Thikana News
০৮ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

বঙ্গোপসাগরের বিপুল খনিজ-প্রাকৃতিক সম্পদ যুক্তরাষ্ট্র, চীনকে গভীরভাবে আগ্রহী করেছে

বঙ্গোপসাগরের বিপুল খনিজ-প্রাকৃতিক সম্পদ যুক্তরাষ্ট্র, চীনকে গভীরভাবে আগ্রহী করেছে



 
বঙ্গোপসাগরে ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে। জিরকল, ম্যাগনেটাইট, কোনল্ট, রুটাইন্স, টাইটেনিয়াম অক্সাইড, ইলমেনাইট নামের অত্যন্ত মূল্যবান ভারী খনিজ রয়েছে। বিপুল মৎস্য সম্পদের পাশাপাশি নানা সামুদ্রিক প্রাণী, সামুদ্রিক আগাছা লতাগুল্ম রয়েছে। এসব আগাছা প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন রোগের ওষুধ তৈরি করা যায়। স্পিরুলিনা নামক একপ্রকার আগাছার চীন, জাপান, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে খাদ্যদ্রব্য হিসেবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সরেজমিন পর্যবেক্ষণ ও দীর্ঘ যাচাই প্রক্রিয়া ও মূল্যায়নে উপরিউক্ত তথ্যাদিসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। এই ইনস্টিটিউট ২০১৭ সালে চালু হওয়ার পর বঙ্গোপসাগরের বিপুল খনিজ-প্রাকৃতিক দেশের বিশেষজ্ঞরা সমুদ্রের উপকূলে, গভীর সমুদ্রে গবেষণা কাজ শুরু করেন। তাদের গবেষণায় পাওয়া তথ্য, উপাত্তে সমুদ্র সম্পদের বিশাল সম্ভাবনাই নয়, বাস্তবে সমুদ্রে অরক্ষিত, অজানা অভাবনীয় সম্পদ থাকার চিত্রও পাওয়া যায়। তারা সুনীল অর্থনীতির অবারিত দ্বার উন্মোচন করেছেন। বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, বাংলাদেশের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়েই জ্বালানি সম্পদ, খনিজ সম্পদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে ৪৭৫ প্রজাতির মাছের সন্ধান তারা পেয়েছেন। ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি, ২০ প্রজাতির কাঁকড়া, ৩৩৬ প্রজাতির শামুক-ঝিনুকের সন্ধান পাওয়া গেছে। বঙ্গোপসাগরের ২২টি ব্লকে ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট কিংবা তারও অধিক পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যাবে। তাদের মতে, বিপুল পরিমাণ তেল থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে। কক্সবাজারের রামুতে স্থাপিত রিসার্চ ইনস্টিটিউট দৃঢ়ভাবে মনে কওে, বঙ্গোপসাগরের বিশাল সমুদ্র সম্পদ আহরণ করতে পারলে দেশের অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন হবে। কিন্তু এ জন্য যে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন, বাংলাদেশের পক্ষে তার সংকুলান সম্ভব নয়। এ কারণে এখানে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয় সক্রিয় বিবেচনায় রাখা হয়েছে। চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বঙ্গোপসাগরে গ্যাস, তেলসহ প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্র, চীন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও দিয়েছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তারা বঙ্গোপসাগরের খনিজসহ বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের তথ্য পায়। ওশেনোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দীর্ঘ পাঁচ বছরের সরেজমিন পর্যবেক্ষণভিত্তিক রিপোর্ট তারাও গোপনে সংগ্রহ করেছে। তার পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন বঙ্গোপসাগরে বিনিয়োগে গভীরভাবে উৎসাহিত হয়েছে।
ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞরা কক্সবাজার সমুদ্র এলাকায় হেভি মিনারেলের সন্ধান পেয়েছেন। অত্যন্ত মূল্যবান এই খনিজ সম্পদ এবং ৭২ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল পেয়েছেন। সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৬০ প্রজাতির প্রবালের সন্ধান করেছেন তারা। সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে কুতুবদিয়া পর্যন্ত পাঁচ হাজার বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত সমুদ্র এলাকার খনিজ সম্পদ চিহ্নিতকরণ, ভূতাত্ত্বিক, রাসায়নিক, জৈব উপাদানসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে। উপকূলীয় সমুদ্র এলাকার সাড়ে সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার ভারী খনিজ ও পলি বণ্টন প্রক্রিয়া নির্ধারণের জন্য সামুদ্রিক ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে জেলিফিশের বিপুল সমারোহের সন্ধানও পাওয়া গেছে।

কমেন্ট বক্স