যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার আগেই চট্টগ্রামের মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কয়েকটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছে পূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি গঠিত উপ-কমিটি। পরিদর্শন শেষে উপ-কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্যা এম এ লতিফ এমপি সাংবাদিকদের বলেছেন, একটি পত্রিকায় খবর বেরিয়েছিল যে দুটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই কনস্ট্রাকশনে কোনো ত্রুটি আছে কি-না, কোনো অনিয়ম আছে কি-না, সেটি দেখার জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি একটি উপ-কমিটি করে দেয়। উপ-কমিটির প্রধান হিসেবে আমার সহকর্মী সংসদ সদস্যদের নিয়ে পরিদর্শনে এসেছি। আমাদের চোখে ফিনিশিং কাজেরও অনেক ত্রুটি ধরা পড়েছে। বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করব, তাদের মতামত নেওয়ার পর প্রতিবেদন জমা দিব। যাদের কারণে ত্রুটি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি অবশ্যই প্রতিবেদনে থাকবে।
জানা গেছে, সিডিএ দুই মাস আগেই এই প্রকল্পের গুণমান যাচাইয়ের জন্য ঢাকার মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) বিশেষজ্ঞ দলের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। উক্ত সমীক্ষায় এক্সপ্রেসওয়েতে বড় ধরনের কোনো ত্রুটি নেই উল্লেখ করে বলা হয়, যেসব ফাটল চিহ্নিত হয়েছে সেগুলো এক্সপ্রেসওয়ের মূল কাঠামোর জন্য হুমকি নয়। তবে ছোটখাট কিছু ত্রুটি রয়েছে যেগুলো সারানোর পাশাপাশি ফাটলের জায়গাগুলো ভবিষ্যতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্মাতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর ইত্তেফাককে বলেন, এ ধরনের বড় প্রকল্প সংসদীয় কমিটি দেখতেই পারেন। তবে এই প্রকল্পে আমরা শুধু ‘কামলা’ হিসেবে কাজ করেছি। কারণ আমরা সব কাজই করেছি সিডিএর নির্দেশনা ও পরিকল্পনা মাফিক। প্রকল্পের নকশা রিভিউ করেছে এমআইএসটি। যদি খুটিনাটি কোনো ত্রুটি থেকেও থাকে সেটা আমরা ঠিক করে ফেলব। কিন্তু এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে।
এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক সিডিএর প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের মূল অংশ নির্মাণের কাজ শেষ হলেও র্যাম্পগুলোর কাজ বাকি রয়েছে। আমরা এখনো এক্সপ্রেসওয়ে বুঝে পাইনি। আশা করি কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলেও তা আমাদের কাছে হস্তান্তরিত হওয়ার আগেই ঠিক হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের র্যাঙ্কিন জেভি।
ঠিকানা/এসআর