ঝালকাঠি-১ (কাঁঠালিয়া-রাজাপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমর বীর উত্তম বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজী ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন কবিরকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
৪ ডিসেম্বর সোমবার বেলা ১১টার দিকে কাঁঠালিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শাহজাহান ওমর এই সমাবেশ করার অনুমতি নেননি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নেছার উদ্দিন। তারা বলেন, ‘আমরা শুনেছি তিনি সমাবেশ করেছেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
তবে ওই সমাবেশে প্রকাশ্য বন্দুক হাতে কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজীকে দেখা গেছে।
সমাবেশে বন্দুকের বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নেছার উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হলে কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (সদ্য সাবেক) জাকির হোসেন কবির বলেছেন, ‘বন্দুকটি আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহজাহান ওমরের লাইসেন্সকৃত। তিনি বক্তব্য রাখার সময় পাশে বসে থাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজীর কাছে রাখেন।’
সমাবেশে বিএনপির এই দুই নেতা ছাড়াও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া সিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল বসার বাদশা, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাহমুদ হোসেন রিপন, আওরা বুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান নকীবসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘কাঁঠালিয়া আওয়ামী লীগে কোনো গ্রুপিং থাকতে পারবে না। এখানে তরুণ লীগ, কিবরিয়া লীগ, বুড়া লীগ ও বাচ্চা লীগ থাকতে পারবে না। এখানে থাকবে শুধু শেখ হাসিনা গ্রুপ। আমি এবং বিএনপির দলবলসহ আপনাদের মেহমান। আমাদের বরণ করে নেবেন। আমরা শিক্ষিত লোক, আমাদের সম্মান করলে আপনাদেরও সম্মান করব।’
নতুন দলে যোগদান প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন কবির বলেন, ‘আমি যে দলই করি না কেন, শাহজাহান ওমরকে পছন্দ করি। ব্যক্তিগতভাবে তার নির্বাচন করব। তার নির্বাচনী মাঠে থাকব বলেই সমাবেশে গিয়েছি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সিকদার বলেন, ‘দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, তাকে নিয়ে মাঠে থাকব আমরা। শাহজাহান ওমর সাহেব আমাদের ডেকেছেন, আমরা তার পরামর্শ অনুযায়ী সভা করেছি। বিএনপির কেউ তার সঙ্গে নির্বাচন করলে অসুবিধা কোথায়।’
শাহজাহান ওমর গত ২৯ নভেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান। ৩০ নভেম্বর তিনি গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ খবরে শাহজাহান ওমরকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদসহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। রোববার ঝালকাঠির রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
ঠিকানা/এনআই