Thikana News
০৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

সারা অঙ্গে এত ক্ষত! 

সারা অঙ্গে এত ক্ষত! 



 
মুহম্মদ শামসুল হক 

[এক]

ছোট-বড় ৫০টি স্টেট বা অঙ্গরাজ্য নিয়ে গড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রের পরস্পর সংলগ্ন ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪ বর্গমাইল বা ৭৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯৪০.৬ বর্গকিলোমিটারসহ মোট আয়তন ৩৮ লাখ বর্গমাইল বা ৯৮ লাখ ৪১ হাজার ৪৫৫ বর্গকিলোমিটার। আর আধুনিক বিশ্বের অমরাবতী যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৩৩ কোটি। অনেকের ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্র রাক্ষসরাজ রাবণের মর্ত্যরে স্বর্গপুরী। বিজ্ঞানমনস্ক মনীষীদের দৃষ্টিতে জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রাচুর্য-সমৃদ্ধি এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আশীর্বাদধন্য যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান বিশ্বের অপ্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি। 

আর ভাগ্যান্বেষী বিশ্ববাসীর আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল। তাই আমেরিকার মায়ামরীচিকার হাতছানিতে প্রলুব্ধ হয়ে বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাখ লাখ নিয়তিলাঞ্ছিত মানুষ জীবনঝুঁকি নিয়ে অহর্নিশ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঘর ছাড়ছে। দুর্গম-দুর্লঙ্ঘ্য পথ ও শ্বাপদসংকুল বন-বাদাড় মাড়াতে গিয়ে অনেকের পথিমধ্যেই পার্থিব জীবনের অবসান ঘটছে। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গিয়ে সীমান্তরক্ষীদের সর্বদা গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। অবশ্য বিশ্ব অভিবাসীর শ্রম-ঘামে গড়ে ওঠা আমেরিকাও বৈধ-অবৈধ নির্বিশেষে সকল অভিবাসী/নাগরিককে নিজের সুশীতল নীড়ে যথাসম্ভব নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছে। কারও অজানা নয় যে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার লৌহশৃঙ্খল ছিন্ন করতে গিয়ে লাখ লাখ আমেরিকানকে আত্মাহুতি দিতে হয়েছে। আবার স্বাধীন-সার্বভৌম যুুক্তরাষ্ট্রের সবুজ-শ্যামল প্রান্তর, মাঠ-ঘাট-বন-বাদাড় বিগত ২৫০ বছরে অভ্যন্তরীণ এবং বহির্বিশ্বের সশস্ত্র হামলায় বহুবার দেশপ্রেমিক আমেরিকানের রক্তে রঞ্জিত ও ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। অথচ দুর্ভাগ্যক্রমে সামান্য কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে ইতিহাসের পাতা থেকে সে অজানা তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা আমরা অনেকেই বোধ করি না। তাই আমেরিকার রক্তরঞ্জিত ইতিহাসের সামান্য কিছু তথ্য ঠিকানার পাঠকদের জন্য অতি সংক্ষেপে প্রদান করা হলো :

স্বাধীনতা ও বিপ্লবী যুদ্ধবিগ্রহের পর যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব ভূখণ্ড ছিল সর্বদা বহিঃশত্রুর আক্রমণের লক্ষ্যস্থল। ব্রিটিশ ও তার মিত্ররা আমেরিকার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সহজে মেনে নিতে রাজি ছিল না। তাই প্রধানত চৌকস ব্রিটিশ বাহিনী এবং অন্য শত্রুদের সশস্ত্র আগ্রাসন দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা এবং নিজেদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার খাতিরেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার প্রয়োজন ছিল সময়ের দাবি। সেই দাবির পটভূমিতে দূরদর্শী-রণনিপুণ, চৌকস ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার মাধ্যমেই আমেরিকার সামরিক ইতিহাসের ভিত রচিত হয়েছে। উল্লেখ্য, আমেরিকান রিভলিউশনারি ওয়ারের সময় ব্রিটিশ বাহিনী ঝটিকা হামলা চালিয়ে নামমাত্র প্রতিরোধের মুখে একবার ফিলাডেলফিয়ার রাজধানী দখল করে নিয়েছিল এবং মূল্যবান স্থাপনাগুলো নিশ্চিহ্ন এবং সহায়-সম্পদের বর্ণনাতীত ক্ষতিসাধন করেছিল। পরে ১৮১২ সালে মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশ বাহিনী প্রথম এবং একমাত্র যুদ্ধে ১৮১৪ সালে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি দখল করে নিয়ে সবকিছু পুড়িয়ে ভস্মীভূত করে দিয়েছিল। 

সেই অবর্ণনীয় ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমেরিকানদের অনেক ঘাম ঝরাতে হয়েছিল এবং সেই ক্ষতচিহ্ন আমেরিকার দেহাবয়বে আজও দগদগে রয়ে গেছে।
এদিকে ভূখণ্ড সংশ্লিষ্ট কতিপয় জটিলতার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় মেক্সিকোর সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ছিল বরাবর সাপে নেউলে এবং টেক্সাসের ব্রাউন্সভিলকে মেক্সিকানরা নিজেদের অঙ্গরাজ্য দাবি করে আসছিল দীর্ঘকাল ধরে। এরই জের ধরে ১৮৪৬ সালের ২৫ এপ্রিল মেক্সিকান বাহিনী ভেলাস্কো চুক্তি লঙ্ঘন করল এবং অযাচিতভাবে রাও গ্র্যান্ডে টহলরত আমেরিকান সেনাবাহিনীর ওপর সশস্ত্র হামলা চালাল। থরটন অ্যাফেয়ার নামে মেক্সিকান বাহিনীর এই আগ্রাসনের ফলে মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধ দানা বেঁধে উঠল। প্রকৃত প্রস্তাবে ‘দ্য টেক্সাস ক্যাম্পেইন’ শীর্ষক সামরিক আগ্রাসন মেক্সিকোর তৎকালীন অংশবিশেষ ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ মেক্সিকোসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল এবং আমেরিকার ভূখণ্ডে একমাত্র সামরিক হামলা হিসেবে পরিগণিত হলো।

অভ্যন্তরীণ যুদ্ধবিগ্রহ বা গৃহযুদ্ধ : আমেরিকার স্বাধীনতাযুদ্ধ, যুদ্ধবিধ্বস্ত আমেরিকার পুনর্গঠন এবং বিনির্মাণে সকল বর্ণ-গোষ্ঠী-ধর্মাবলম্বী আমেরিকানদের অবদান ছিল প্রশংসনীয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিভিন্ন স্টেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দাদের জীবনাচরণ, চিন্তাচেতনা, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে গগনচুম্বী ব্যবধান বরাবরই রয়ে গেল। বিশেষত, স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই একশ্রেণির উন্নাসিক এবং উগ্র বর্ণবাদী সম্প্রদায় আফ্রিকান-আমেরিকান, ল্যাটিনো, এশিয়ান-আমেরিকানসহ তাবৎ জনগোষ্ঠীকে নিম্নশ্রেণির আমেরিকান জ্ঞানে তাদেরকে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ রাখার পাঁয়তারা শুরু করে। ফলে রাতারাতি বর্ণবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং সমগ্র আমেরিকা রেড স্টেট ও ব্লু স্টেটÑএ দুটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আমেরিকাকে সেই ভয়াবহ বর্ণবাদ ও দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তিদানের লক্ষ্যে ষোড়শ প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের নেতৃত্বে সংঘটিত হয় গৃহযুদ্ধ। সেই গৃহযুদ্ধকালে কনফেডারেট এবং ইউনিয়ন আর্মিরা একাধিক দফা পারস্পরিক যুদ্ধে লিপ্ত হলে দেশমাতৃকার গায়ের ক্ষতচিহ্ন গভীরতর হয়। 

গৃহযুদ্ধের সময় ম্যাসাচুসেটসের ক্যাপ কোডের উপকূলে অবস্থান করছিল আমেরিকার চেসাপিকে জাহাজটি। শত্রু দমনের কনফেডারেট দাপ্তরিক অনুমতিপত্র চেসাপিকে জাহাজে রয়েছেÑএই বিশ্বাস জোগানোর কাজে জাহাজটি ব্যবহারের লক্ষ্যে ১৮৬৩ সালের ৭ ডিসেম্বর কনফেডারেট সমর্থক বরেণ্য নোভা স্কটিয়ান এবং নিউ বারন্সউইক ও ব্রিটিশ সহানুভূতিশীলরা জাহাজটি ছিনতাই করে এবং এক ক্রু সদস্যকে খুন ও তিনজনকে গুরুতর আহত করে। পরবর্তী সময়ে বরেণ্য নোভা স্কটিয়ান এবং কনফেডারেট সহানুভূতিশীল জেনারেল উইলিয়াম জনসন আলমনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় চেসাপিকে অ্যাফেয়ারে অংশগ্রহণকারী এবং ছিনতাইকারীদের সবাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার এবং বিচারের সম্মুখীন হওয়া থেকে অব্যাহতি পায়। যাহোক, ১৮৫২ সালে প্রেসিডেন্ট লিংকন দাসমুক্তি সনদে স্বাক্ষর করেন এবং অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর ১৮৫৫ সালের ১৯ জুন তা কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার আফ্রিকান-আমেরিকান শ্বেতাঙ্গদের শৃঙ্খলমুক্ত হন। তাই কৃষ্ণকায় আমেরিকানরা একে ব্ল্যাক ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে হিসেবে পালন করে আসছে। অন্যদিকে গৃহযুদ্ধের অবসানে আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে বৈদেশিক সামরিক আগ্রাসনের ঝুঁকিও ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ে।

মেক্সিকান বিপ্লব ও আগ্রাসন : ১৯১০ এর দশকে মেক্সিকান বিপ্লবের সময়ও আমেরিকান-মেক্সিকান সীমান্ত বরাবর বেশ কটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। তবে সেগুলো আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। পরবর্তী ধাপে ন্যাটিভ আমেরিকান, মেক্সিকান আমেরিকান, এশিয়ান আমেরিকান এবং আফ্রিকান আমেরিকানদের নাম ব্যবহার করে বর্ণবাদী প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছিল সান ডিয়াগো প্ল্যান বা পরিকল্পনা। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী মেক্সিকোর গভর্নর ভেনাস্টিয়ানো কারানজার প্রত্যক্ষ মদদে মেক্সিকানরা অ্যারিজোনা, নিউ মেক্সিকো, ক্যালিফোর্নিয়া ও টেক্সাস পুনর্জয়ের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলো। পুনর্দখলকৃত রাজ্যগুলোতে বর্ণবাদী প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে ১৬ থেকে ঊর্ধ্ব বয়সী সকল শ্বেতাঙ্গ পুরুষকে পাইকারি হারে নিধন করাও ছিল সান ডিয়াগো পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য। সেই অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তে ১৯৪৫ সালের গ্রীষ্মকালে মেক্সিকান এবং টেজানো বিদ্রোহীরা ব্যান্ডিট ওয়ার শুরু করল এবং মেক্সিকো সীমান্ত বরাবর টেক্সাসে সাঁড়াশি সামরিক হামলা চালাল। আর বর্ডার ওয়ার’স ব্যাটেল অব কলম্বাসের মধ্যে গভর্নর কারানজা নিউ মেক্সিকোর কলম্বাসে সশস্ত্র আগ্রাসন চালিয়ে উড্রো উইলসন প্রশাসনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জ্ঞাপন করেছিল। তাই কারানজাকে পরিতুষ্ট করা এবং টেক্সাস সীমান্ত হামলা দমনে কারানজার সাহায্যের স্বীকৃতিস্বরূপ উপদেষ্টাদের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন কারানজাকে মেক্সিকোর নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন। 
কারানজার প্রতি উইলসনের সমর্থন মূলত মেক্সিকান বিপ্লবী নেতাদের ক্ষোভের অনলে ঘি ঢালল। প্রতিশোধপরায়ণ মেক্সিকান বিপ্লবী পানচো ভিলা এবং তার ভিলিস্টাস মেজর জেনারেল জন জে পার্সিং আমেরিকাকে সমুচিত শিক্ষা দেওয়ার মানসে ১৯১৬ সালের ৯ মার্চ পানচো ভিলা এক্সপেডিশন নামে পাল্টা হামলা চালাল। অভিযান সফল হওয়ার পর সান ডিয়াগো পরিকল্পনার খুঁটিনাটি বিষয় ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স সর্বস্তরের আমেরিকানদের সবিস্তারে গোচরীভূত করল। ফলে নতুন করে তোড়জোড় শুরু হলো এবং ইমপেরিয়াল জার্মান বৈদেশিক কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ ও যুদ্ধকালীন সম্ভাব্য মিত্র হিসেবে জার্মান টেলিগ্রামকে বিশেষ প্রস্তাব দিয়েছিল। ওই প্রস্তাবে সান ডিয়াগো পরিকল্পনার ভিত্তিতে কারানজার সম্প্রসারণবাদী উদ্দেশ্যাবলির প্রতি সমর্থন জানানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। 

এরই পটভূমিতে ইমপেরিয়াল জার্মানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে এবং মিত্র শক্তির পক্ষে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিতে ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। যাহোক, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯১৮ সালে মেক্সিকো পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে হানা দেওয়ার পরিকল্পনা করলেও কার্যত তা হালে পানি পায়নি।

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী হামলা : বিশ শতকের আগ পর্যন্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের পক্ষ থেকে আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে বড় ধরনের সামরিক অভিযান হানার ভীতি সারাক্ষণ যুক্তরাষ্ট্রকে তাড়া করত। তাই ব্রিটিশ নৌবাহিনীকে সাফল্য ও দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলার খাতিরেই আমেরিকার নৌপ্রতিরক্ষা বাহিনীকে সুসজ্জিত ও বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। মূলত ওয়ার প্ল্যান রেডের ভিত্তিতেই নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অভিযান পরিচালনা এবং প্রতিহতের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছিল। এরই ফলে পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং কানাডায় ব্রিটিশ হামলা পুরোপুরি প্রতিহত করার সম্ভব হয়েছিল।

স্মর্তব্য, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে ১৯২১ সালে ওয়ার প্ল্যান রেডের আওতায় কানাডার পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সম্ভাব্য সশস্ত্র হামলার ডিফেন্স স্কিম নম্বর ওয়ানের (প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা নং ১) খসড়া প্রণয়ন করেছিলেন কানাডিয়ান আর্মি লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেমস বাস্টার সাউথল্যান্ড ব্রাউন। ‘ডিফেন্স স্কিম নম্বর ওয়ান’ শীর্ষক পরিকল্পনার আওতায় যুদ্ধ বাধতে গেলে কানাডীয় সেনাবাহিনীর অত্যন্ত স্বল্প সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানার কথা ছিল। এ ছাড়া ব্রিটিশের কাছ থেকে সাহায্য লাভ এবং যুদ্ধ প্রস্তুতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলে কানাডীয় সেনাবাহিনী জড়ো হওয়ার অধিকার লাভের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্যাসিফিক কমান্ডের আওতাধীন কানাডিয়ান ফ্লাই কলামসকে (দ্রুতগামী বিশেষ সেনাবাহিনী) সিয়াটল, স্পোকেইন এবং পোর্টল্যান্ড অবরোধের জন্য অনতিবিলম্বে প্রেরণের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রেইরি কমান্ডের আওতাধীন হানাদার বাহিনীর শুরুতে ফার্গো এবং গ্রেট ফলস আক্রমণ ও দখল করার পর দ্রুতগতিতে মিনাপলিসের দিকে অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল। [চলবে]

লেখক : সহযোগী সম্পাদক, ঠিকানা, নিউইয়র্ক।
২২ আগস্ট ২০২৩

কমেন্ট বক্স