বিএনপি ভোটের রাজনীতি করে। আওয়ামী লীগও ভোটের রাজনীতি করতো। বিশ্বজুড়েই ভোটের রাজনীতিতে জোট করা একটি ‘কমন ফেনোমেনা’। এ কারণেই আওয়ামী লীগ একসময় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করেছে। আবার বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে জোট করেছে। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে এসব কথা বলেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। তিনি আরো বলছেন, ‘অস্বীকার করার উপায় নেই বিএনপি ২০০১ সালে জামায়াতের সঙ্গে জোট করেছিল। নিজামীকে মন্ত্রী করার মাধ্যমে তার গাড়িতে জাতীয় পতাকার ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু রাজাকারের গাড়িতে প্রথম জাতীয় পতাকা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেটা ১৯৯৬ সালে নুরু রাজাকারকে তারা মন্ত্রী করেছিল।’
১৬ মে শুক্রবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১২টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা) সরাসরি সম্প্রচারিত এই টকশোতে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ ইশরাক। দেশের সমসাময়িক রাজনীতি, সংস্কার, নারী অধিকার, জোট রাজনীতি- এমন সব বিষয়ে ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের প্রশ্নের জবাব দেন দুই বক্তা।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনে আওয়ামী লীগ পালিয়ে যায়। অনেক বেশি সামনে চলে আসে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। তারা অন্তর্র্বতী সরকার গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। তেমনি মাঠের রাজনীতি অনেক প্রভাবশালী ভূমিকা চলে যায়। জামায়াত-শিবিরের জন্য চব্বিশ বড় একটি সুযোগ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ ইশরাক। তিনি বলেন, ‘আমার বোধ-বুদ্ধি হওয়ার পর জামায়াতের জন্য এতো ভালো পলিটিক্যাল ফিল্ড কখনো দেখিনি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর তারাই সবচেয়ে বাজে রাজনীতি করেছে। তারা সব রাজনৈতিক পক্ষকে এলিনিয়েট (বিচ্ছিন্ন) করেছে। অথচ বিএনপি কিন্তু ফর্মাল ইন-ফর্মাল জোট নিয়ে আছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় বৃহৎ দল হিসেবে জামায়াতের সুযোগ ছিল একটা অ্যালায়েন্স করে বিএনপির বিপরীতে অন্য একটি শক্তি হিসেবে দাঁড়ানো। কিন্তু তারা কোনো অ্যালায়েন্সে যায়নি। তারা কারো সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেনি। এনসিপিও এখন আর তাদের সঙ্গে নাই। জামায়াত-শিবির রাজনীতিতে এখন একা হয়ে গেছে। সবাই তাদের অ্যাটাক করছে।’
সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির অবস্থানের সমালোচনা করে মোহাম্মদ ইশরাক বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে বিএনপির যে দোদুল্যমান সেটা তরুণ প্রজন্মের অনেকে, এনসিপির মতো দল এর তীব্র বিরোধী বা ভালো চোখে দেখছে না।’
বিএনপি সংস্কারের বিরোধী নয়, এমন দাবি করে দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেন, সংস্কার প্রস্তাবে এমন কিছু বিষয় আছে, যেগুলো সাংবিধানিক সংস্কার, এই সময়ে এসব প্রস্তাব ভুল মনে করছে বিএনপি। যেমন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীপরিষদের ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, সংসদের উচ্চকক্ষ, নিম্নকক্ষ করা, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা- এগুলো করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এর জন্য নির্বাচিত সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যের সমর্থন লাগবে। সংসদ না থাকায় এসব সংস্কার অন্তর্র্বতী সরকারের সময় করা সম্ভব নয়- মন্তব্য করেন তিনি।
ভিডিও লিংক: ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে রুমিন ফারহানা
ঠিকানা/শই