ফিলিস্তিনের গাজায় সশস্ত্র শাসকগোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে তেলের দাম। সংঘাত আরও জোরালো হওয়ার কারণে ইসরায়েলি মুদ্রা শেকেলের দামে বড় পতন ঘটেছে।
৯ অক্টোবর সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ডলারের বিপরীতে শেকেলের দর প্রায় ৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে নিচে নেমে গেছে। ফিলিস্তিনি হামাস গোষ্ঠী অনেকটা নাটকীয়ভাবে ইসরায়েলের ভেতরে হামলা চালানোর পর দেশটির আর্থিক বাজার চাপে পড়ে।
সোমবার এশিয়ার বাজারে ডলারের বিপরীতে শেকেলের দাম ৩ শতাংশ কমে যায় বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে। অন্যদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ইউরোপের বাজারে দিনের শুরুতে শেকেলের দাম ২ শতাংশ পড়ে যায় এবং দিন যত গড়িয়েছে, শেকেল তত দুর্বল হয়েছে। ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে হস্তক্ষেপ করার পরও শেকেলের পতন রোধ করা যায়নি।
শেকেলের দাম ধরে রাখার জন্য ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিদেশি মুদ্রা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংক অব ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ৩ হাজার কোটি ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা বিক্রি করবে।
এদিকে ইসরায়েলি সরকারি বন্ডের বিক্রি বেড়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয়েছে, ১০ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদের হার বেড়ে ৪ দশমিক ৬ শতাংশে উঠেছে, এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ইসরায়েলের শেয়ারবাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘তেল আবিব ৩৫’ সূচকে সোমবারও পতনের ধারা অব্যাহত ছিল। রোববার এই সূচক ৬ দশমিক ৫ শতাংশ কমে যায়, যা ছিল ২০২০ সালের মার্চের পর সবচেয়ে বড় পতন।
যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে ইসরায়েলের আকাশ পরিবহনেও। বেশির ভাগ বড় বিমান সংস্থা তেল আবিবে ফ্লাইট স্থগিত করেছে অথবা উড়ানের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এসব বিমান কোম্পানি বলেছে, ইসরায়েলে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তারা অপেক্ষা করছে।
এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম এল আল। ইসরায়েলের এই জাতীয় বিমান পরিবহন সংস্থা তাদের ফ্লাইটের সংখ্যা উল্টো বাড়িয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা রিজার্ভ সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনা। হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে ইসরায়েল তার ইতিহাসের অন্যতম বড় সৈন্য সমাবেশ ঘটাতে চলেছে।
বিমান চলাচল সীমিত হওয়ার কারণে অবশ্য ইসরায়েলের পর্যটন খাত বেশ বিপদে পড়েছে। কোভিড মহামারির পর দেশটিতে পর্যটক বাড়ছিল। তবে লড়াইয়ের কারণে সেই পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে। ইসরায়েলে কর্মসংস্থানের সাড়ে ৩ শতাংশের বেশি আসে পর্যটন খাত থেকে।
ঠিকানা/এনআই