দ্বিতীয়বারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে প্রথমবার ফাইনালে উঠে যার কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে গেছে সেই ভারতকে এবার উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে আইসিসির একাডেমি প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ১৮৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় ভারত। জবাবে ৪৩ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে টাইগাররা।
ছোট-বড় যেকোনো টুর্নামেন্টেই নকআউটে বাংলাদেশের পথের কাঁটা ভারত। আজকের সেমিফাইনালে অবশ্য বিপরীত চিত্রই দেখা গেছে বাংলাদেশের ইনিংসে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। এই ভারতকে হারিয়ে ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিল বাংলাদেশ।
ভারতকে ১৮৮ রানে আটকে দিয়ে জয়ের কাজটা অবশ্য সহজ করে দিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আবার শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় রান ২ হওয়ার সময়ই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। কোনো রান না করেই ফেরেন জিশান আলম। দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেটে ছোট দুটি জুটি হলেও ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেই বাংলাদেশের। সর্বশেষ ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আশিকুর রহমান শিবলি আজ ৭ রানের বেশি করতে পারেননি।
তবে এর পর থেকেই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। দলকে ঘুরে দাঁড়াতে দুর্দান্ত অবদান রাখেন আরিফুল ইসলাম ও আহরার আমিন। চতুর্থ উইকেটে ১৩৮ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েছেন দুজনে। তাদের এই জুটিতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ভারত। তবে একটা আক্ষেপ থেকে যাবে আরিফুলের। ৬ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি মিডল অর্ডার ব্যাটার। ৯৪ রানে আউট হওয়ার সময় দলের জয়ের প্রয়োজন ছিল ১৭ রান।
দুর্দান্ত ইনিংসটি ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৯০ বলে সাজিয়েছিলেন আরিফুল। ১৭২ রানে ১৯ বছর বয়সী ব্যাটার আউটের পর দ্রুত দুই উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ জমানোর চেষ্টা করেছিল ভারত। কিন্তু ততক্ষণে ওদের অনেক দেরি হয়ে গেছে। আরিফুলের মতো ৬ রানের আক্ষেপ আহরারেরও। তবে সেটা সেঞ্চুরি নয় ফিফটি না পাওয়ার।
দলের জয়ের জন্য যখন ২ রান প্রয়োজন, ঠিক তখন ৪৪ রানে আউট হন আহরার। ব্যক্তিগত আক্ষেপ থাকলেও ৪ উইকেটের জয় নিশ্চয়ই সবকিছু ভুলিয়ে দেবে তাদের।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। টাইগার পেসারদের সামনে শুরুতেই দিশেহারা হয়ে পড়ে ভারতের টপঅর্ডার। ১৩ রানে বিদায় নেন ৩ ব্যাটার। তিনটি উইকেটই শিকার করেন ১৭ বছর বয়সী পেসার মারুফ মৃধা। এরপর টিম ইন্ডিয়ার ওপর চড়াও হন ডানহাতি পেসার রাহানাদ দৌলা বর্ষণ। শচীন দাস ও প্রীয়ংসু মালিয়ার উইকেট তুলে নেন তিনি। অভিনাশকে ফিরিয়ে ৬১ রানে ভারতের ৬ নম্বর উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশের যুবারা।
সপ্তম উইকেটে ৮৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন মুশির খান ও মুরুগান অভিষেক। তাদের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ভারত যুবারা। দুজনই ফিফটি তুলে আউট হন। ১৪৫ রানের মাথায় ৫০ রানে সাজঘরে ফিরে যান মুশির খান। সর্বোচ্চ ৬২ রান করা অভিষেককে ফেরান সেই মারুফ মৃধা। শেষ পর্যন্ত ১৮৮ রানে অলআউট হয় ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ৪১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার পেসার মারুফ মৃধা।
ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাকিস্তানকে অন্য সেমিফাইনালে ১১ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকেরা। আগে ব্যাটিং করে ১৯৩ রানে অলআউট হয়েছিল আমিরাত। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৮২ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস।
ঠিকানা/এনআই