Thikana News
১৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

লন্ডনে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ না পেয়ে হতাশ টিউলিপ সিদ্দিক

লন্ডনে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ না পেয়ে হতাশ টিউলিপ সিদ্দিক ফাইল ছবি



 
বাংলাদেশে প্লট ও ফ্ল্যাট নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা ও তদন্তের মুখে পড়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক শেষ পর্যন্ত লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেখা পাচ্ছেন না।

এ সফরে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের দেখা না পাওয়ায় টিউলিপ সিদ্দিক ‘হতাশা’ প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “লন্ডন সফরকালে অধ্যাপক ইউনূস দেখা করতে অস্বীকৃতি জানানোয় আমি হতাশ।”

যুক্তরাজ্যে প্রধান উপদেষ্টার চার দিনের অবস্থানের সময় তার সাক্ষাৎ চেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক গত ৪ জুন চিঠি পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করার আশায় তিনি তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।

এজন্য ইউনূসকে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ বা বিকেলের চা পানের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এ সাক্ষাতের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

বৃহস্পতিবার সরকারি এ সফরের তৃতীয় দিন ইউনূস ওয়েস্টমিনস্টারে হাউস অব কমেন্সে গিয়ে স্পিকার লিন্ডসে হোয়েলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। 

তবে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপের চায়ের আমন্ত্রণে সাড়া দেননি।

এর আগে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে ইউনূস বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তিনি সাক্ষাৎ দেবেন না।

“এটা একটা আইনি বিষয়...একটা আইনি প্রক্রিয়া। এটা আমার ব্যক্তিগতভাবে যুক্ত হওয়ার মত কোনো বিষয় নয়।”

তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৬ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনা তার ক্ষমতাকে তার আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের জন্য ‘অর্থ আত্মসাতের সুযোগে’ রূপান্তরিত করেছিলেন।

“এটা ছিল বড় ধরনের এক লুটপাট প্রক্রিয়া,” বলেন ইউনূস।

বুধবার ইউনূসকে উদ্ধৃত করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

বিবিসিও বলেছে, ‘দুর্নীতির’ বিষয় নিয়ে আলোচনায় টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ইউনূস।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান বিবিসিকে বলেন, অভিযোগগুলো এখন আইনি বিষয় এবং তার (টিউলিপের) বিরুদ্ধে মামলা করা ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করা সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওপর তার আস্থা রয়েছে।

ইউনূসের দেখা না পেয়ে বৃহস্পতিবার ‘হতাশা’ প্রকাশ করে বিবৃতিতে আগের মতই টিউলিপ তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন, “তিনি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কেন্দ্রে রয়েছেন, যেটি কোনো প্রমাণ ছাড়াই কাল্পনিক সব অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রতিনিয়ত অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “এটি যদি অতীব গুরুতর আইনি প্রক্রিয়া হত, তাহলে তারা আমার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। তা না করে তারা ঢাকায় এমন এক ঠিকানায় ভুয়া কাগজপত্র পাঠাচ্ছেন, যেখানে আমি কখনও থাকিনি।

“আমার আশা তিনি এ বিষয়ে এখন আন্তরিক হবেন এবং সংবাদমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়ার প্রচারণা বাদ দিয়ে আদালতকে বিষয়টি বিচারের ভার দেবেন, যে অনুসন্ধানের সঙ্গে একজন ব্রিটিশ নাগরিক ও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের গর্বিত সদস্য হিসেবে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।”

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর আগস্টে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠজনদের দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়।

এরমধ্যে তার ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক রয়েছেন। তার মা শেখ রেহানাসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।

স্টারমারের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত টিউলিপের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে টিউলিপ কোনো ধরনের অনিয়মের কথা অস্বীকার করেছেন।

এ মাসের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে চিঠি দিয়ে লন্ডন সফরের সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছেন টিউলিপ। এই ব্রিটিশ এমপি বলছেন, বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন যে ‘ভুল–বোঝাবুঝি’ তৈরি করেছে, ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তা তিনি দূর করতে পারবেন।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স