Thikana News
২০ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্পের ৩৫ শতাংশ শুল্ক পোশাকখাতে বাংলাদেশের নতুন বাজার কোথায়?

ট্রাম্পের ৩৫ শতাংশ শুল্ক পোশাকখাতে বাংলাদেশের নতুন বাজার কোথায়?
তায়েব মিল্লাত হোসেন: বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি করতে হলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে আসছে আগস্ট মাস থেকে। এই শুল্ক কমিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সবশেষ দেন-দরবার থেকে আপাতত কোনো সুফল মিলছে না- সেটা একরকম নিশ্চিত। যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে গত ১৫ জুলাই সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সেখানে উপদেষ্টা জানিয়েছেন, পাল্টা শুল্ক কমানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকবার বসতে চান তারা। যার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশ। মার্কিন সরকারের কাছে সময়ও চেয়েছেন তারা। এর মানে কবে আবার বৈঠক হবে, তা নিশ্চিত নয়।
এর মানে আগের যে প্রায় ১৫ শতাংশ শুল্ক, এর সঙ্গে নতুন করে আরো ৩৫ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি সম্ভবপর হবে। এক্ষেত্রে দেশের অন্যতম রপ্তানিখাত তৈরি পোশাক শিল্পে বড় ধাক্কা লাগতে চলেছে। কারণ বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অন্যতম রপ্তানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। প্রকৃতপক্ষে একক দেশ হিসেবে তারাই সবচেয়ে বড়। যেখানে বছরে যায় প্রায় আট বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ভিয়েতনাম ও ভারত থেকে ২০ শতাংশ পারস্পরিক শুল্কে পোশাক কিনতে পারবেন মার্কিন ক্রেতারা। সেখানে বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ শুল্ক কেনো দিতে যাবেন তারা? সাশ্রয় যেখানে, সেই বাজারের দিকেই তাদের চোখ পড়বে। ব্যবসার মূল দিক তো এটাই।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কারোপের আগে পর্যন্ত পোশাকখাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুখবরই দিয়ে আসছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি খাতে ৮.৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এ সময়ে রপ্তানি আয় ৩৯.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পোশাকখাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার। সেখানে আরএমজি রপ্তানি হয়েছে ১৯.৭১ বিলিয়ন ডলার। যা দেশে মোট আরএমজি রপ্তানির ৫০.১০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৭.৫৪ বিলিয়ন ডলার (১৯.১৮ শতাংশ)।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের পাল্টা শুল্কের পরও ইইউ’র বাজার নিয়ে বাংলাদেশকে ভাবতে হবে না। কিন্তু শুধু অর্থনীতি নয়, যেকোনো কিছুতেই আসলে নির্ভার থাকার সুযোগ নেই। বিকল্প ভাবনা ভাবতে হয়। নতুন কিছু তালাশ করতে হয় নিয়মিতভাবে। করোনাভাইরাসের সময়ও সেটা দেখা গেছে। বিশ্বজুড়ে সেই মহামারীতে পোশাকখাতে স্থবিরতা তৈরি হয়েছিল। তখন আগের বাজার ধরে রেখে নতুন নতুন বাজার তালাশের কথা বলা হয়েছিল। মহামারী শেষে সব স্বাভাবিক হতে শুরু করলে তৈরি পোশাক রপ্তানির নতুন বাজার খোঁজার চেষ্টা আবার পেছনে পড়ে যায়। তাই এখন ট্রাম্পের ঘোষণার পর ‘গেলো গেলো’ রব উঠছে। রপ্তানিখাতের বড় ধাক্কার জায়গা থেকে সেই শঙ্কা অবশ্যই যৌক্তিক। কথা হচ্ছে বিকল্প পথ তৈরির চেষ্টা সেভাবে দৃশ্যমান নয় কেন?
ইপিবির তথ্যমতে, বাংলাদেশের জন্য অপ্রচলিত বড় তিন বাজার হচ্ছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। এর বাইরে সমৃদ্ধ অর্থনীতির মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। এছাড়া মালয়েশিয়া, তুরস্ক, এমনকি বলকান অঞ্চলেও নতুন বাজার সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে যেমন প্রশাসনিক নানা উদ্যোগ প্রয়োজন, তেমনি ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে যারা আছেন, তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। দুই দিক যদি বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করা যায়, তাহলে নতুন বাজার তৈরি, নতুন বিনিয়োগ সংগ্রহ, কোনো কিছুই অসম্ভব হবে না। কিন্তু উদ্যোগ কী আদৌ নেয়া হয়?

কমেন্ট বক্স