রান উৎসবের ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। শ্রেয়াস আইয়ারদের জয় ১০৬ রানের বড় ব্যবধানে। আইপিএল ইতিহাসে রানের হিসাবে এটা নবম সর্বোচ্চ জয়। সবচেয়ে বড় জয়টি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের। ২০১৭ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে ১৪৬ রানে হারিয়েছিল তারা।
বুধবার (৩ এপ্রিল) শুরুতে ২৭২ রান করে দিল্লিকে ১৬৬ রানে গুটিয়ে দেয় কলকাতা। ম্যাচসেরা হন সুনীল নারাইন। তিন ম্যাচে তিন জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে তারা। সমানসংখ্যক পয়েন্ট সত্ত্বেও নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় দুইয়ে রাজস্থান রয়্যালস। দিল্লি ২ পয়েন্ট নিয়ে আছে ৯ নম্বরে।
রান তাড়া করতে নেমে ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দিল্লি। পৃথ্বD শ ১০, মিচেল মার্শ ০, অভিষেক পুড়েল ০ ও ডেভিড ওয়ার্নার আউট হন ব্যক্তিগত ১৮ রানে। এরপর রিশাভ পন্ত ও ত্রিস্টান স্টাবস মিলে হাল ধরেন। পন্ত ভেঙ্কটেশ আইয়ারের এক ওভারে তুলে নেন ২৮ রান। স্টাবসকে নিয়ে ৯৩ রানের জুটি গড়ার পর ৫৫ রান করে বিদায় নেন দিল্লির অধিনায়ক। ২৫ বলে ৪টি চার ও ৫টি ছক্কা হাঁকান তিনি।
এরপর স্টাবস ছাড়া আর কেউ লড়াইটুকু পর্যন্ত করতে পারেননি। ৩২ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে ভরুন চক্রবর্তীর ওভারে বিদায় নেন প্রোটিয়া হার্ডহিটার। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও সমানসংখ্যক ছয়ের মার। বাকিদের মধ্যে সুমিত কুমার ৭ ও এনরিখ নর্কিয়া ৪ রান করেন। কলকাতার হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন ভইভভ অরোরা ও ভরুন। মিচেল স্টার্ক নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট পান আন্দ্রে রাসেল ও নারাইন।
এর আগে নারাইন, অঙ্কৃশ রঘুবংশী, রাসেল ও রিঙ্কু সিংদের তাণ্ডবে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭২ রান করে কলকাতা। এদিন দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন নারাইন। মাত্র ৩.৫ ওভারে ৫০ রান তোলে কলকাতা। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে ফিল সল্ট যখন ১২ বলে ১৮ রান করে আউট হন, ততক্ষণে কেকেআরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬০।
সল্ট আউট হলেও নারাইন-ঝড় চলে আরও অনেকক্ষণ। রঘুবংশী ও নারাইন মিলে দিল্লির বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দেন। মাত্র ৮ ওভারে ১০২ রান যোগ করে এই জুটি। ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে মার্শের বলে বিদায় নেন নারাইন। আউট হওয়ার আগে এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার ৩৯ বলে ৭টি করে চার-ছক্কায় ক্যারিয়ার-সেরা ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন।
নারাইনের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি রঘুবংশীও। পরের ওভারেই এনরিখ নরকিয়ার শিকারে পরিণত হন তিনি। কলকাতার সংগ্রহ তখন ১৭৬! দিল্লিতে জন্ম নেওয়া ১৮ বছর বয়সী রঘুবংশী মাত্র ২৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৪ রান করেন। সুনীল নারাইনের পর আরেক ক্যারিবিয়ান আন্দ্রে রাসেলও ঝড় তোলেন এদিন। শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে জুটিতে ২৪ বলে ৫৬ রান যোগ করেন তিনি।
১১ বলে ১৮ রান করে আইয়ার বিদায় নিলে রান উৎসবে যোগ দেন রিঙ্কু। মাত্র ৮ বলে ১ চার ও ৩ ছয়ে ২৬ রানের ক্যামিও খেলেন তিনি। সে সময় মনে হচ্ছিল আইপিএলে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডই ভেঙে দেবে কলকাতা। তবে রিঙ্কুর বিদায়ের পরের বলেই রাসেল বিদায় নেন। ইশান্ত শর্মার দুর্দান্ত ইয়র্কার ঠেকাতে পারেননি তিনি। আউট হওয়ার আগে মাত্র ১৯ বলে ৪ চার ও ৩ ছয়ে ৪১ রান করেন রাসেল।
শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারায় কলকাতা। শেষ পর্যন্ত ২৭২ রানে থামে তারা। দিল্লির পক্ষে সফলতম বোলার নরকিয়া। ৪ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। ইশান্ত শর্মা ৩ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। ১টি করে উইকেট শিকার করেন খলিল আহমেদ ও মিচেল মার্শ। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন সুনীল নারাইন।
ঠিকানা/এনআই