Thikana News
২৫ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে লক্ষ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ

হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে লক্ষ কোটি টাকা দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি  দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের টিম তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগের তদন্ত করছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনা ও জয় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ৩ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা (৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) পাচার করেছেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, আশ্রয়ণ প্রকল্প, রাশিয়া থেকে আটটি যুদ্ধবিমান ক্রয়, কানাডীয় কোম্পানি নাইকো রিসোর্সকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, নৌবাহিনীর জন্য পুরাতন যুদ্ধজাহাজ ফ্রিগেট ক্রয়, মেঘনাঘাট বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপন, খুলনা ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার নির্মাণ প্রকল্প, টুঙ্গিপাড়ায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণÑবড় বড় এসব প্রকল্প ছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে ৯০ হাজার কোটি থেকে এক লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে। বিভিন্ন অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার পুত্র জয়, বোন শেখ রেহানা ও রেহানা-কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকের নামও আসছে।
অন্তর্বর্তী সরকার সব রকম প্রভাবমুক্ত থেকে শতভাগ নিরপেক্ষতার সঙ্গে দুর্নীতির অভিযোগগুলোর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারের দায়িত্বে থেকে একজন কর্তৃক এভাবে অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘটনা বিস্ময়কর, অচিন্ত্যনীয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি (৫৯ হাজার কোটি টাকা) দুর্নীতি হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হওয়ার ঘটনা উদঘাটিত হয়েছে। এগুলো তদন্ত করা হচ্ছে।
গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামক এক ওয়েবসাইটে রাশিয়া থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নির্মাণে বিশাল অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। রাশিয়ার কোম্পানি রোস্টামের কাছ থেকে পারমাণবিক চুল্লি সংগ্রহ করা হয়। এই ক্রয়ে বিশাল অঙ্কের অর্থের গোপন লেনদেন হয়। পাঁচ বিলিয়ন ডলার বা ৫০০ কোটি টাকা শেখ হাসিনাকে ঘুষ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়। ঢাকাস্থ রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি অবশ্য দ্রুতই এ খবরকে মিথ্যা ও গুজব বলে দাবি করেছিলেন। টিউলিপ সিদ্দিক চুক্তিতে মধ্যস্থতা করে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ৫০০ কোটি ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ববি হাজ্জাজ নামের একজন ‘রাজনীতিবিদ’ ও ব্যারিস্টার রিট আবেদন করেন হাইকোর্টে। গত ১৫ ডিসেম্বর এর প্রাথমিক শুনানিতেই গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। হাইকোর্ট বেঞ্চ শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানের জন্য রুল জারি করেন। রাশিয়া থেকে আটটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান মিগ-২৯ কেনা নিয়ে বিশাল অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এসব যুদ্ধবিমান ক্রয়ে ৭০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকো রিসোর্সকে অবৈধভাবে কাজ দেওয়া হয়। এতে দেশের প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। নৌবাহিনীর জন্য পুরাতন যুদ্ধজাহাজ ফ্রিগেট কেনা হয় অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে। সব দিক থেকে চীনা কোম্পানি সবচেয়ে যোগ্য প্রমাণিত হওয়ার পরও তাদের বাদ দিয়ে চতুর্থ সর্বনিম্ন দরদাতা দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়। এতে রাষ্ট্রের ৫০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়। মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ২০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার প্রকল্প নির্মাণে ব্যাপকহারে বর্ধিত প্রকল্প ব্যয় দেখিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ৬০ কোটি টাকা ক্ষতি করা হয়। এই অর্থ আসলে আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অবিশ্বাস্য রকমভাবে টুঙ্গিপাড়ায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণে ৪২ কোটি টাকা দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে বিভিন্ন সময়ে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার ঘটনাগুলো চাপাই পড়ে ছিল। কোনো কোনো ঘটনায় সুনির্দিষ্ট মামলা হলেও প্রাথমিক তদন্ত কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।
 

কমেন্ট বক্স