যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদনকারী বিদেশী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। স্টুডেন্ট ভিসার উপর আরও কড়াকড়ি বৃটেনের সৃজনশীল শিল্পের জন্য গুরুতর প্রভাব ফেলবে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিল্প নেতারা আশঙ্কা করছেন যে, মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটির (MAC) রিপোর্টের ফলাফলের উপর নির্ভর করে, গ্র্যাজুয়েট ভিসার এনটাইটেলমেন্ট (যা আন্তর্জাতিক গ্র্যাজুয়েটদের যুক্তরাজ্যে তিন বছর পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ দেয়) তা বাদ দেওয়া হতে পারে বা হ্রাস করা হতে পারে। ক্রিয়েটিভ ইউকে, যা সৃজনশীল শিল্পের প্রতিনিধিত্ব করে বলেছে যে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য স্নাতক শেষ করার পরে যুক্তরাজ্যে থাকার এবং কাজ করার ক্ষমতা কেড়ে নেয়া এখানে অধ্যয়নের জন্য আগ্রহী পড়ুয়াদের নিরুৎসাহ করবে। এই পদক্ষেপ বছরে ১০৮ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একটি সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি সমীক্ষা অনুসারে, এই বছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের উপর আরোপিত বিধিনিষেধ বিদেশ থেকে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা হ্রাস করতে পারে এবং গ্র্যাজুয়েট ভিসার ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিতে পারে।
বৃটিশ ইউনিভার্সিটিজ ইন্টারন্যাশনাল লিয়াজোন অ্যাসোসিয়েশনের ৭৫টি প্রতিষ্ঠানের জরিপে দেখা গেছে যে ১০টির মধ্যে নয়টিতে পরের শিক্ষাবর্ষের জন্য আন্তর্জাতিক আবেদনের সংখ্যা কমেছে এবং গত বছরের তুলনায় স্নাতকোত্তর কোর্সের জন্য মোট আবেদনের পরিমাণ ২৭% হ্রাস পেয়েছে। ক্রিয়েটিভ ইউকে এবং ইউনিভার্সিটিজ ইউকে-এর একটি যৌথ চিঠি, যা ভাইস-চ্যান্সেলরদের প্রতিনিধিত্ব করে, সেখানে সরকারকে স্নাতক ভিসা রুট বাতিল বা সীমাবদ্ধ করার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে এই যুক্তি দেয়া হয়েছে যে আন্তর্জাতিক গ্র্যাজুয়েটরা মহাকাশ, জীবন বিজ্ঞান এবং স্বয়ংচালিত শিল্প মিলিয়ে যুক্তরাজ্যের সৃজনশীল শিল্পের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সেন্ট অ্যান্ড্রুজ ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর এবং ইউনিভার্সিটি ইউকে-এর প্রেসিডেন্ট স্যালি ম্যাপস্টোন রবিবার স্কাই নিউজকে বলেছেন, “আন্তর্জাতিক ছাত্ররা যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে, অর্থনীতিতে এবং চাকরি জগতে প্রচুর পরিমাণে অবদান রাখে এবং আমরা মনে করি এটি একটি ট্র্যাজেডি ডেকে আনবে- শুধু প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়, সমগ্র যুক্তরাজ্যের জন্যই – যদি সরকার নতুন ভিসা নীতি গ্রহণ করে তবে এটি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের সংখ্যা আরো সীমিত করবে।'
গত সপ্তাহে রবার্ট জেনরিক, একজন প্রাক্তন অভিবাসন মন্ত্রী, সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজ থিঙ্কট্যাঙ্কের সাথে কথা বলার সময় স্নাতক ভিসা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন। গোটা বিষয়ে একজন সরকারী মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা নেট মাইগ্রেশন মোকাবেলা করার জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সবচেয়ে উজ্জ্বল শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে এবং সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখার উপর পুরোপুরি মনোযোগ দিচ্ছি।’ সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
ঠিকানা/এসআর