Thikana News
০৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

এ বছর ফিতরা ১০-২০ ডলার

এ বছর ফিতরা ১০-২০ ডলার



 
আগামী ১০ এপ্রিল হতে পারে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের নামাজের আগেই মুসলিমদের ফিতরার অর্থ পরিশোধ করতে হবে। ফিতরার অর্থের পরিমাণ নিউইয়র্কের একেক মসজিদে একেক রকম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ফিতরা সর্বনিম্ন ১০ ডলার আর সর্বোচ্চ ২০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর অতিরিক্তও কেউ চাইলে দিতে পারবেন।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের (জেএমসি) পক্ষ থেকে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ ডলার। জেএমসির সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন মান্নান বলেন, এবার আমাদের মসজিদ থেকে আমরা ফিতরা ১০ ডলার নির্ধারণ করেছি। কিন্তু কেউ চাইলে এর বেশিও দিতে পারবেন। আমরা এমনভাবে হিসাব করেছি, যাতে মানুষ সহজেই ফিতরা দিতে পারেন। একটি পরিবারে যতজন মানুষ আছে, ততজন মানুষের জন্যই ১০ ডলার করে ফিতরা দিতে হবে।
মোহাম্মাদিয়া সেন্টার ও নিউইয়র্ক ঈদগাহর পক্ষে থেকে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ ডলার। এ ব্যাপারে সেখানকার পরিচালক ও মাওলানা কাজী কাইয়্যূম বলেন, এবার আমরা সর্বনিম্ন ফিতরা নির্ধারণ করেছি ২০ ডলার। কেউ চাইলে বেশিও দিতে পারেন। কিন্তু আমরা হিসাব করি একজন মানুষের দুবেলা খাবারের মূল্যের পরিমাণ। এই খাবার হতে পারে ইফতার কিংবা দুপুর বা রাতের খাবার।
দারুল সালাম মসজিদের পক্ষ থেকে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ ডলার। শরিয়া বোর্ডের ন্যূনতম ফিতরা হিসাবে তারা ১৫ ডলার নির্ধারণ করেছে। আল আমিন জামে মসজিদের পক্ষ থেকে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে জনপ্রতি ১৭ ডলার।
একেক মসজিদের পক্ষ থেকে ফিতরার একেক রকম অর্থ নির্ধারণ করায় মুসলমানদের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। একই স্টেটের এক এলাকার এক ব্যক্তির জন্য ১০ ডলার আবার অন্য এলাকার এক ব্যক্তির জন্য ১৫ ডলার কিংবা ১৭ ডলার অথবা ২০ ডলার কেন? অনেকেই মনে করেন, সব জায়গায় ফিতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ একই হলে সুবিধা হয়। সর্বোচ্চ যার যত খুশি দিতে পারবেন, কিন্তু ন্যূনতম ফিতরা একই হওয়া উচিত।
আমেরিকায় এ বছর সাদাকাতুল ফিতর নিম্নরূপ :
* আটার হিসাব-১২ ডলার
* যবের হিসাব-১৭ ডলার
* খেজুরের হিসাব-৩৭ ডলার
* কিশমিশের হিসাব-৪৬ ডলার
* পনিরের হিসাব-৪৭ ডলার
বিভিন্ন মসজিদ সূত্রে জানা গেছে, তারা ফিতরা নির্ধারণ করেন কোনো মসজিদে দুই বেলার খাবার হিসাবে, কোনো কোনো স্থানে আড়াই কেজি আটা কিংবা গম হিসাবে, আবার কেউ নির্ধারণ করেন পুরোনো হিসাব অনুযায়ী। তবে যাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা বলেছেন, সর্বনিম্ন অ্যামাউন্ট হচ্ছে মিনিমাম অ্যামাউন্ট। প্রত্যেককে এই অ্যামাউন্ট দিতেই হবে, এর নিচে দেওয়া যাবে না। আর সর্বোচ্চের কোনো লিমিট নেই। যে কেউ চাইলে যত খুশি দিতে পারবেন।
এদিকে বিভিন্ন মসজিদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। হিসাব গণনায় দেখা গেছে, ১০ এপ্রিল ঈদুল ফিতর হওয়ার কথা। তার পরও চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের দিন চূড়ান্ত হবে।
মোহাম্মদিয়া সেন্টার ও নিউইয়র্ক ঈদগাহর পরিচালক মাওলানা কাজী কাইয়্যূম বলেন, আমরা জাকাতের কথাও সবাইকে বলেছি। যারা এই মাসে জাকাত দিতে চান, তারা দিতে পারেন। একজন মানুষের ব্যাংক হিসাবে যদি সারা চাঁদ বছরের জন্য সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের দাম থাকে, তাহলে তাকে জাকাত দিতে হবে। বর্তমানে পুরোনো স্বর্ণের দাম প্রতি গ্রাম ৫৫ ডলার করে ধরলে দাম আসে ৪ হাজার ৭৮৫ ডলার। সারা বছর এই অর্থ ব্যাংকে থাকলে কিংবা ঘরে স্বর্ণ থাকলে এর দাম ধরে এর আড়াই শতাংশ দাম ধরে জাকাত দিতে হবে।
তিনি বলেন, রোজার মাসে দেখা যাচ্ছে অনেকেই জাকাতের অর্থ সংগ্রহ করছেন। কিন্তু যারা জাকাত দিচ্ছেন তাদেরকে সতর্ক করে বলতে চাই, আপনি এমন একটি জায়গায় বা এমন কারও মাধ্যমে আপনার জাকাতের অর্থ দেন, যাতে সেই অর্থ সত্যিকার দরিদ্র মানুষেরা পায়। এমন যাতে না হয়, কেবল একটি বা দুটি সংগঠনের মানুষ জাকাত পায়। অনেক সময় দেখা যায়, জাকাতের অর্থ এমন মানুষের কাছে দেওয়া হয়, তিনি কেবল তার পছন্দের মানুষের মধ্যে জাকাত বিতরণ করবেন। এর ফলে সমাজের সর্বস্তরের দরিদ্র মানুষেরা পাচ্ছে না। পাচ্ছে কোনো একটি মতাদর্শে বিশ্বাসী গোষ্ঠী। এ কারণে বলব, যারা জাকাত দিচ্ছেন তারা অবশ্যই সতর্কভাবে সব অর্থ দেবেন, যাতে সত্যিকার অর্থে সব মানুষেরা পায়। বাবা-মা ছাড়া অন্য যে কাউকে জাকাত দেওয়া যাবে। তাই শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাইবোন, ভাগ্নে-ভাগ্নি, ভাতিজা-ভাতিজি, ননদ, দেবর, এদের সন্তান এবং অন্যান্য গরিব আত্মীয়স্বজনকে জাকাত দেওয়া যেতে পারে।
এদিকে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারও (জেএমসি) জাকাতের অর্থ ওঠাচ্ছে। কেউ চাইলে সেখানেও জাকাত বক্সে অর্থ দিতে পারবেন। জেএমসির সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন মান্না বলেন, আমরা দরিদ্র মানুষের কাছে জাকাত পৌঁছে দেব। এবার বেশির ভাগ অর্থ দেওয়া হবে গাজায় মুসলিমদের জন্য। কেয়ারসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গাজায় জাকাত পাঠানো হবে।

কমেন্ট বক্স