রাজধানীর সবচেয়ে বড় নদীবন্দর সদরঘাটে যাত্রী হয়রানি ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিয়ে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, সদরঘাট ‘ফিটফাটই’ থাকবে, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা সদরঘাটে দখল এবং যাত্রী হয়রানির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এ বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
দ্বিতীয়বার নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিপিং রিপোর্টার্স ফোরাম, বাংলাদেশ-এর (এসআরএফবি) এর শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সদরঘাটে গিয়ে আমি কিন্তু দোকানপাট সব তুলে দিয়েছিলাম। লাস্ট কিছুদিন ধরে আমার কাছে তথ্য আসছে যে, হয়রানি আবার শুরু হয়ে গেছে, খারাপ পর্যায়ে আছে। আমি বিনা রিপোর্টে একদিন যাবো। এই ধরনের কাজ যারা করেন তারা রাজনৈতিক কনফ্লিক্টের সুবিধা নেয় যেন এদিকে মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ নেই। এটার ব্যাপারে আমরা শক্ত পদক্ষেপ নেবো। আমরা যেটা বলছি, সদরঘাট ‘ফিটফাট’ সেটাই থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের তথ্যপ্রাপ্তির বিষয়ে তিনি বলেন, তথ্যের ব্যাপারে তো আমরা বলেছি। আর এখন তো অত জটিলতা হয় না। যে-সব কর্মকর্তা নেগেটিভ কাজ করেন তারা তথ্য দিতে চান না।
যারা পজিটিভ কাজ করেন তারা তথ্য দেবেনই। যারা তথ্য দিতে চান না, এই নেগেটিভ লোকদের তালিকা করা দরকার। কেন দেবেন না? একটা কাজ হচ্ছে কী পরিমাণ অগ্রগতি হলো, কত টাকা ছাড় হলো, এটা দিতে তো অসুবিধা নেই।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের উপকূলীয় অঞ্চল ভোলায়, আমাদের হাতিয়া, এত বড় একটা জায়গা ৫০ বছরে আমরা তাদের একটা যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে পারলাম না। সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, এগুলোর মানুষ বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন। এগুলো নিয়ে আমাদের অনেক আগে ভাবার দরকার ছিল।
এখন আমাদের যেহেতু প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সন্দ্বীপ ও কুতুবদিয়ায় যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে তাতে যদি জেটিগুলো নির্মাণ হয় তাহলে জোয়ার-ভাটায় কাদার মধ্যে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে পড়তে হবে না। আর হাতিয়ার ব্যাপারে আমরা বিশেষভাবে চিন্তা-ভাবনা করছি। ক্ষোভ প্রকাশ করে খালিদ মাহমুদ বলেন, আমরা ঢাকাকেন্দ্রিক হচ্ছি। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশ, আর ঢাকা, দৌলতদিয়া, শিমুলিয়া, পাটুরিয়ার বাইরে আর আমি যাবো না। বাইরে যদি কোনো ফেরি চালু হয় তাহলে তো আমাকে যেতে হবে। দরকার নেই! এখন আমরা বিল্ডিং তুলি, বিল্ডিংয়ের ভাড়াবাবদ সেখান থেকে বেতন নেবো, এই হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি- তা তো হবে না। এটা তো সেবা, সেই সেবাটা আমরা দিতে পারছি না।
ঢাকার চারপাশের নদী নিয়ে তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী রক্ষার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী খুবই সিরিয়াস। বিশেষ করে দুইটা জায়গায় তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। ঢাকার চারপাশের যে, ব্রিজগুলো লো হাইটেড (নীচু) সেগুলো অপসারণ করা হবে। আর আমাদের গোমতী নদীতে যে আটটি ব্রিজ আছে, সেখানে নেভিগেশন যেন ঠিক থাকে, তার নির্দেশনা সরাসরি আছে। স্থানীয় সরকার হয়ত প্রকল্প নেবে। আমরা তাগাদা দেবো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে যে, নতুন প্রকল্প না নিয়ে চলমান প্রকল্পগুলো শেষ করা। আমাদের কাজগুলো চলমান থাকবে। শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে শিপিং রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দিন জেবেল ও সাধারণ সম্পাদক আফরিন জাহানসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঠিকানা/ছালিক