বাবার প্রতি ভালোবাসা জানাতে প্রতিবছর জুনের তৃতীয় রোববার পালন করা হয় ‘বিশ্ব বাবা দিবস’। প্রত্যেক মানুষ জীবনে বাবা-মায়ের ভালোবাসায় বেড়ে ওঠে। মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক অনেক নিবিড় ও গভীর। তাই বলে বাবার ভালোবাসা কম নয়। বাবা সারাটি জীবন ব্যয় করেন-পরিশ্রম করেন সন্তান ও পরিবারের পেছনে। বাবা মানে অর্ধেকটা পৃথিবী। বাবারা নিজে কষ্ট করে যায়, যেন সন্তানেরা স্বপ্ন দেখতে পারে। যিনি নিজের রাজত্ব বানিয়েছেন ত্যাগ, পরিশ্রম আর নিঃস্বার্থ ভালোবাসায়। সন্তানের শক্তি-সাহস আর নির্ভরতার অপর নাম হলো বাবা।
বাবা দিবস শুরু হয়েছিল আমেরিকায় ১৯০৮ সালে ভার্জিনিয়ার চার্চের মাধ্যমে। বাবা দিবসের প্রবক্তা সোনার স্মার্ট ডোড। তার বয়স তখন ১৬। তার মা ষষ্ঠ সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। এরপর তার বাবা সব সন্তানের দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নেন। ছয়টি সন্তানকে একা একা মানুষ করতে কী ভীষণ পরিশ্রমই না করতে হয়েছে তাকে।
বাবা এমন একজন অসাধারণ ব্যক্তি, যিনি সারা জীবন আমাদের জন্য কষ্ট করেন, নিজের সব অনুভূতি লুকিয়ে রাখেন। নিজের সব ইচ্ছাকে জলাঞ্জলি দিয়ে, জীবনযুদ্ধে একাই লড়েন। বাবার কাছে চেয়ে পায়নি এমনটা কোনো সন্তান বলতে পারবে না। বাবার ভালোবাসার কাছে পৃথিবীর সমস্ত ভালোবাসা মলিন। বাবা হলেন সেই মানুষটা, যে জীবনের সব পরিস্থিতিতে সন্তানের পাশে থাকে। বাবার ঋণ শোধ করতে যেয়ো না-সাগরের জল যেমন সেচে কখনো শেষ করা যায় না, বাবার অপ্রতিশুদ্ধ ঋণ শোধ করার নয়।
দুই অক্ষরের এই নামটি উচ্চারিত হলেই সন্তানের হৃদয় জেগে ওঠে শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার অনুভূতিতে। বাবা যেন একটি মোমবাতি-নিজে জ্বলে তার পরিবার সন্তানকে আলোকিত করে।
একজন বাবা বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে রাখেন, যার কারণে সন্তানের গায়ে সূর্যের তাপ ছুঁতে পারে না। সবকিছু প্রত্যাশা পূরণের জন্য আজীবন চেষ্টার নাম হলো বাবা। বাবা মানে শত শাসন সত্ত্বেও এক নিবিড় ভালোবাসা। একজন বাবা তার সন্তানের জন্য কতভাবে অবদান রেখে যান, তার হিসাব কেউ কখনো দিতে পারবে না। নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসুন বাবা আর মাকে। মনে রাখবেন, বাবা হলেন আকাশ আর মা মাটি। টাকা দিয়ে সব পাওয়া গেলেও মায়ের মতো স্বর্গ আর বাবার মতো ছায়া কখনো পাবেন না।
সিম ছাড়া মোবাইল যেমন অচল, বাবা-মা ছাড়া একটি সন্তানের জীবনও অচল। বাবা দিবসে পৃথিবীর সকল বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ও লাল গোলাপ শুভেচ্ছা।