লক্ষ্ণৌর অটল বিহারি বাজপেয়ি স্টেডিয়ামে দুই দলের পারফরম্যান্সে ছিল আকাশ-পাতাল তফাত। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং - তিন বিভাগেই নিজের মুনশিয়ানা দেখিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হওয়া অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও হারল লজ্জাজনকভাবে। অজিদের ১৩৪ রানে হারিয়েছে প্রোটিয়ারা। টানা দুই ম্যাচ হেরে এরই মধ্যে নেট রানরেটের বাজে অবস্থা হয়েছে অজিদের।
৩১২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় ২৭ রানেই। ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে মার্কো ইয়ানসেনকে লেগ সাইডে ঘোরাতে যান মার্শ। আউটসাইড এজে আকাশে অনেকক্ষণ ভেসে থাকা বল মিড অফে তালুবন্দী করেন টেম্বা বাভুমা। ১৫ বলে কোনো বাউন্ডারি ছাড়াই করেছেন ৭ রান। মার্শের আউটের পর দ্রুত বিদায় নেন ডেভিড ওয়ার্নারও। সপ্তম ওভারের শেষ বলে লুঙ্গি এনগিডিকে ব্যাকফুটে কাট করতে যান ওয়ার্নার। কাভার পয়েন্ট এলাকায় ডাইভ দিয়ে ক্যাচ ধরেছেন রাসি ফন ডার ডুসেন। ৭ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ২ উইকেটে ২৭ রান।
মার্শ-ওয়ার্নারের বিদায়ের পর ৪ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন মারনাস লাবুশেন। ৩ নম্বরে নামা স্টিভ স্মিথের সঙ্গে লাবুশেনের জুটিটা জমতে না জমতেই অস্ট্রেলিয়া খায় আরও এক ধাক্কা। দশম ওভারের পঞ্চম বলে স্মিথের বিপক্ষে এলবিডব্লুর আবেদন করেন কাগিসো রাবাদা। অনফিল্ড আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় রিভিউ নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভুমা। তাতে আউট হয়ে যান স্মিথ। ৯.৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৫০ রান। ১৬ বলে ৪ চারে ১৯ রান করেন স্মিথ।
মার্শ, ওয়ার্নার, স্মিথ - তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া অস্ট্রেলিয়াকে দ্রুত আরও একটি ধাক্কা দেন রাবাদা। ১২তম ওভারের প্রথম বলে দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ইংলিশকে বোল্ড করেন রাবাদা। বোলিংয়ে দুর্দান্ত গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে ম্যাক্সওয়েলকে কট অ্যান্ড বোল্ড করেন কেশব মহারাজ। ১৭ বলে ৩ রান করতে পেরেছেন অস্ট্রেলিয়ার এই অলরাউন্ডার। এক প্রান্তে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকা লাবুশেনকে একা ফেলে আউট হয়ে যান স্টয়নিসও। স্টয়নিসের উইকেটে রাবাদার যতটা না অবদান, তার চেয়ে বেশি অবদান ডি ককের। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্টয়নিসের গ্লাভসে লাগা বল বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্তভাবে ধরেছেন ডি কক। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো অজিদের স্কোর দাঁড়ায় ১৭.২ ওভারে ৬ উইকেটে ৭০।
এরপর মিচেল স্টার্ককে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন লাবুশেন। তবে ২৭ রান করে স্টার্ক ফিরলে আর কেউই লাবুশেনকে সঙ্গ দিতে পারেননি। বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মধ্যেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন লাবুশেন। ৪৬ রান করা এই ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে আর বেশিক্ষণ টিকেনি অজিদের ইনিংস। ৪০.৫ ওভারে ১৭৭ রানে অল আউট হয় তারা।
এর আগে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। অজিদের পিচ্ছিল ফিল্ডিংয়ের সুযোগ নিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩১১ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংস সর্বোচ্চ ১০৯ রান করেন কুইন্টন ডি কক। ১০৬ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৮ চার ও ৫ ছক্কা। অজি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কামিন্স, অ্যাডাম জাম্পা ও জশ হ্যাজলউড নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
সেঞ্চুরির সুবাদে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন কুইন্টন ডি কক।
ঠিকানা/এনআই