রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির উদ্দেশ্যে তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনায় বসবে বলে ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ক্রেমলিন জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া ‘সময়সাপেক্ষ’ হবে এবং এখনই কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। খবর রয়টার্সের।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, সোমবার তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, তারপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি ও ফিনল্যান্ডের নেতাদের সঙ্গে এক যৌথ ফোনালাপের মাধ্যমে এই আলোচনার খবর শেয়ার করেন।
ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানান, যুদ্ধবিরতির এবং যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসানের উদ্দেশ্যে রাশিয়া ও ইউক্রেন এখনই আলোচনা শুরু করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু অগ্রগতি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’
এদিকে ক্রেমলিন জানায়, পুতিন এই আলোচনা শুরুর আহ্বানের জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে তিনি সরাসরি যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দেননি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একমত হয়ে রাশিয়া একটি শান্তি চুক্তির সম্ভাব্য খসড়া নিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত। যেখানে ইউরোপীয় নেতারা রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ট্রাম্প সেই পথে হাঁটছেন না। কেন তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি এখন কিছু একটা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি আপনি এখনই চাপ দেন, সেটা পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে।
তবে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, প্রসেস যদি না এগোয়, আমি একদম সরে যাবো। এটা আমার যুদ্ধ নয়।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, এখনই কোনও সময়সীমা নির্ধারিত হয়নি। সবাই দ্রুত সমাধান চায়, কিন্তু এখানে অনেক জটিলতা আছে। বাস্তবসম্মত ও বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন।
ট্রাম্প জানান, পোপ লিও শান্তি আলোচনার জন্য ভ্যাটিকানে মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী। তবে ভ্যাটিকান এই বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।
এ ছাড়া তুরস্ক, সুইজারল্যান্ড এবং ভ্যাটিকান এই আলোচনার জন্য সম্ভাব্য স্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন যেকোনো কাঠামোতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত—যদি তা ফলপ্রসূ হয়।
তিনি বলেন, আমরা যেকোনো আলোচনার জন্য প্রস্তুত, যা শান্তি বয়ে আনবে।
সাবেক সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী কার্ল বিল্ডট বলেন, এই কলটি ছিল পুতিনের জন্য একটি কূটনৈতিক বিজয়। যুদ্ধবিরতির চাপ তিনি এড়াতে পেরেছেন, তবুও আলোচনার টেবিলে আছেন।
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের ২০ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তাদের বাহিনী ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে।
পুতিন বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, শান্তি চুক্তির পূর্বশর্ত হিসেবে ইউক্রেনকে চারটি দখলকৃত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম সরাসরি আলোচনা হয়, কিন্তু সেখানে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।
ঠিকানা/এসআর