দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসনের পক্ষে রায় দেওয়ার দুই সপ্তাহ পার না হতেই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু’কেও অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট।
দেশটিতে অভিশংসনে জন্য ১৫১ ভোটের প্রয়োজন পড়লেও তাকে সরানোর পক্ষে ২৭ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ভোট দিয়েছেন ১৯২ জন আইনপ্রণেতা।
এর আগে, চলতি মাসের ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদে প্রেসিডেন্ট ইউনকে অভিশংসিত করার পর প্রধানমন্ত্রী হান ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।
২০২২ সালের মে মাস থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন হান ডাক-সু। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউলের অভিশংসনের পর সম্প্রতি তিনি দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ এই পদক্ষেপ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির চলমান সাংবিধানিক সংকট আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মূলত দেশটিতে বর্তমানে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে তা থেকে দেশকে মুক্ত করতে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল হানের। কিন্তু বিরোধী এমপিরা অভিযোগ করেছিলেন, তিনি ইউনের অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার দাবি প্রত্যাখ্যান করছেন।
এর আগে, পার্লামেন্টে অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপন করে বিরোধীরা। সেখানে তারা বলেন, হান ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্রোহের সাথে জড়িতদের শনাক্ত করতে বিশেষ তদন্ত এড়িয়ে যাচ্ছেন এবং সাংবিধানিক আদালতের তিনজন বিচারকের নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে তার উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছেন। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই ধরনের কাজ একজন সরকারি কর্মকর্তার আইন সমুন্নত রাখা এবং জনগণের সেবা করার দায়িত্বের লঙ্ঘন।
বিরোধী দল তাদের চেষ্টায় সফল হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপ্রধানের দ্বিতীয় অভিশংসন দেখলো। আর এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথমবারের মতো একজন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত হলেন।
মূলত পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির বর্তমান বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সাংবিধানিক আদালতের গঠন, যা ইউনকে অভিশংসনের সংসদীয় সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে কি না তা নির্ধারণ করবে।
সাংবিধানিক আদালতে বর্তমানে তিনজন বিচারকের অভাব রয়েছে। আদালত বেঞ্চের ছয় সদস্য নিয়েই এগিয়ে যেতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একটি মাত্র ভোট বিপক্ষে পড়লেই তা ইউনকে পুনর্বহালের জন্য যথেষ্ট হবে।
বিরোধীরা চায় হান ৯ সদস্যের বেঞ্চ পূরণের জন্য আরও তিন জন মনোনীত ব্যক্তিকে অনুমোদন দিন। কিন্তু তিনি এখনও এটি করতে অস্বীকার করে চলেছেন। মূলত এই বিষয়টি নিয়ে দেশটিতে অচলাবস্থা চলছে।
ঠিকানা/এএস