Thikana News
০২ নভেম্বর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫





 

হতাশ বাম ও ধর্মীয় নেতারা

হতাশ বাম ও ধর্মীয় নেতারা সংগৃহীত





 
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেপথ্যে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিল বাম সংগঠনগুলো। আন্দোলন সংগঠিত করতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন গণসংহতি পরিষদসহ বাম ধারার নেতারা। সেই বাম দলগুলো ও তাদের নেতারা এখন সরকারের অনাদর ও উপেক্ষার পত্র হয়েছেন, যা তাদেরকে দারুণভাবে হতাশ, অসন্তুষ্ট করেছে।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের নামকরণ করেন বাম নেতারা। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জোনায়েদ সাকীর সংগঠন, ভিপি নুরুল হক নুরের গণসংহতি পরিষদ, সাইফুল হকের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ কয়েকটি ছোট বামপন্থী দল, বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারবিরোধী সংগঠন গড়ে তোলে। কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসায় অভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে। শিক্ষার্থীরা এতে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত হয়। উদ্যোগী রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো নিজস্ব দলের শাখা, কমিটি করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে। বৈষম্যবিরোধী নামে তারা সবখানে শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদের সংগঠিত হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তবে এরা যে সরকার উৎখাত করতে নেমেছে, শিক্ষার্থীদের দাবির আড়ালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে, তা বুঝে উঠতে পারেননি। বামপন্থী দলগুলো তা আঁচ করতে পারেনি। একমাত্র জোনায়েদ সাকী, সাইফুল হক, নুরুল হক নুর ছিলেন ব্যতিক্রম। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে তেমন আশঙ্কার কথাও ব্যক্ত করা হয়নি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত রয়েছে এসবের পেছনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক এবং বামধারার কয়েকজন নেতার সঙ্গে মোসাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। গণসংহতি পরিষদের নুরুল হক নুরের সঙ্গে মোসাদের যোগাযোগ, গভীর আস্থাশীল সম্পর্ক নিয়ে ইতিপূর্বে পত্র-পত্রিকায় খবর প্রচারিত হয়েছিল। তার পরও সরকার মুখে সরকারবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্র চলমান বলে প্রচার-প্রচারণা চালালেও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ এবং সেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদ্ধতি-প্রক্রিয়া বুঝতে পারেনি সরকারি সংস্থাসমূহ।
সূত্রে জানা যায়, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন সংগঠিত করা এবং চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে সফল করতে বিদেশ থেকে বিশাল অঙ্কের অর্থ এসেছে। কোত্থেকে কারা এ অর্থ দিয়েছে, কাদের মাধ্যমে কীভাবে বিতরণ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে জানা যায়নি। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ নিয়ে কাজ করছে। এ ব্যাপারে মোসাদ মুখ্য ভূমিকা পালন করে বলে জানা যায়। গণসংহতি পরিষদ, নুরুল হক নুরের মাধ্যমে বামধারার দলগুলো ও ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে গভীর যোগাযোগ ও সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়।
সরকার পরিবর্তনের পর বাম ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো যথাযথ মর্যাদা, গুরুত্ব পায়নি বলে অভিযোগ, আক্ষেপ রয়েছে। এসব সংগঠন থেকে উপদেষ্টা পদে নিয়োগ লাভের জন্য ১২ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কেরা কোনো রাজনৈতিক দল, ইসলামি দলের পরিচিত, প্রতিষ্ঠিত কাউকে সরকারে না নিয়ে অরাজনৈতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। এ পর্যায়ে সরকারে না থাকলেও সামনের নির্বাচনে তাদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সদস্যের নির্বাচিত হয়ে আসার ব্যাপারে দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতারা গভীরভাবে আশাবাদী। এ ব্যাপারে সময়মতো ফলপ্রসূ আলোচনা ও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আশ্বস্ত করা হয়েছে বলে জানা যায়।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এসব দলকে যথেষ্ট গুরুত্বসহকারে না ডাকার ঘটনায় অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রথম পর্যায়ে তাদের ডাকা হয়নি। দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার জন্য ডাকার ব্যবস্থা করা হয় সমন্বয়কদের মধ্যস্থতায়। এ অবস্থায় ভবিষ্যতে তাদের কতটা মূল্যায়ন বা গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়ে গভীরভাবে সন্দিহান ও শঙ্কিত বামধারার ও ধর্মীয় দলগুলোর নেতারা।
 

কমেন্ট বক্স