Thikana News
২২ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

জ্যামাইকায় ‘ভালো’র মেলায়  হাজার হাজার মানুষের ঢল 

জ্যামাইকায় ‘ভালো’র মেলায়  হাজার হাজার মানুষের ঢল  নিউইয়র্ক : ভালো মেলায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় শিল্পী তাহসান।
মেঘের চোখ রাঙানি ছিল। এরপর এলো মুষলধারে বৃষ্টি। কিন্তু কোনো কিছুই বাধা হতে পারেনি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ উপভোগ করেছেন স্বেচ্ছাসেবী 
সামাজিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশি আমেরিকান হিউম্যানিটেরিয়ান এইড লিডারশিপ আউটরিচ-ভালো। গত ৩০ জুন রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা এই মেলায় জ্যামাইকার বাসিন্দা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে নানান শ্রেণিপেশার মানুষ যোগ দেন।
বাংলাদেশি আমেরিকান বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন অব হিলসাইড অ্যাভিনিউ-ব্যবসা এবং হোমকেয়ার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান  ডিএইচ কেয়ার মেলার সহ-আয়োজক ছিল। মেলার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ভালো’র প্রতিষ্ঠাতা ও ডিএইচ কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহরিয়ার রহমান। নিরলস পরিশ্রম করে মেলাকে সার্থক ও সফল করেছেন ভালো’র স্বেচ্ছাসেবীরা। 
১৬৯ স্ট্রিট থেকে ১৬৫ স্ট্রিট পর্যন্ত হাইল্যান্ড অ্যাভিনিউ জুড়ে অনুষ্ঠিত এই মেলায় শতাধিক স্টল ছিল। প্রায় প্রতিটি স্টলে ছিল উপচেপড়া ভিড়। পাশাপাশি মঞ্চে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। মেলায় গান গেয়ে দর্শক মাতিয়ে রাখেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান, ক্লোজআপ ওয়ান তারকা শিল্পী রন্টি দাশ, হালের ক্রেজ সঙ্গীতশিল্পী মুজা, মাশা ইসলাম প্রমুখ। 
মেলা মঞ্চে উপস্থিত হয়ে ভালো’র ভালো সব উদ্যোগ এবং বাংলাদেশি কমিউটির প্রশংসা করেন মূলধারার রাজনীতিকরা। তাষের মধ্যে ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট জুমানি উইলিয়ামস, নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জোহরান মামদানি ও বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষে জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি মো. ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। 
দুপুরে রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়ায় মেলায় উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টি নামে। কিন্তু বৃষ্টি মেলাকে তেমন বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। 
মেলায় পসরা সাজিয়ে বসে বিভিন্ন স্টল। ছিল অনেগুলো খাবারের স্টল। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি মালিকানাধীন হালাল চাইনিজ মি. চ্যাং এবং হালাল মেক্সিকান বিরিয়া’র খাবারের স্টলে সারাক্ষণ ছিল উপচেপড়া ভিড়। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম কর্ণধার সাজ্জাদ হোসেন জানান, মেলায় প্রচুর সাড়া পেয়েছি। বাংলাদেশি কমিউনিটি তাদের পরিবেশিত খাবার খুব পছন্দ করেছেন। 
মেলায় ছিল ফুচকা ও চটপটিসহ নানান মুখরোচক খাবারের স্টল। এছড়া বিভিন্ন স্টলে ছিল পোশাকের সমাহার। মেলায় আসা দশনার্থীরা এসব স্টল ঘুরে পছন্দের জামাকাপড় কেনাকাটা করেন। 
মেলায় শিশুদের জন্য ছিল কিডস জোন। বাউন্সি হাউজে শিশুরা মেতেছিল আনন্দে। নিউইয়র্ক পুলিশের কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো মেলায় কৃত্রিম পাহাড় এনেছিল। শিশুরা যাতে ট্র্যাকিং বা ক্লিম্বের স্বাদ পেতে পারে, এজন্যই এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর সার্জেন্ট আব্দুল লতিফ। 
এদিকে নতুন প্রজন্মকে উৎসাহ দিতে মেলায় ছিল সুপার কার গ্যালারি, যেখানে প্রদশিত হয় ফেরারি, পোরশে, বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজসহ নামিদামি ব্র্যান্ডের গাড়ি। 
আয়োজকরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের স্বপ্ন থাকে দামি গাড়ি চালানোর। তারা পড়াশোনায় ভালো করলে ভালো চাকরি পাবে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন তারা এসব গাড়ির মালিক হবে। তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে। এ কারণেই বেশকিছু দামি ব্র্যান্ডের গাড়ির সমাহার ঘটেছিল গ্যালারিতে। 
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিককালে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ‘ভালো’। ভয়াবহ করোনা মহামারিকালে গোটা নিউইয়র্ক সিটি যখন নিস্তব্ধ, মূহ্যমান শোকে, তখন ভালো’র একদল নির্ভীক তরুণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নেমে আসেন রাস্তায়। সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন করোনা আক্রান্ত মানুষের প্রতি। বিশেষ করে খাবার, চিকিৎসা ও করোনা প্রতিরোধী সামগ্রী নিয়ে। 
ভালো’র প্রতিষ্ঠাতা শাহারিয়ার রহমানের নেতৃত্বে সেই থেকে তারা দরিদ্র ও দুর্গত মানুষের পাশে থেকে কুড়িয়ে আসছেন প্রশংসা। মূলধারার জনপ্রতিনিধিদের সাথেও রয়েছে তাদের নিবিড় সর্ম্পক। রোজা, ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে ভালো আয়োজন করে থাকে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ। স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এই প্রথমবারের মতো মেলার আয়োজন করেছিল ভালো।

কমেন্ট বক্স