ইরানে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা নিয়ে মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৩ জুন (শুক্রবার) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসরায়েলের হামলার বিষয়টি আগেই জানতেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সব জানতাম। আমি ইরানকে অপমান ও ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম। আমি খুব চেষ্টা করেছি, যাতে একটি চুক্তি হয়। এখনো দেরি হয়নি, এখনো চুক্তি সম্ভব।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও দাবি করেন, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হামলা পিছিয়ে দিতে বলেছিলেন, যাতে কূটনৈতিকভাবে ইরানের পারমাণবিক সংকটের সমাধান করা যায়। তবে আলোচনায় ব্যর্থ হলে হামলার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।
ট্রাম্প ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, এ হামলা চমৎকার ও অত্যন্ত সফল। এটা আমার কৌশলের অংশ। ট্রাম্প প্রকাশ্যে কঠোর বক্তব্য দেন, আবার আড়ালে দরকষাকষি চালান।
তবে হামলার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে কি না— এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি ট্রাম্প। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে আছে বলে জানান তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র। দেখা যাক কী হয়।’
এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ইসরায়েলকে সরাসরি সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এ অভিযানের লক্ষ্য ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা। যত দিন এই হুমকি থাকবে, তত দিন অভিযান চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
ইরানে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে শুরু হওয়া হামলায় ইসরায়েলের প্রায় ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। দেশটির সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফিন দেফরিন জানিয়েছেন, এক রাতেই আট শহরের শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়।
ইরানের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত এবং ৩২৯ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছয়জন পরমাণুবিজ্ঞানী রয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায়ও ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহরসহ কয়েকটি এলাকায় হামলা হয়েছে। ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার কাছেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের দুটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, নুরনিউজ, ফারস নিউজ
ঠিকানা/এসআর