রাজধানীর সড়কে লোকাল বাসের প্রতিযোগিতা এবং সেই জেরে প্রাণহানির ঘটনা নতুন নয়। একই ঘটনায় আবারও প্রাণহানি দেখল নগরবাসী। বুধবার (৯ অক্টোবর) সকালে বাড্ডায় রাস্তা পারাপারের সময় দুই বাসের প্রতিযোগিতায় চাপা পড়েন দুই বোন। তাদের একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। প্রগতি সরণি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত নারী তাসলিমা জাহান আইরিন (২৪) পেশায় একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি সিলেট শাহজাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে সম্প্রতি ঢাকায় এসে এই চাকরি নিয়েছিলেন।
এ ঘটনায় তাসলিমার বড় বোন নুসরাত জাহান জেরিন (২৮) আহত হয়েছেন। তিনিও একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তারা দুজন একসঙ্গে অফিসে যাচ্ছিলেন। আহত নুসরাত রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠায় পুলিশ।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আইরিন প্রথমে একটি আইটি ফার্মে যোগ দেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তার বড় বোনও একই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন।
জানা গেছে, বুধবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে তারা সেখানে পৌঁছান এবং অটোরিকশা থেকে নেমে ব্যস্ত সড়ক প্রগতি সরণি পার হচ্ছিলেন। ওই মুহূর্তেই আকাশ পরিবহনের দুটি বাস যাত্রী ওঠানোর জন্য একে অপরকে ওভারটেক করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি বাস সজোরে অন্যটিকে ধাক্কা মেরে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং সেই সময় ওই দুই বোনকে চাপা দেয়।
আকাশ পরিবহনের একটি বাসে থাকা যাত্রী আনিকা তাবাসসুম গণমাধ্যমকে জানান, বেশ কিছুক্ষণ ধরে বাস দুটি পাল্লা দিচ্ছিল। ঢাকা মেট্রো-ব ১৩০১৮৯ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের বাসটি আগের বাসটিকে অন্তত তিনবার ধাক্কা দেয় এবং দুই বোনকে চাপা দেয়।
তিনি আরও বলেন, বেপরোয়াভাবে বাস চালানোর কারণেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আইরিন বাসের চাকার নিচে আটকা পড়েছিলেন। পাল্লা দেওয়ার সময় দুটি বাস একে অপরকে ধাক্কা দেওয়ায় তিনি ঘাড়ে আঘাত পান। ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনো ফুট ওভারব্রিজও ছিল না।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সকালে বাড্ডার প্রগতি সরণি এলাকায় আকাশ পরিবহনের বাস চাপা দেয় তাসলিমাকে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
ঠিকানা/এনআই