন জানান, ১৯ মার্চ (মঙ্গলবার) ইফতারের পর হঠাৎ তাঁর স্ত্রীর পেটে ব্যথার পাশাপাশি বমি শুরু হয়। এরপর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখানে আসার পর তিনিও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। হাসপাতালের পরিবেশ খুবই খারাপ। রোগীর চাপে মেঝেতে পা রাখার জায়গা নেই বলে জানান তিনি।
পৌরসভার মুসলিমনগরের গোলাম আজম বলেন, প্রথমে পেটে ব্যথা, এরপর পাতলা পায়খানা শুরু। সেহরিতে খাওয়ার সময় পানি ঘোলা দেখেছি। আমার ধারণা, পৌরসভার সরবরাহ করা পানির কারণেই ডায়রিয়া হয়েছে।
জায়গার অভাবে মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক বলেন, শুষ্ক মৌসুম, রমজানে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ ও পৌরসভার পানির কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছি। শহরে রাস্তার কাজ চলছে, পানির লাইন ফেটে যাওয়ার কারণে সরবরাহ করা পানি দূষিত হয়ে এ সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মাত্রাটা বেশি। গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় ২০০ নারী-পুরুষ ও শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে ডায়রিয়ার প্রকোপের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবারই জয়পুরহাট পৌরসভা একটি ঘোষণায় জানায়, পৌরসভার রাস্তা সম্প্রসারণ কাজের কারণে পানির লাইনের পাইপ কেটে বা ফেটে যাওয়ায় সরবরাহ করা পানি দূষিত হতে পারে। এ জন্য গ্রাহকদের সাময়িকভাবে পানি ফুটিয়ে পান করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঠিকানা/ছালিক