Thikana News
১৮ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
’ইউনূস-বিরোধিতা’ বন্ধে খালেদার নির্দেশ ♦ হাসিনার পাপে টিউলিপও নিঃশেষ

দেশসেবী প্রবাসীদের প্রতি চরম বিদ্বেষ

দেশসেবী প্রবাসীদের প্রতি চরম বিদ্বেষ সংগৃহীত



 
ঈদোত্তর রাজনীতি এখন স্বদেশ থেকে প্রবাসে। সরকার-প্রধান ড. ইউনূস চারদিনের সফরে লন্ডনে। প্রিন্স চার্লস প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় ‘হারমোনি এওয়ার্ড’ গ্রহণ। বিএনপি’র সেকেন্ডম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক। কমনওয়েলথ মহাসচিবসহ বৃটেনের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে মতবিনিময়। জেন জি-এর তরুণদের সাথে প্রশ্নোত্তর। জুলাই আন্দোলনের প্রবাসী কুশীলবদের শ্রদ্ধা জানানো। 
স্বদেশে নিষিদ্ধ আ.লীগের বৃটেন ইউনিটের প্রতিবাদ চলমান। বিএনপি’র নীরবতা, তবে ইউনূস সমর্থক গোষ্ঠীর উত্থান। সবচেপড আলোচিত বিষয় টিউলিপ সিদ্দিকের সাক্ষাৎ। নিজের অপরাধ চ্যালেঞ্জ করে চেয়েছে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। তবে ড. ইউনূস পক্ষ অনাগ্রহী বলে জানা গেছে। এতে ক্ষুব্ধ সরকার বিরোধী পক্ষ। কিছু নিরপেক্ষতাবাদীও ক্ষোভযুক্ত হয়েছেন। তাদের মতে দেশসেবী প্রবাসী নেতারা চরম বিদ্বেষের শিকার।

দেশসেবী প্রবাসনেতাদের প্রতি রাজনৈতিক বিদ্বেষ ►টার্গেট
ড. খলিল, সম্রাট, আলী রীয়াজ, আশিক, মনির হায়দার
ড. ইউনূসের সরকারে কিছু প্রবাসী পেয়েছেন গুরুত্ব। নিজেদের বৈদেশিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাচ্ছেন। তবে তাদেরকে ‘বিদেশী অভিধায়’ করা হচ্ছে তিরস্কার। দিনে দিনে বিষয়টি চরম বিদ্বেষের দিকে গড়াচ্ছে। 
সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন কূটনীতিক ড. খলিলুর রহমান। প্রায় দুই দশক বিদেশে কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। তিনি ১৯৭৯-এ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারের গৌরবধারী। অর্থনীতিতে পিএইচডি, যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস ও হার্ভার্ড স্টুডেন্ট। ১৯৮৫ থেকে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে কর্মরত। ২০০১-এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার-প্রধানের পিএস ছিলেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান ছিলেন সরকার-প্রধান। 
ড. ইউনূস সরকারে রোহিঙ্গা বিষয়ক ‘হাই রিপ্রেজেনটিভ’ ছিলেন। পরে নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে পদোন্নতি। বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমদ তীব্র সমালোচনা করেন। বলেন, ইউনূস সরকারের কী আক্কেল-জ্ঞান নেই। একজন বিদেশী নাগরিককে দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়েছেন। রাষ্ট্রের গোপন তথ্যাদি ওনার হাতে দেবো কেনো? ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওনার অপসারণ চাই। ২৪ দিন হয়েছে, অপসারণ হননি, বহাল আছেন। বরং চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন ‘আমি বাংলাদেশি’। বিদেশী কোন পাসপোর্ট বা নাগরিকত্ব নেইনি। ওনার পক্ষে মানহানিকর মামলা হচ্ছিলো। শতকোটি টাকার মানহানিকর মামলা। বিএনপি’র সালাহউদ্দিন আহমদের বিপক্ষে। কিন্তু অবশেষে মামলাটি রুজু করা যায়নি। বাদীপক্ষকে জোর হুমকি দেয়া হয়েছে বলে প্রকাশ। 
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে প্রবাসে প্রবল জনপ্রিয়। পৈতৃকবাস বৃহত্তর যশোরের নড়াইলের কালিয়ায়। সত্তরোর্ধ বয়েসে এলাকায় এমপি হতে আগ্রহী। কিন্তু গত ১৮ মে এলাকায় সশস্ত্র হামলার শিকার। জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিতে গিয়ে আক্রান্ত হন নিজে। গাড়ি ভাঙচুর হয়, নিজে রক্তাক্ত হন। প্রাণ হাতে নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। 
তারুণ্যে লেখালেখি, রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন আলী রীয়াজ। ডাকসু নির্বাচন, মিডিয়ায় সম্পাদনার সাথেও ছিলেন। বিশিষ্ট অভিনেত্রী রীনা সুলতানার সঙ্গে ছিলো সখ্য। অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া-পুত্র রেজা কিবরিয়া পরে যাকে বিয়ে করেন। অতঃপর রাষ্ট্র-গবেষক আলী রীয়াজ জীবনধারা পাল্টাতে থাকেন। নব্বই দশকের উপান্তে পাড়ি জমান আমেরিকায়। ২০০২-এ যোগ দেন ‘ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটিতে’। ‘রাজনীতি ও সরকার’ বিভাগে অধ্যাপক হন। ‘দৈনিক প্রথম আলো’য় কয়েকটি সাক্ষাৎকার দেন। 
২০২৪-এর অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দেন। সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান হন। মার্কিন পাসপোর্টধারী হিসেবে প্রায়শ আক্রান্ত হচ্ছেন। বলা হচ্ছে দেশের হাল-হকিকত ওনারা কি বুঝবেন। ফেসবুকে অনেকেই ওনার মেধার অবমূল্যায়ন করে চলেছেন। 
সিঙ্গাপুর থেকে যোগ দেন বিনিয়োগ এক্সপার্ট আশিক চৌধুরী। লন্ডন ‘বিজনেস অব স্কুল’ থেকে গ্রাজুয়েশন। ড. ইউনূসের আহ্বানে যোগ দেন ‘বিডা’য়। যা ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভলাপমেন্ট অথরিটি’। প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় কাজ করছেন চেয়ারম্যান পদে। অতিদ্রুত ঢাকায় ‘ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ আয়োজন করে সফল হন। প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি পান। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী দেড়শ’ বিনিয়োগকারী নিয়ে বাংলাদেশ সফর করেন। আশিক চৌধুরী ‘বেজা’কে সর্বাত্মক সহযেগিতা দেন। কিন্তু সমালোচকেরা ওনাকেও ছাড়ছেন না। বলছেন অনির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধি উনি। কিভাবে বিদেশীদের সঙ্গে বিনিয়োগ চুক্তি করছেন। এগুলো তো নির্বাচিত সরকার এসে চূড়ান্ত করবে। 
সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী। পদটি পেয়েছেন নিউইয়র্কে বসবাসরত সাংবাদিক মনির হায়দার। আওয়ামী শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে পলাতক জীবন। দৈনিক ইত্তেফাক, মানবজমিনে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। রাজনৈতিক টকশো-তে সরকার বিরোধী বিশ্লেষণে নাম কুড়ান।
ইউনূস সরকারের ‘ঐকমত্য কমিশনে’ তিনি সমন্বয়ক। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সফল মতবিনিময় করেছেন। এমন প্রশংসার মাঝেও ওনাকে নিয়ে সমালোচনা কমেনি। উল্লেখ্য, নিউইয়র্কের লেখিকা মনিজা রহমান তার গুণবতী স্ত্রী। 
পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ। জন্ম বৃটেনে, একাধিকবারের এমপি, সাবেক মন্ত্রীও। দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সমনও জারি হয়েছে। তবে টিউলিপ বলছেন সেসব আমি পাইনি। আমার আইনজীবী কোন কাগজপত্র পাননি। উল্লেখ্য, টিউলিপ সাক্ষাৎকারের প্রত্যাশা জানিয়েছে। ড. ইউনূসকে অভিভাবক মেনেছেন। জানা গেছে, টিউলিপ নিজেকে নির্দোষ বলছেন। শেখ হাসিনার রাজক্ষমতার সমালোচনাও করছেন। বলছেন, আমি লেবার পার্টি করি, আওয়ামী লীগ নয়। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা আমার মা-খালা হতে পারেন। কিন্তু আমার রাজনৈতিক মেন্টর ওনারা নন। কিন্তু সর্বস্ব্য হারাতে হচ্ছে ওনাদের জন্যেই। 
উল্লেখ্য, খালেদার নির্দেশে বিএনপির নির্বাচনী আন্দোলনও স্থগিত।  

কমেন্ট বক্স