যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘যেকোনো যুদ্ধের’ জন্য প্রস্তুত চীন

প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৫, ০১:০৮ , অনলাইন ভার্সন
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন। জানিয়ে দিয়েছে, তারা যেকোনো ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত নতুন বাণিজ্য শুল্কের জবাবে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটি।

বুধবার (৫ মার্চ) রাতে বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ক্রমেই বাণিজ্যযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করার পর পাল্টা জবাবে চীনও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে মার্কিন কৃষিপণ্যের ওপর।

মঙ্গলবার এক্স মাধ্যমে এক বিবৃতিতে চীনের দূতাবাস বলেছে, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ চায়, সেটা শুল্ক যুদ্ধ হোক, বাণিজ্য যুদ্ধ হোক বা অন্য কোনো যুদ্ধ—চীন শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত।’

এটি ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর চীনের দেওয়া অন্যতম কঠোর বক্তব্য। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে যখন বিশ্বনেতারা একত্র হয়েছেন, তখন এই বক্তব্য এসেছে।

বুধবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং ঘোষণা করেছেন, ২০২৫ সালে চীন তার প্রতিরক্ষা বাজেট আবারও ৭ দশমিক ২ শতাংশ বাড়াবে। তিনি সতর্ক করেন, বিশ্বজুড়ে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দেখা যায়নি এমন পরিবর্তন এখন দ্রুতগতিতে ঘটছে।

বিবিসির মতে, বেইজিংয়ের নেতারা চীনের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাইছেন যে বাণিজ্যযুদ্ধের হুমকি থাকলেও দেশটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চীন নিজেকে একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে তুলে ধরতে চায়, যেখানে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেনের যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত একটি দেশ হিসেবে উপস্থাপন করছে।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো ও কানাডার মতো মার্কিন মিত্রদেরও শুল্কের আওতায় এনেছে। চীন এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে এবং বিশ্বজুড়ে নতুন অংশীদারদের আকৃষ্ট করতে চাইতে পারে। তবে দেশটি অতিরিক্ত উত্তেজনা তৈরি করতে চাইবে না।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করে বলেছে, তারা চীনের ওপর অন্যায্যভাবে চাপ সৃষ্টি করছে এবং মিথ্যা অভিযোগ তুলছে; বিশেষ করে ফেন্টানাইল মাদকের বিষয়ে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘ভীতি প্রদর্শন আমাদের ভয় দেখাতে পারবে না। আমাদের ওপর অত্যাচার বা চাপ প্রয়োগ করেও কিছু অর্জন করা যাবে না। চীনের সঙ্গে আলোচনার সঠিক পথ হলো পারস্পরিক সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে সমঝোতা করা।’

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্পর্ক সব সময় বিশ্বরাজনীতির অন্যতম আলোচিত বিষয়। চীনের সাম্প্রতিক এই কঠোর অবস্থান ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের চীনবিরোধী কৌশলের প্রতিক্রিয়ায় বেইজিং এখন আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছে।

প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং আগে থেকে ভোক্তা ব্যয় হ্রাস, আবাসনসংকট এবং বেকারত্ব সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। চীন তার অর্থনীতিকে চাঙা করতে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের অধিবেশনেও এই পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক বাজেট চীনের, যা বর্তমানে ২৪৫ বিলিয়ন ডলার। তবে এটি যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক কম। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য অনুসারে, চীন জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে, যা যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার তুলনায় অনেক কম। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন তার প্রতিরক্ষা ব্যয়ের প্রকৃত পরিমাণ গোপন রাখছে।

বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ভবিষ্যতে কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ রয়েছে।

ঠিকানা/এনআই
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078