বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারি। দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একসাগর রক্তের বিনিময়ে বিজয় অর্জনের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানে দীর্ঘ কারাবাস শেষে লন্ডন ও দিল্লি হয়ে সদ্য স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্বপরিকল্পিত বাঙালি নিধনযজ্ঞের নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বাস্তবায়ন শুরু করে। লাখ লাখ নিরীহ বাঙালি জনগণের ওপর আক্রমণ ও গণহত্যা চালায় তারা। এই প্রেক্ষাপটে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার মাধ্যমে তিনি সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ লড়াই শুরু করার ডাক দেন। স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানি সেনারা বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসা থেকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে আটকে রাখেন। এই কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে কাটে বঙ্গবন্ধুর ৯ মাস ১৪ দিনের কঠিন কারাজীবন। কারাগারে বন্দি করা হলেও বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার নামেই চলে মুক্তিযুদ্ধ।