নিউইয়র্কে হোম কেয়ার সেবা গ্রহণ করছেন অনেকেই। পরিবারের বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম, নিজের কাজ নিজে একা করতে পারেন না, কোনো মানুষের কাজ ও যত্ন করার জন্য সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জন্য সিডিপ্যাপের মাধ্যমে হোম কেয়ার সহায়তা দেওয়া হয়। এ জন্য বিভিন্ন হোম কেয়ার এজেন্সি কাজ করছে। হোম কেয়ার এজেন্সিগুলো আগে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছিল। এরপর হোম কেয়ারগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য এগুলো রেজিস্ট্র্রেশনের নিয়ম করা হয়। সেই হিসেবে ১৩০টি লিডএফআই এর অধীনে বর্তমানে আরএফও আছে এমন ৪৩০টি হোম কেয়ার এজেন্সি কাজ করছে। ছোট-বড় মিলিয়ে মোট সংখ্যা আরও বেশি।
ইমিগ্র্যান্ট এল্ডার হোম কেয়ারের চেয়ারম্যান গিয়াস আহমেদ বলেন, বর্তমানে নিউইয়র্কের গভর্নর এবং অ্যাসেম্বলি স্পিকার চাইছেন নিউইয়র্কের হোম কেয়ারগুলো পিপিএলের অধীনে পরিচালিত হবে। এটি একটি ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানী। তারা হোম কেয়ারের সবকিছু ম্যানেজ করবে। বর্তমানে নিউইয়র্কে আরএফও রয়েছে এমন মোট ৪৩০টি হোম কেয়ার আছে। এর মধ্যে লিডএফআই প্রথম পর্যায়ে পেয়েছিল ৬০টি হোম কেয়ার, পরে পেয়েছে আরও ৭০টি। মোট ১৩০টি কোম্পানি লিডএফআইর যোগ্যতা অর্জন করে। সেই হিসেবে এই ১৩০টি হোম কেয়ারের অধীনে ৪৩০টি হোম কেয়ার পরিচালিত হচ্ছে। তবে ছোট-বড় মিলিয়ে হোম কেয়ারের সংখ্যা প্রায় ৭০০। আগামী দিনে এটি স্টেটের পক্ষে আর রাখতে চাইছে না। এ ক্ষেত্রে একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়ে এতে আরও বেশি স্বচ্ছতা আনতে চাইছে।
গিয়াস আহমেদ আরও বলেন, আমরা ১৫ এপ্রিল আলবেনিতে গিয়েছি। সেখানে আমাদের দাবিদাওয়াগুলো তুলে ধরেছি। প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি। আমরা বলেছি, একটি কোম্পানির অধীনে সব হোম কেয়ার কোম্পানিকে এনে নিয়ন্ত্রণ করা ঠিক হবে না। আর একটি কোম্পানির অধীনে এতগুলো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হলে সেবার মান ব্যাহত হতে পারে। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। সে কারণে আমরা চাই এখন যে রকম আছে সেভাবেই পরিচালিত হোক। আমরা ছাড়াও অন্য হোমকেয়ার এজেন্সিগুলোর প্রতিনিধিরাও সেখানে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, কিছু কিছু হোম কেয়ারের অনিয়ম থাকতে পারে। এ জন্যই গভর্নর ও স্পিকার কড়াকড়ি করে স্বচ্ছতা আনতে চাইছেন। কিছু হোম কেয়ার ঠিকভাবে কমপ্লায়েন্স মেনটেইন করছে না। নিয়ম হচ্ছে একজন কতক্ষণ সেবা দিচ্ছেন, সে জন্য ক্লক আওয়ার থাকবে। ক্লক ইন ও ক্লক আউট হবে। এটা ডিজিটালি হবে। কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান এটি ডিজিটালি না করে মেন্যুয়ালি করে। এতে ঘণ্টার হিসাব সব সময় ঠিকমতো হচ্ছে না। আবার এমনও হয় দেখা যায়, কেউ দিচ্ছে ২১ ডলার করে আওয়ার, কেউ ২৩ ডলার। যেখানে নির্দিষ্ট রয়েছে ২১ ডলার করে ঘণ্টায় বেতন দিতে হবে, সেখানে তারা অনিয়ম না করলে বেশি দিচ্ছে কোথা থেকে। এই অর্থই-বা কেমন করে তারা ম্যানেজ করে। আসলে আমরাও চাই স্বচ্ছতা আসুক। যেসব কোম্পানি অনিয়ম করছে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হোক। তাদের কাজ মনিটর করা হোক। অনিয়ম প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু সব কোম্পানিকে একটি কোম্পানির অধীনে আনলে সেবার মান একই রকমভাবে ধরে রাখা সম্ভব হবে না।
এদিকে বারী হোমস কেয়ারের চেয়ারম্যান আসেফ বারী টুটুল বলেন, আমরা ১৩০টি কোম্পানি লিডএফআই পেয়েছি। প্রথমে ৬০টি পরে ৭০টি কোম্পানি লিডএফআই লাভ করে। আমরা এর মাধ্যমেই ৪৩০টি হোম কেয়ার পরিচালনা করছিলাম। নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল একটি বিল আনেন, সব কোম্পানিকে একটি কোম্পানির অধীনে আনার। সেই কোম্পানিটি হবে পিপিএল। এই কোম্পানির কাছে সব হোম কেয়ার এজেন্সি দায়বদ্ধ থাকবে। আমরা গভর্নরের এই উদ্যোগের সঙ্গে একমত নই। আমরা মনে করি, যদি একটি কোম্পানির অধীনে এটি আনা হয়, তাহলে এখন যেভাবে সেবা দেওয়া হচ্ছে, সেটি সম্ভব হবে না।
আসেফ বারী আরও বলেন, আমরা যতটুকু শুনেছি অ্যাসেম্বলি এটা চাইছে কিন্তু স্টেট কংগ্রেস চাইছে না। যেহেতু গভর্নর চাইছেন এটি করতে, সে জন্য আমাদের হোম কেয়ারগুলোর পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা গত ১৫ এপ্রিল আলবেনিতে যান। সেখানে তারা সংশ্লিষ্টদের কাছে স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেভাবে এটি পরিচালিত হচ্ছে, সেভাবেই রাখা হোক। যদিও কানেক্টিকাটে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হোম কেয়ার সেবাগুলো পরিচালিত হচ্ছে। একটি কোম্পানির অধীনে ৪৩০টি হোম কেয়ার এজেন্সি পরিচালনা করলে এটি মনোপলিও হতে পারে।