নিউইয়র্ক রাজ্যের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট, যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫৩.৩ বিলিয়ন ডলার, তা আনুষ্ঠানিকভাবে পাস হয়েছে। এবারের বাজেটকে সামাজিক ন্যায়ের এক শক্তিশালী অঙ্গীকার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। যেখানে খাদ্য নিরাপত্তা, গৃহহীনতা এবং অভিবাসী ও শ্রমজীবী পরিবারগুলোর কাঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
সবার জন্য স্কুল মিল : শিক্ষার্থীদের পেটে ক্ষুধা নয় : নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেসিকা গনজালেস-রোজাস-এর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ‘ইউনিভার্সাল ফ্রি স্কুল মিলস’ কর্মসূচির জন্য বাজেটে ৩৪০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের প্রতিটি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিনামূল্যে পুষ্টিকর খাবার পাবে।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়াতে ‘বেল-টু-বেল’ সেলফোন নিষেধাজ্ঞা নীতি বাস্তবায়ন করা হয়েছে- যা শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
বাসস্থান নিয়ে নতুন উদ্যোগ : হাউজিং অ্যাক্সেস ভাউচার প্রোগ্রাম : বাজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত ‘হাউজিং অ্যাক্সেস ভাউচার প্রোগ্রাম (ঐঅঠচ)’-যা গৃহহীন অথবা গৃহহীনতার ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের জন্য ভাড়ার সহায়তা প্রদান করবে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু হওয়া এ উদ্যোগ নিউইয়র্কে সাশ্রয়ী আবাসনের সংকট মোকাবিলায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানগত জমি কেনাবেচায় নিয়ন্ত্রণ : পরিবারের অধিকার রক্ষা : বাজেটে একটি নতুন আইন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যার মাধ্যমে ব্ল্যাকস্টোন গ্রুপ, ককজ ্ ঈড়.-এর মতো বৃহৎ কর্পোরেট বিনিয়োগকারীদের আবাসিক সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে একটি অপেক্ষাকালীন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে দ্রুত হস্তান্তরের সুযোগ কমে যাবে এবং মধ্যবিত্ত ও শ্রমজীবী পরিবারগুলো আবাসন অধিকার রক্ষায় সঠিক প্রতিযোগিতা করতে পারবে।
কুইন্সের গর্ব : কুইন্স মিউজিয়ামের জন্য $৮.৫ মিলিয়ন বরাদ্দ : স্থানীয়ভাবে বাজেটে কুইন্স মিউজিয়ামের জন্য ৮.৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান শুধু একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নয়, বরং মহামারির সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করেছে। শিল্প, শিক্ষা ও সম্প্রদায়সেবায় এর অবদান অনন্য।
সেনাবাহিনীর অভিবাসী পরিবারদের জন্য নতুন আইন : সার্জেন্ট অ্যালেক্স জিমিনেজ প্রোগ্রাম : নিউইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হোকুল বাজেটে ৫২৫,০০০ ডলার বরাদ্দ দিয়েছেন সার্জেন্ট অ্যালেক্স জিমিনেজ মিলিটারি ইমিগ্রান্ট ফ্যামিলি লিগ্যাসি প্রোগ্রাম-এর জন্য। যা এ বছরের শুরুতেই আইনে পরিণত হয়। এই কর্মসূচি ইরাকে নিহত ডোমিনিকান-আমেরিকান সেনা সদস্য অ্যালেক্স জিমিনেজের নামে নামকরণ করা হয়েছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী সেনা সদস্য ও তাদের পরিবারের ইমিগ্রেশন আইনি সহায়তা প্রদান করে।
একতার বার্তা ও ভবিষ্যতের আহ্বান : এ বাজেট প্রমাণ করে- যখন আমরা সংগঠিত হই, সহানুভূতির সঙ্গে নেতৃত্ব দিই ও মানুষের পাশে দাঁড়াই, তখন বদল আনা সম্ভব। স্থানীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা জনগণের যেকোনো মতামত ও প্রস্তাবনার জন্য সবসময় প্রস্তুত।
এটি কেবল বাজেট নয়- এটি নিউইয়র্কবাসীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের প্রতি একটি প্রতিশ্রুতি।