Thikana News
২২ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

রণক্ষেত্র শনির আখড়া, টোল প্লাজায় আগুন

রণক্ষেত্র শনির আখড়া, টোল প্লাজায় আগুন ছবি সংগৃহীত
রাজধানীর শনির আখড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৭ জুলাই) দিনভর দফায় দফায় পুলিশ ও র‍্যাবের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও সন্ধ্যার পর ফের তারা জড়ো হন। এতে স্থানীয়রাও যোগ দেন। সন্ধ্যার পর থেকে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শনির আখড়া এলাকা।

এ সময় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার টোল প্লাজায় আগুন দেওয়া হয়। কাজলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে আগুনের ঘটনাও ঘটে। থানার বাইরে থাকা র‍্যাবের একটি গাড়ি এবং থানার বাইরে পার্কিং করা ডাম্পিংয়ের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাজলা এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও র‍্যাবের সংঘর্ষ বাধে। বেলা সাড়ে পাঁচটায় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডে শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছেড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন অলিগলিতে আশ্রয় নেন। থেমে থেমে চলে সংঘর্ষ।

বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এর পর থেকে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার জানান, টোল প্লাজায় আগুন লাগার খবর পেয়ে দুটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ প্রটেকশনের অভাবে রাস্তায় আটকে আছে।

যাত্রাবাড়ী থানার এসআই আমিনুল হক বলেন, টোল প্লাজায় আগুন দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হচ্ছে। সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, যাত্রাবাড়ী থানা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ। অন্যদিকে হানিফ ফ্লাইওভারের কুতুবখালী টোল প্লাজা, মোটরসাইকেল ও সিএনজি পুড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এর আগে যাত্রাবাড়ী থানায় হামলার ঘটনা ঘটে। থানার সামনে প্রস্তুত রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত মহাসড়ক বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজি পুড়িয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

এর আগে দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন কোটা আন্দোলনকারীরা। এতে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শিশুসহ ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, শনির আখড়া থেকে আসা আহত ছয়জনকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় কোটা আন্দোলনের ঘটনায় অন্তত ৫২ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এদের মধ্যে আন্দোলনকারী, ছাত্রলীগ সদস্য, পুলিশ ও সাংবাদিক রয়েছেন।

এদিকে আগামীকাল সারা দেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সারা দেশে সম্পূর্ণ শাটডাউন পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে এক এক বিবৃতিতে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও এক দফা দাবিতে আগামীকাল (১৮ জুলাই) সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করছি।’

তিনি বলেন, ‘শুধু হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না। সারা দেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাচ্ছি আগামীকালকের কর্মসূচি সফল করুন।’

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স