দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের নানা অভিযোগ, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকা না থাকা নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের। দলের প্রার্থী যারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তাদের সদিচ্ছার অভাব বলে মনে করছেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকা নিয়ে তিনি শোনালেন দ্বিধার কথা। জিএম কাদের বলেন, ‘অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকতে প্রার্থীদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে প্রার্থীদের রাজনৈতিক জীবনে বড় কলঙ্ক হয়ে যায়। মানুষ মনে করে– হয় প্রতিপক্ষের কাছে আতাত করে কিছুর বিনিময়ে সরে দাঁড়িয়েছে বা ভয় পেয়ে নির্বাচনের মাঠ ছেড়েছে। এটি রাজনীতির জন্য শুভকর নয়।’
১ জানুয়ারি (সোমবার) সকালে রংপুর আদালত চত্বরে নির্বাচনী গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলী প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশনের একাংশ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাপা চেয়ারম্যান।
জিএম কাদের বলেন, ‘প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের ওপর অন্যায়-অত্যাচার হয়। অনেক সময় প্রার্থীরা ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান, কখনও নীরবে চলে যান। এবারও তাই হচ্ছে, কিন্তু এবার প্রচারণা বেশি হচ্ছে। নির্বাচন থেকে প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর দুটি কারণ হতে পারে। একটি অর্থের অভাব, অপরটি অব্যাহত হুমকির কারণ।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে রয়েছি, শেষ পর্যন্ত থাকব কি না তা এখন বলতে পারছি না। আমরা শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করছি এবং পর্যবেক্ষণ করছি।’
জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সরকার বিরোধী দল ঠিক করে দিচ্ছে– এটি সত্য নয়। আমি বিরোধী দল হতে নয়, সংসদে থাকার জন্য নির্বাচনে এসেছি। আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো আসন ভাগাভাগি হয়নি বা জোটগত নির্বাচন হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচনে প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা, অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাবকে সরিয়ে রাখা। আমরা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনে এসেছি। আওয়ামী লীগ কিছু আসনে তাদের প্রার্থী সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু দলের শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী রেখেছে। অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতারা সরাসরি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে। অনেক স্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়লাভ করার সুযোগ আমরা দেখছি। আবার আমরা কোনো আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করিনি। তাই এটি জোটগত নির্বাচন হচ্ছে না।’
জিএম কাদের আরও বলেন, ‘মানুষের মাঝে ভোট উৎসব জমেনি– এটি বিশ্বাস করি না। যেখানে যাচ্ছি প্রচুর উৎসব দেখতে পাচ্ছি। যারা বলছে ভোট উৎসব নেই, তাদের উদ্দেশ্যটা সত্য নয়। আমাদের প্রচার-প্রচারণা ভালো চলছে ও ভোটে উৎসাহ-উদ্দীপনাও রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আবহাওয়াজনিত কারণে অনেক স্থানে প্রচার-প্রচারণায় কম লোকজন দেখা যাচ্ছে। পৃথিবীর বড় দেশগুলোতেও এমন হয়। ভোট দেওয়াটা আমাদের দায়িত্ব। আমি আহ্বান করব, সবাই কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে আপনার মতামত জানাবেন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়াসহ নেতাকর্মীরা।
ঠিকানা/এম