Thikana News
১৮ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

একটি সৃজনশীল গণঅভ্যুত্থান-৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ঘিরে অজস্র লিখন-চিত্রণ দেশের প্রায় সর্বত্র সমান গুরুত্বসহকারে রচিত ও অঙ্কিত হয়েছে। ঢাকা মহানগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক স্থানেও গ্রাফিতির ছড়াছড়ি পরিলক্ষিত হয়।
একটি সৃজনশীল গণঅভ্যুত্থান-৪



 
সম্প্রতি সিরিয়ার স্বৈরাচারী বাশার আল আসাদ ও তার ১৪ বছর রেজিমের পতনের পেছনে দেয়ালে লিখিত একটি গ্রাফিতির উল্লেখ করা হয়। মুয়াবিয়া নামের ১৪ বছরের এক স্কুলপড়ুয়া বালকের দেয়ালের লিখনটি ছিল : ‘ইজাক আলদাউর ইয়া দাক্তোর’, অর্থ : এবার তোমার পালা ডাক্তার। চার শব্দের এই দেয়াললিখন দেশের বিক্ষুব্ধ মানুষের মনে আগুন ধরিয়ে দেয়। সরকার টের পেয়ে বালকটিকে আটক করে জেলে পুরে ও অকথ্য নির্যাতন চালায়। কিন্তু সারা দেশের মানুষকে তো জেলে ভরা যায় না, জেলখানায় অত জায়গা কোথায়। ১৪ বছর পরে সিরিয়ার বিদ্রোহী সেনা অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার আসাদ সরকারের পতন ঘটেছে। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার মতো তিনিও দেশ থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। এখন স্লোগানটি সিরিয়ার গণমুক্তির ঐতিহাসিক দলিলরূপে গণ্য হয়।

গ্রাফিতি একটি বৈশ্বিক গণচিত্রকর্ম। দেয়ালের লিখন এবং লিখনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ চিত্র, ব্যঙ্গচিত্র (স্যাটায়ার), রসচিত্র (হিউমার) ও কার্টুন অঙ্কন হলো গ্রাফিক ও গ্রাফিতি। শব্দে ও রংতুলিতে জনগণের অব্যক্ত ভাব-ভাষা মূর্ত হয়ে ওঠে। এর শক্তি অসাধারণ। বাংলাদেশে আন্দোলন নিয়ে দেয়াললিখন-রীতি পূর্বেও চালু ছিল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় এরূপ প্রতিবাদী দেয়াললিপি আমরা দেখেছি। কিন্তু তাতে স্লোগান ও সাহিত্যের বিখ্যাত উক্তি ছাড়া চিত্রকর্ম কদাচিৎ চোখে পড়েছে। তবে কাগজে ছাপা পোস্টারে লিখন ও ছবি থাকত। পোস্টার সাধারণত দালানকোঠার দেয়ালে, প্রাচীরে, থামে অথবা গাছের গুঁড়িতে সাঁটানো হতো। আন্দোলনকারীরা পুলিশের ভয়ে রাতের অন্ধকারে এগুলো সেঁটে দিতেন। একে ‘চিকা মারা’ বলা হতো।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ঘিরে অজস্র লিখন-চিত্রণ দেশের প্রায় সর্বত্র সমান গুরুত্বসহকারে রচিত ও অঙ্কিত হয়েছে। ঢাকা মহানগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক স্থানেও গ্রাফিতির ছড়াছড়ি পরিলক্ষিত হয়। এক বিশেষজ্ঞ লিখেছেন, ‘দেয়ালগুলো পরিণত হয়েছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভেরও ক্যানভাসে। সরকারকে নানা শক্তিশালী বার্তা দিতে তারা (পথশিল্পীরা) বিভিন্ন সৃজনশীল ও হৃদয়গ্রাহী স্লোগান, কবিতার পঙ্্ক্তি লিখেছেন। এসব বার্তা যেন বিপ্লবের চেতনা ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাক্সক্ষার শিল্পিত প্রতিফলন। ছাত্ররা দেশবাসীর সমর্থন আদায়ে এভাবে শিল্পকর্মের মাধ্যমে মুক্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন।’ (প্রথম আলো, ১৭-৯-২৪) এর সংখ্যার আধিক্য ও বৈচিত্র্য বিবেচনায় বিশ্বে ঢাকা ‘গ্রাফিতির রাজধানী’ রূপে পরিচিতি লাভ করে। কেউ কেউ বলেছেন ‘গ্রাফিতি রেভল্যুশন’।

এ-যাবৎ গ্রাফিতি নিয়ে রচিত ও প্রকাশিত দুটি গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া যায়। একটির নাম ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’, অপরটি ‘জুলাইয়ের দেয়ালচিত্র : দেশ সংস্কারের স্লোগান’। প্রথম গ্রন্থটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুব গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে। স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর প্রশংসা করেন। আমরা গ্রন্থটি পাঠ করে জেনেছি, তিনি এর স্বপ্নদ্রষ্টা, গ্রন্থের ‘প্রস্তাবনা’ তিনিই রচনা করেন এবং প্রচ্ছদের গ্রাফিতি মনোনীত করেন। তিনি ‘প্রস্তাবনা’য় বলেন,  I stand in total awe and in deep admiration for the screaming wall messages through powerful street art that have been emerged across our cities and towns all over Bangladesh after July revolution 2024 brought by students. These vivid creations are more than just art. They are the voices of the young people. Suddenly gushing out with unparalleled boldness in country where peopleÕs voice was silenced by creating laws and implementing them with gusto. For too long the freedom to express our thoughts on our struggles and our dreams were heavily constrained. But now, after student led peopleÕs revolution which brought the fascist government down on August 5, 2024, the walls of the cities once shabby and blank and uncared for, suddenly have become canvases of hope, resistance and resilience. They tell the stories of our journey, our pain and our unwavering spirit in the face of adversity. There was no budget for them, no extra planning, nobody was planning the design of the artworks. Everything was spontaneous.

আমরা আরও জেনেছি, ছবিগুলো দেয়াল থেকে তুলে গ্রন্থে মুদ্রিত করার জন্য যারা জড়িত ছিলেন, তারা হলেন আনিস জামান, মোর্শেদ মিশু (কার্টুনিস্ট), অভিজিৎ কর্মকার (চিত্রশিল্পী) প্রমুখ। তারা একটি প্রজেক্টের অধীনে ৫০০টি গ্রাফিতি সংগ্রহ করেন এবং প্রাথমিকভাবে ২০০টি নির্বাচন করেন। তবে মাত্র ৫০টি চিত্রকর্ম প্রকাশনার মুখ দেখে।

প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিকে গ্রন্থখানি উপহার দেন। এমনকি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফরকালে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের হাতে এর কপি তুলে দেন। ১৫ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছে গ্রাফিতির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ‘এসব গ্রাফিতিতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পাশবিক শক্তিকে প্রতিহত করতে নৃশংস এক বাহিনীর মুখোমুখি আন্দোলন-বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও যুবকদের দাবিদাওয়া, আবেগ-অনুভূতি, আশা-আকাক্সক্ষা চিত্রিত হয়েছে।’ (ঐ)

মনজুর হোসেন প্রণীত ‘জুলাইয়ের দেয়ালচিত্র : দেশ সংস্কারের স্লোগান’ (২০২৪) শীর্ষক একখানি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এতে ঢাকা মহানগরসহ দেশের প্রায় ৫০০টি গ্রাফিতি সংকলিত হয়েছে। ভূমিকায় লেখক বলেছেন, ‘৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তাদের অধিকারের কথা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ন্যায়বিচারের আকাক্সক্ষা, বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে নতুন রাষ্ট্রকাঠামো তৈরির কথা দেয়াললিখনের মাধ্যমে তুলে ধরে। ঢাকাসহ পুরো দেশের আনাচ-কানাচে ছড়িয়ে থাকা এ দেয়াললিখনগুলো বাংলাদেশের গণমানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিনিধিত্ব করছে।’

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা ও দৃশ্য নিয়ে আঁকা ‘শরীর ও মানচিত্র’ শীর্ষক শিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করে ‘বেঙ্গল শিল্পালয়’। ৫ নভেম্বর ২০২৪ প্রদর্শনী শুরু হয়। আয়োজক ‘বেঙ্গল ফাউন্ডেশন’। এতে প্রতীকী, ব্যঙ্গ বিভিন্নভাবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে তুলে ধরার প্রয়াস রয়েছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান কতটা গভীরে গিয়ে আঘাত করেছে, এসব চিত্রকর্ম থেকে তা বোঝা যায়। আন্দোলনের সময় বিভিন্ন ঘটনায় তাদের মনে যে অভিঘাত তৈরি হয়েছিল, তারই প্রতিক্রিয়া এসব শিল্পকর্মে ফুটে উঠেছে। এগুলোর নান্দনিক গুণ তত বেশি নয়, যত বেশি এর বিষয়গুণ। সাময়িকতাকে, বাস্তবতাকে ও সজীবতাকে ধারণ করে বলেই এগুলো দর্শকের নজর কাড়ে, মনকে আন্দোলিত করে। সমাবেশ, হামলা, প্রাণহানি, ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউটসহ নানা ঘটনা নিয়ে কাজ করেছেন পথশিল্পীরা। আবু সাঈদকে নিয়ে শহীদ কবিরের আঁকা একটি ছাপচিত্রের শিরোনাম হলো ‘উন্নত মম শির’।

দেশ-বিদেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্পীরাও গ্রাফিতি রূপায়ণ ও প্রচারণায় এগিয়ে এসেছেন। শিল্পী দেবাশিষ চক্রবর্তী ২০১৮ সাল থেকে ‘রাষ্ট্র যন্ত্রণা’ নামে একটি সিরিজ চিত্রকলার কাজ করে আসছেন। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তাক্ত ঘটনাগুলো অবলম্বনে প্রতিবাদী চিত্র এঁকে সেগুলো ফেসবুকে পোস্ট করতেন। তার পোস্ট করা এরূপ গ্রাফিতির মধ্যে বাছাইকৃত ২০টির ডিজিটাল প্রিন্ট নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে ‘শিল্পকলা একাডেমী’ (৭ জানুয়ারি ২০২৫)। প্রদর্শনীর নাম ‘পোস্টারে জুলাই অভ্যুত্থান’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আসিফ নজরুল বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে অনেক নতুন শিল্প সৃষ্টি হয়েছে। স্বৈরশাসকের প্রতিবাদের পাশাপাশি উদ্ভাবনী শক্তিরও বিকাশ ঘটেছে। গত ১৫ বছর উন্নয়নের নামে যে বয়ান তৈরি হয়েছিল, তা ভেঙে দিয়ে অসংখ্য গ্রাফিতির মাধ্যমে একটি নতুন বয়ান তৈরি হয়েছে। এই পোস্টার, গ্রাফিতি গণঅভ্যুত্থানের নতুন বয়ান প্রতিষ্ঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ অনুষ্ঠানের সভাপতি ও শিল্পকলা একাডেমীর ডিজি সৈয়দ জামিল আহমদ বলেন, ‘শিল্প কেমন করে একই সঙ্গে রাজনৈতিক হাতিয়ার ও নান্দনিক হতে পারে, এই পোস্টারগুলো তার দৃষ্টান্ত।’ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভার্চুয়ালে যুক্ত হয়ে স্বয়ং শিল্পী দেবাশিষ চক্রবর্তী যা বলেন, তার সারমর্ম হলো : ২০১৮ সাল থেকেই তিনি ‘রাষ্ট্র যন্ত্রণা’ নামে একটি সিরিজ চিত্রকলার কাজ করছিলেন। এতে স্বৈরাচার সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গুম-খুনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় তিনি প্রতিদিন ঘটনাগুলো নজরে রাখতেন এবং পোস্টার করে ফেসবুকে পোস্ট করতেন। [প্রথম আলো, ৮ জানুয়ারি ২০২৫]

এবার দৃষ্টান্তসহ গ্রাফিতিগুলোর আলোচনা করা যায়। আমরা স্লোগান, বচনসহ অধিকাংশ গ্রাফিতি উপরে মুদ্রিত, বিবিধ পত্রপত্রিকা, সাময়িকী ও সংকলন থেকে গ্রহণ করেছি। আমরা যাচাই-বাছাই করে মোট ১০০টি গ্রাফিতি নির্বাচন করেছি। গ্রাফিতির কথাগুলো বোধগম্য হয়, কিন্তু চিত্রগুলো খোলা চোখে না দেখলে এর রূপ-রস-সৌন্দর্য উপলব্ধি করা যায় না। গ্রাফিতি স্বচক্ষে দেখতে হলে দেয়ালের কাছে যেতে হয়। আধুনিক প্রযুক্তির দৌলতে ছবি তুলে প্রদর্শনীতে অথবা মুদ্রিত আকারে পুস্তকে প্রকাশ করা যায়। আমরা আলোচনায় কথাগুলো সংকলন করেছি, চিত্রগুলো উপস্থাপন করতে পারিনি। কেবল ভাষার মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা বা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। নমুনাস্বরূপ মাত্র ১৫টি গ্রাফিতির ভাষিক পরিচয় নিম্নে দেওয়া হলো। কথার ও চিত্রের মিশ্ররূপ গ্রাফিতিগুলো যেন একেকটি কবিতা! রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের গ্রাফিতিসমূহ একত্রে গ্রন্থন ও মূল্যায়ন করলে একটি সচিত্র মহাকাব্য রচিত হবে বলে আমি মনে করি। এর উদ্যোগ এখনই না নিলে মহাকাল তা গ্রাস করে ফেলবে।

১. কথা-তুমি কে আমি কে, বিকল্প বিকল্প। (স্লোগান); ছবি-মুষ্টিবদ্ধ ও উত্থিত ৫টি বলিষ্ঠ হাতের চিত্র।
২. কথা-আমরা সকল আন্দোলন প্রত্যাহার করছি। ছবি-সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জিঞ্জিরাবদ্ধ হাতে লিখিত পত্রপাঠ করছেন; পাশে ডিবিপ্রধান হারুনের ছবি ও কথা : ‘সমস্যা নাই-নিচে একদল ছাত্রের ছবি ও কথা-‘আমরা সবাই সমন্বয়ক’।
৩. কথা-‘আমরা গড়ব বৈষম্যহীন সরকার’। চিত্র-বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে একজন ছাত্রী ও একজন ছাত্র দণ্ডায়মান।
৪. কথা-‘ধর্মবৈষম্য নিপাত যাক’। ক্যানভাসের উপরে লিখিত। চিত্র-নিচে এক সারিতে বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলমান ও হিন্দু চারজনের চিত্র অঙ্কিত; পোশাকের ভিন্নতা দ্বারা তা বোঝানো হয়েছে।
৫. কথা-Yes voice matter. : Mother land or Death. চিত্র-উক্তিদ্বয়ের মাঝখানে একদল শিক্ষার্থী স্লোগান দিচ্ছে। দ্বিতীয় উক্তি কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো ও চে গুয়েভারার বিখ্যাত উক্তি।
৬. কথা-রক্ত গরম মাথা ঠান্ডা ভাবো পরিণাম। চিত্র-লেখার ডান পাশে জনতার ছবি; দুটি প্ল্যাকার্ডে লেখা হয়েছে : ‘দেশটা কারো বাপের না’, ‘ছাত্রসমাজ জেগেছে’। উক্তিটি ‘কাকতাল ব্যান্ডের পপগানে’র একটি পঙ্্ক্তি।
৭. কথা-লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না। (স্লোগান); চিত্র-কথার উপরে ‘জনতার ছবি’।
৮. কথা-যদি তুমি ভয় পাও, তবে তুমি শেষ।/ যদি তুমি রুখে দাঁড়াও, তুমিই বাংলাদেশ। চিত্র-পঙ্্ক্তিদ্বয়ের বাম দিকে একটি বালকছাত্র দাঁড়িয়ে আছে, উপরে দুটি সাদা পায়রা উড়ছে। এটি ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের জনপ্রিয় বয়ান ছিল।
৯. কথা-এই দেশ আমার, আপনার, আমাদের। এক দাবি এক দফা স্বাধীনতা! চিত্রÑউক্তিদ্বয়ের মাঝখানে বাংলাদেশের লাল রঙের মানচিত্রের পটভূমিতে একজন শিক্ষার্থী হাতে পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
১০. কথা-খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই। চিত্র-লেখার বাম পাশে একজন বয়স্ক মহিলা মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে বলছেন, [ডেস্কে লাল কালিতে লেখা-স্বৈরাচার]
১১. কথা-শোনো মহাজন, আমরা অনেকজন। চিত্র-উক্তির পেছনে মিছিলের প্রেক্ষাপট ও শিকলবাঁধা একটি হাত।
১২. কথা-যতবার হত্যা করো জন্মাব আবার,/ দারুণ সূর্য হয়ে ফিরব আবার। চিত্র-দুই সারিতে লেখা এই উক্তির ওপরে একজন রিকশাচালক মৃতবৎ এক ব্যক্তিকে নিয়ে যাচ্ছে।
১৩. কথা-সমতল থেকে পাহাড়, এবারের মুক্তি সবার। চিত্র-নিচে দুজন ছাত্রী ডান হাত উঁচু করে স্লোগানটি দিচ্ছে।
১৪. কথা-অদম্য বাংলাদেশ, নো বডি ক্যান স্টপ আস। চিত্র-একজন ছাত্রী পুলিশের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বাধা দিচ্ছে। ছবিটি এঁকেছেন গালিব। ১ আগস্ট ২৪ ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের দিন হাইকোর্টের সামনের ঘটনা অবলম্বনে চিত্রকর্মটি অঙ্কিত।
১৫. কথা-তুমি হাকিম হইয়া হুকুম করো, পুলিশ হইয়া ধরো। চিত্র-লেখার বাম পাশে একজন পুলিশ এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে; নিচে লেখা-আয়নাঘর। [চলবে]
 

কমেন্ট বক্স