হাসিনাকে নিয়ে বিব্রত ভারত!

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে মারাত্মক বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে ভারত। না পারছে শেখ হাসিনার ইচ্ছা অনুযায়ী ভারতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানের অনুমতি দিতে, না পারছে বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দিতে। শতাধিক হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফেরত দিতে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও চাপ আসতে পারে ভারত সরকারের ওপর।
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বের করে দেওয়ার জন্য বিএনপি ও এলডিপি দাবি করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ শেখ হাসিনার বিচার দাবি করেছেন। এ উদ্দেশ্যে তাকে ভারতে অবস্থান করতে না দেওয়া ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে বলেছেন। বিএনপি ও তার সমমনা অন্য দলগুলোও আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা প্রশ্নে অভিন্ন নীতিতে রয়েছে। একমাত্র লক্ষণীয় ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে। তারা এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য ফিরিয়ে আনার প্রকাশ্য দাবি করেনি। তবে জামায়াতের এ অবস্থার পরিবর্তন পরে আসতেও পারে।
শেখ হাসিনাকে নিয়ে নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকার যে মারাত্মক বিব্রতকর অবস্থায় আছে শেখ হাসিনা নিজেও তা উপলব্ধি করছেন বলে অনেকেই মনে করছেন। ভারত সরকারকে তিনি বিব্রত করতে চান না। আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার সরকার দুঃসময়ে শেখ হাসিনাকে চরম বিপজ্জনক অবস্থায় ঠেলে দেওয়ার পক্ষেও নন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসসহ অন্যান্য দল, গোষ্ঠী, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দিকটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখার তাগিদ দিচ্ছেন। কারণ ভারত শেখ হাসিনার কাছ থেকে প্রত্যাশিত সহযোগিতা পেয়েছে। ভারতের সাধারণ মানুষের মতামতও শেখ হাসিনাকে নিরাপদে ভারতে অবস্থানের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলের চাপকে পুরোপুরি এড়িয়ে যেতে পারছে না ভারত সরকার।
বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেওয়ার দাবি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে করা হতে পারে। তার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করানোর চেষ্টা করা হতে পারে। গণতান্ত্রিক, মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বব্যাপী ভারতের সুখ্যাতি থাকলেও উল্লিখিত অবস্থাগুলো হালকা করে দেখাও শেষ পর্যন্ত সম্ভব হবে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে।
সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে শেখ হাসিনা ভারত থেকে অন্য কোথাও অবস্থান নেওয়ার চিন্তাভাবনাও করছেন বলে জানা যায়। যুক্তরাজ্যে অবস্থানের জন্য সে দেশের ভিসা সংগ্রহের চিন্তা করা হচ্ছে। শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ যুক্তরাজ্য সরকারের মন্ত্রী। সরকারে তার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। তার মা শেখ রেহানাও যুক্তরাজ্যের নাগরিক। পারিবারিক গভীরতম সম্পর্ক বিবেচনায় যুক্তরাজ্য সরকার শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতেও পারে। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের ইতিবাচক মনোভাব পরিলক্ষিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এর বিরোধিতা করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুপা হক। বিএনপির রাজনীতিতে বিশ্বাসী এই ব্রিটিশ নাগরিকের শেখ হাসিনা-বিরোধী এই অবস্থান হাসিনা অনুরাগী ব্রিটেনের বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে অমানবিক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, যদি শেখ হাসিনা স্থায়ীভাবে ভারতে অবস্থানের সুযোগ পান, তাহলে তা দিল্লিকে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। যদি এমনটাই ঘটে, তাহলে দিল্লির কূটনীতি মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। কেননা ভারতের কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী দেশই নয়, দিল্লির কৌশলগত অংশীদার হচ্ছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘনিষ্ঠ মিত্র হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে, উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে ভারতের জন্য বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দিল্লি যদি একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে তার মর্যাদা রক্ষা করতে চায়, তবে অন্য প্রতিবেশী দেশে তার প্রভাব বজায় রাখতে হবে। ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীনও এই অঞ্চলে প্রভাবের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। গত বছর ভারতের চোখের সামনেই ভারত-বিরোধিতা করে মালদ্বীপের ক্ষমতায় এসেছেন মোহাম্মদ মুইজ্জু। তাই হাসিনার উপস্থিতিকে ঘিরে দিল্লিকে সাবধানে পা ফেলতে হবে।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041