যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় যারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেননি এবং তাদের কোনো ধরনের নথিপত্র নেই, এসব ব্যক্তির নিবন্ধন চলছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নিবন্ধন শুরু হলেও তা কত দিন চলবে, এ বিষয়ে এখনো কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে রেজিস্ট্রেশন বন্ধ হয়ে গেলে যারা নিবন্ধন করবেন না বা করতে অস্বীকৃতি জানাবেন, তারা অপরাধে অভিযুক্ত হবেন। এ জন্য তাদের পাঁচ হাজার ডলার জরিমানা বা ছয় মাসের জেল অথবা উভয় দণ্ডই হতে পারে। এ বিষয়ে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যর্থতা বা নিবন্ধন বা বায়োমেট্রিক্স প্রদান করতে অস্বীকৃতির জন্য ফৌজদারি শাস্তি (প্রয়োজনে) হবে। যেকোনো বিদেশি ইচ্ছাকৃতভাবে নিবন্ধন করতে বা আঙুলের ছাপ নিতে আবেদন করতে ব্যর্থ বা অস্বীকৃতি জানালে এবং যেকোনো পিতামাতা বা আইনি অভিভাবক, যিনি ১৪ বছরের কম বয়সী কোনো বিদেশির পক্ষে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে বাধ্য হন এবং যিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের বিদেশির নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হন বা অস্বীকৃতি জানান, তিনি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হবেন এবং দোষী সাব্যস্ত হলে পাঁচ হাজারের বেশি জরিমানা বা ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এদিকে নথিপত্রহীনদের মধ্যে অনেকেই ভয় ও আতঙ্কে রেজিস্ট্রেশন করছেন না। তারা মনে করছেন, রেজিস্ট্রেশন করলে হয়তো ধরা পড়ে যাবেন এবং এ দেশ থেকে তাদের বিতাড়িত হতে হবে। এ বিষয়ে অনেকেই আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে করণীয় ঠিক করছেন। জানা গেছে, এখন যারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন, ভবিষ্যতে তাদেরকে ডিপোর্টেশন করা হবে নাকি তাদের জন্য কোনো ঘোষণা আসবে, তা এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি। কোনো ঘোষণা না আসার কারণে অনেকেই ভয়ে আছেন। অনেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করছেন। তবে নিবন্ধন করার পর তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে নাকি থাকতে দেওয়া হবে অথবা দেশে পাঠালেও ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে আসার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, এটা আইনজীবীরাও জানেন না। ফলে তারাও সঠিক পরামর্শ দিতে পারছেন না। তবে আইনজীবীরা বুঝতে পারছেন, এখন যারা রেজিস্ট্রেশন করবেন, তারা ভবিষ্যতে সব সময় নজরদারিতে থাকবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কেউ কেউ ভাবছেন, নিবন্ধন করা থেকে বিরত থাকবেন। আগামীতে সরকার পরিবর্তন হলে কোনো একটি উপায় বের করবেন। কিন্তু অনেক আইনজীবীর মতে, সেটাও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। কারণ যারা নিবন্ধন করবেন না, তারা এই অপরাধের জন্য ছয় মাসের জেল ও পাঁচ হাজার ডলারের জরিমানার মধ্যে পড়বেন। ফলে এ ধরনের দণ্ড হলে তিনি কোনো দিনই আমেরিকার লিগ্যাল স্ট্যাটাস পাবেন না।
অ্যাটর্নি খায়রুল বাশার বলেন, রেজিস্ট্রেশন করা নিয়ে অনেকেই এখনো দোটানার মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু এখন রেজিস্ট্রেশন চলমান আছে। এটি যখন বন্ধ হয়ে যাবে, তখন তারা নিবন্ধন না করলে জেল-জরিমানা হতে পারে। ফলে এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, আমি বলব, নথিপত্রহীন যারাই এ দেশে আছেন, তারা কোনো না কোনো একটি আবেদন করুন। আবেদন অ্যাপ্রুভ হতে পারে আবার ডিনাইও হতে পারে। কিন্তু একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকলে তাকে অন্তত ওই প্রক্রিয়াটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ডিপোর্ট করা হবে না। কিন্তু যারা অবৈধভাবে এসেছেন বা আছেন, যাদের কোনো স্ট্যাটাস নেই, তাদেরকে ধরতে পারলে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। এ কারণে কেউ পরামর্শ চাইলে তার কেস দেখে ও অবস্থা বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত বা পরামর্শ দিই। তাই যারা এ ধরনের অবস্থায় আছেন, তারা কিছু করার আগে অবশ্যই একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিন।



ঠিকানা রিপোর্ট


