Thikana News
০১ নভেম্বর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫





 

২০২৪ সালের প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা, শোকে স্তব্ধ করে দিলো জেজুর ফ্লাইটটি

২০২৪ সালের প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা, শোকে স্তব্ধ করে দিলো জেজুর ফ্লাইটটি ছবি : সংগৃহীত





 
দক্ষিণ কোরিয়ায় জেজু এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে, যা ২০২৪ সালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার উড়োজাহাজে ১৮১ যাত্রী ও ক্রু ছিলেন। ধ্বংসাবশেষ থেকে দু'জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, তবে বাকি যাত্রী ও ক্রুদের মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনাটি এ বছরের সবচেয়ে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার অন্যতম, যা বিমানযাত্রার নিরাপত্তা নিয়ে চলমান উদ্বেগের ইঙ্গিত দেয়। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের। 

জেজু এয়ার-এর ফ্লাইটটি রাজধানী সিউল থেকে দেশটির দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত  প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র জেজু দ্বীপে যাচ্ছিল। উড্ডয়নের পরপরই এটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, যার ফলে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
 
এই ঘটনার পরপরই বড় আকারের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয় এবং জরুরি সংস্থার সদস্যরা এখনও জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার আশায় ধ্বংসাবশেষে তল্লাশি চালাচ্ছেন। বছরের শেষপ্রান্তে মর্মান্তিক ঘটনাটি চলতি বছরজুড়ে বিমান দুর্ঘটনাগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে আগস্টে ব্রাজিলে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা এবং গত সপ্তাহে কাজাখস্তানে আজারবাইজানের বিমান দুর্ঘটনা, যেগুলোতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রাণহানি ঘটেছে।

জেজু এয়ারের এই দুর্ঘটনা এখন বছরের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। চলতি বছর সারা বিশ্বে একাধিক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা বিমান নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বছরের প্রথম বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে ৯ আগস্ট ব্রাজিলে। ভোপাস এয়ারলাইনসের পরিচালিত একটি এটিআর-৭২ উড়োজাহাজ সাও পাওলোর ভিনহেদোতে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৬২ যাত্রী প্রাণ হারান। উড়োজাহাজটি কাসকাভেল থেকে গুয়ারুলহোস যাচ্ছিল এবং এটি একটি আবাসিক এলাকার কাছে বিধ্বস্ত হলে এতে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। নিহতদের দেহ এতটাই ঝলসে গিয়েছিল যে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে উঠে। এ বিষয়ে বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানায়, ফ্লাইট চলাকালীন পাইলটরা হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রাজনিত সমস্যা মোকাবিলা করছিলেন।

কাজাখস্তানে বুধবার সকালে আজারবাইজান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে ডজন খানেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
উড়োজাহাজটি বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনি যাচ্ছিল এবং এটি কাজাখ শহর আকতাউয়ের কাছে বিধ্বস্ত হয়। ২৫ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
 
জেজু এয়ারের এই মর্মান্তিক ঘটনাটির পাশাপাশি, এ বছর আরও কয়েকটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২ জানুয়ারি জাপানের রাজধানী টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ এবং একটি কোস্টগার্ডের উড়োজাহাজের সংঘর্ষ ঘটে। এতে কোস্টগার্ডের পাঁচ সদস্য নিহত হন। তবে, বাণিজ্যিক ফ্লাইটটির ৩৭৯ যাত্রী ও ক্রুকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

৫ জানুয়ারি আলাস্কা এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-নাইন উড়োজাহাজটি মাঝআকাশে ফিউজলাজের একটি অংশ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবতরণ করে। উড়োজাহাজটি ওরেগন থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় পথে ছিল এবং বিপজ্জনক পরিস্থিতি সত্ত্বেও এটি নিরাপদে অবতরণ করতে সক্ষম হয়। ফ্লাইটে ১৭১ যাত্রী এবং ছয় ক্রু ছিলেন। আরেকটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে ২৪ জুলাই নেপালে, যখন সাউর্য এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের সময় বিধ্বস্ত হয়। ফ্লাইটে থাকা ১৯ জনের মধ্যে ১৮ জনই নিহত হন। গুরুতর আহত পাইলট বেঁচে যান এবং পরে দুর্ঘটনার বিষয়ে তথ্য দেন।

বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পাশাপাশি, এ বছর একাধিক সামরিক বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়। ২৪ জানুয়ারি রাশিয়ার বেলগোরোডে একটি রুশ সামরিক উড়োজাহাজ, যেটি ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের বহন করছিল, একটি কিয়েভ বাহিনীর রকেটের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজে থাকা ৭৪ জনই নিহত হন, যার মধ্যে ছয়জন ক্রু এবং ৬৫ ইউক্রেনীয় সেনা ছিলেন। 

১২ মার্চ রাশিয়ার আরেকটি সামরিক উড়োজাহাজ আইএল-৭৬  ইভানোভো শহরে বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৫ জনের সবাই নিহত হন। দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে জানা যায় বিমানের একটি ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। এছাড়াও, ১২ জুলাই সুখোই সুপারজেট-১০০ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার শিকার হয়, যা ত্রেতিয়াকভো বিমানবন্দর থেকে ভনুকভো বিমানবন্দরে যাচ্ছিল। এই দুর্ঘটনায় তিনজন ক্রু নিহত হন।

ঠিকানা/এএস 

কমেন্ট বক্স