শনিবার বিকেল পাঁচটা। পুরো পল্টন এলাকা ছিল পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। নয়াপল্টন-কাকরাইল সংযোগ সড়কের পাশেই তখন শতাধিক পুলিশের অবস্থান। ঠিক তার পেছনেই ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালের অবস্থান। যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশকে নিয়ে আসা ঢাকা-কুমিল্লা সড়কের এশিয়া নামের বাসটি, যার নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব-৬৩০৪।
দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটিতে পুলিশের পোশাকে থাকা দুজন আগন্তুক পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ তুলেছেন গাড়িটির চালক মনির হুসেন।
এর আগে গত শুক্রবার শনির আখড়া থেকে রিকন্ডিশনের কারণ দেখিয়ে এই গাড়ি নিয়ে আসে পুলিশ। সে কারণেই প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী এক দিন করতে হয় পুলিশের পরিবহনের কাজ।
২৮ অক্টোবর শনিবার এশিয়া নামের বাসটি প্রথমে ৪০ জন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের পাশে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যায়। পরবর্তী সময়ে নতুন করে আরও ৪০ পুলিশ সদস্য নিয়ে নয়াপল্টনে এসে নামিয়ে দেয় বাসটি। তবে বাসটিকে নাইটিঙ্গেল মোড়েই অবস্থানের কথা বলে বাস থেকে নেমে যান পুলিশ সদস্যরা। গাড়িতে আগুন লাগার পূর্বেও পুলিশের প্রতিনিধি থেকে একটি ফোন আসে এবং গাড়ির চালককে সেখানেই থাকতে বলা হয় বলে অভিযোগ বাসটির চালকের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল পাঁচটার দিকে মোটরবাইকে করে ডিবি পুলিশের জ্যাকেট পরে দুজন ব্যক্তি ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালের সামনে থাকা বাসটিতে আগুন দিয়ে দ্রুত জায়গা ত্যাগ করেন। সে সময় গাড়ির চালক বাধা দিতে গেলে তাকে ঘুষি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে কাকরাইল সড়ক অভিমুখে তারা চলে যান।
তারা বলেন, বাসে লাগা আগুন মুহূর্তেই বিদ্যুতের পিলারে ছড়িয়ে পড়ে এবং তা বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারে লেগে বিস্ফোরণের শব্দ হয়। হাসপাতালসহ সড়কের পাশে থাকা ভবন থেকে পানি ও অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা। তবে আগুন লাগার এক ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
আগুনে বাসটি পুড়ে গেলেও যে পুলিশ সদস্যদের পরিবহন করে নিয়ে আসা হয়েছিল, তারা কেউই আর আসেননি এবং খোঁজও নেননি বলে অভিযোগ বাসের চালক ও ম্যানেজারের।
কারা গাড়িতে আগুন লাগাল, এমন প্রশ্নে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, কারা আবার, যারা আজকে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে তারা। বিএনপি-জামায়াত এই অগ্নিকাণ্ড করেছে। বাসে আগুনও তারাই দিয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ ঘিরে দুপুরের পর পুরো পল্টন পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে। বিকেলে পল্টন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ঠিকানা/এনআই