গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোট তৃতীয়বারের মতো স্থগিত করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার এই ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এর আগে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় এবং সোমবার প্রথম দফায় নিরাপত্তা পরিষদের ভোট স্থগিত হয়।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ত্রাণ সরবরাহের জন্য সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি খসড়া রেজ্যুলেশনের ওপর ভোটাভুটি বুধবার টানা তৃতীয়বারের মতো স্থগিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের সূত্র থেকে আনাদোলুর প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই খসড়া রেজ্যুলেশনের বিষয়ে আশ্বস্ত নয়, বুধবার দিনের শেষের দিকে এই ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে স্থগিত হওয়ার পর এখন স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোট দেবেন।
দ্রুত ও দীর্ঘমেয়াদী মানবিক যুদ্ধবিরতি ও জরুরি সহায়তা নিশ্চিতের কথা বলা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের খসড়া প্রস্তাবটিতে। এতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সংঘাত জড়িত সব পক্ষকে অবশ্যই তাদের সীমা মেনে চলতে হবে। সেইসঙ্গে জাতিসংঘের একটি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা দ্রুত মোতায়েন করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে ৮ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। ওই প্রস্তাবের পক্ষে পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৩টিই ভোট দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করলে প্রস্তাবটি খারিজ হয়ে যায়।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশেই নারী ও শিশু। এ ছাড়া এই সংঘাতে আহত হয়েছে আরও ৫২ হাজার ৫৮৬ জন।
ইসরায়েলের আক্রমণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। এ হামলায় উপকূলীয় অঞ্চলের অর্ধেক হাউজিং স্টক ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ এই অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ। তারা তীব্র খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের মধ্যে রয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, হামাসের হামলায় দেশটির প্রায় এক হাজার ২০০ নাগরিক নিহত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আরও ১৩০ জনের বেশি মানুষ এখনও হামাস যোদ্ধাদের হাতে জিম্মি রয়েছেন।
ঠিকানা/এম