Thikana News
২৬ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

এবার বন্ধু নেতানিয়াহুকে বাঁচাতে মরিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প

এবার বন্ধু নেতানিয়াহুকে বাঁচাতে মরিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প সংগৃহীত



 
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় নতুন করে হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ ২৬ জুন (বৃহস্পতিবার) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিচার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। ট্রাম্প ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থায় এমন সরাসরি হস্তক্ষেপ করে ট্রুথ সোশ্যালে একটি লম্বা পোস্ট দিয়েছেন। খবরটি জানিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল ও আল-জাজিরা।

ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, ‘ব্রেকিং নিউজ… আমি অবাক হয়েছি—ইসরায়েল নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইতিহাসের সেরা সময় পার করছে, তারা তাদের মহান যুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই হাস্যকর ‘জাদুকরী শিকার’ (মিথ্যা মামলা) চালাচ্ছে!’

একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের ইসরায়েলি বিচার ব্যবস্থায় এমন হস্তক্ষেপ এমন সময় ঘটল যখন এই মাসের শুরুতে নেতানিয়াহুর জেরা আবার শুরু হওয়ার কথা ছিল। ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের কারণে আদালত শুধু জরুরি কাজগুলো করছিল।

নেতানিয়াহুর প্রতি ট্রাম্পের সমর্থন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি ও নেতানিয়াহু ‘এক সঙ্গে অনেক কঠিন সময় পার করেছেন, ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের শত্রু ইরানের সঙ্গে লড়াই করেছেন। পবিত্র ভূমির প্রতি ভালোবাসার দিক থেকে নেতানিয়াহু এর চেয়ে ভালো, বুদ্ধিমান বা শক্তিশালী আর কেউ হতে পারতেন না।’

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ‘অন্য কেউ হলে এই ক্ষতি, লজ্জা ও বিশৃঙ্খলা সামলাতে পারতেন না! নেতানিয়াহু একজন যোদ্ধা ছিলেন, সম্ভবত ইসরায়েলের ইতিহাসে তার মতো আর কেউ ছিল না।’ তিনি যোগ করেন, এর ফল এমন কিছু ছিল যা কেউ কল্পনাও করেনি—বিশ্বের অন্যতম বড় ও শক্তিশালী পারমাণবিক অস্ত্রের সম্পূর্ণ বিনাশ, ও এটা খুব তাড়াতাড়িই হতে যাচ্ছে! আমরা আক্ষরিক অর্থেই ইসরায়েলের টিকে থাকার জন্য লড়ছিলাম, ইসরায়েলের ইতিহাসে নেতানিয়াহুর চেয়ে কঠোর বা দক্ষ যোদ্ধা আর কেউ নেই।’

‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার’ : ট্রাম্পের দাবি
ট্রাম্প নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মামলাটিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০২০ সালে বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছেন। ট্রাম্প বলেন, যিনি এত কিছু দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা মামলা আমার কাছে অকল্পনীয়। তিনি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি মামলা ও আইনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজের এবং নেতানিয়াহুর বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন।

ট্রাম্প বলেন, নেতানিয়াহুর বিচার অবিলম্বে বাতিল করা উচিত, অথবা একজন বীরকে ক্ষমা করা উচিত, যিনি দেশের জন্য এত কিছু করেছেন।’ তিনি শেষ করেছেন এই কথা বলে, ‘যুক্তরাষ্ট্রই ইসরায়েলকে বাঁচিয়েছিল এবং এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই নেতানিয়াহুকে বাঁচাতে চলেছে। ‘ন্যায়বিচারের’ এই অপব্যবহার মেনে নেওয়া যায় না!’

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের বিষয়ে নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর লিকুদ দলের একজন মুখপাত্র এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এর একটি হিব্রু অনুবাদ শেয়ার করেছেন।

নেতানিয়াহু তিনটি দুর্নীতির মামলায় বিচারের মুখোমুখি
মামলা ১০০০ : নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ। অভিযোগ হলো—তিনি হলিউডের মিডিয়া মোগল আর্নন মিলচানের কাছ থেকে অবৈধভাবে সাত লাখ শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) মূল্যের দামী উপহার নিয়েছেন। বিনিময়ে নেতানিয়াহু মিলচানকে তার দীর্ঘমেয়াদী মার্কিন রেসিডেন্সি ভিসা নতুন করতে ও কর সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করার চেষ্টা করে নিয়ম ভেঙেছেন।

মামলা ২০০০ : নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ। অভিযোগ হলো—তিনি ইয়েদিওথ আহরোনোথ সংবাদপত্রের প্রকাশক আর্নন (নোনি) মোজেসের সঙ্গে একটি গোপন চুক্তি করার চেষ্টা করেছিলেন। চুক্তির শর্ত ছিল, যদি নেতানিয়াহু ইসরায়েল হায়োম ফ্রি শিট (যা ইয়েদিওথের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী) দুর্বল করার জন্য আইন তৈরি করেন, তাহলে ইয়েদিওথ তাকে আরও ইতিবাচক প্রচার দেবে।

মামলা ৪০০০ (বেজেক-ওয়ালা মামলা ): এটি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর মামলা। অভিযোগ হলো—তিনি এমন কিছু সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন যা টেলিকম জায়ান্ট বেজেকের বড় শেয়ারহোল্ডার শাউল এলোভিচকে কোটি কোটি শেকেল আর্থিকভাবে লাভবান করেছে। বিনিময়ে, নেতানিয়াহু ওয়ালা নিউজ সাইট থেকে (যা এলোভিচেরও মালিকানাধীন ছিল) নিজের পক্ষে ভালো প্রচার পেয়েছেন বলে অভিযোগ।

নেতানিয়াহু অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, পুলিশ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা মিলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এসব মামলা সাজিয়েছেন।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স