সরকারের দিক থেকে সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোরও নিজেদের সাংবাদিকদের অধিকার দিতে হবে, তাদের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। এমন মন্তব্য করেছেন নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল। ১ মে বৃহস্পতিবার ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে তিনি আরো বলছেন, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন। তিনি সুন্দরভাবে উত্তর দিয়েছেন। কিন্তু এই প্রশ্নের কারণে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মব তৈরি হয়েছে, তারা হুমকি দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে হাউজগুলো পক্ষে না দাঁড়িয়ে উল্টো তিন জন সাংবাদিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। মিডিয়া হাউজের এই অবস্থান স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) সরাসরি সম্প্রচারিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ। ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন উপস্থাপিত টকশোটিতে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা চর্চার সমকালীন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন দুই অতিথি।
বাসসের প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদি কায়দায় যে মিডিয়া ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। সেই মিডিয়া ব্যবস্থা এখনো অব্যাহত আছে। তারাই পতিত ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন করে চলেছেন, সেই ফ্যাসিবাদের পক্ষে নিউজ উৎপাদন করে চলেছেন। ফ্যাসিবাদের দোসর সেই সাংবাদিকরাই মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে প্রশ্ন করেছেন- মনে করেন তিনি।
মাহবুব মোর্শেদ আরো যোগ করেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদি রেজিমে আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না। কোনো মানবাধিকার ছিল না। জুলাই আন্দোলনে অসংখ্য মানুষ শহীদ হয়েছেন। তাদের রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট রেজিমকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো জুলাইয়ের খুনীদের বিচার শেষ হয়নি। আওয়ামী লীগ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এছাড়া আওয়ামী লীগের মধ্যেও কোনো অনুশোচনা নেই। তাই জুলাই আন্দোলনকে যারা ছোট করতে চায়, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
তবে কেউ যদি কোনো অপরাধ না করে থাকে, শুধু আওয়ামী লীগ সমর্থন করার কারণে কাউকে শাস্তি দেওয়া ঠিক হবে না- মনে করেন নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে জুলাই স্পিরিট মানে হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে থাকা, জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পক্ষে কথা বলা, সর্বজনীন মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলা।’
সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার স্বাধীনতা থাকতে হবে জানিয়ে তাসনিম খলিল যোগ করেন, ‘প্রশ্ন বন্ধ করার আইন হলে আমি তার বিরুদ্ধেও দাঁড়াবো।’