সামনে কঠিন সংকট

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৪ , অনলাইন ভার্সন
দিন যত যাচ্ছে, সমস্যাও তত বাড়ছে। সামনের দিনগুলোতে সমস্যা-সংকট প্রকটতরই হবে। এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এক নিয়ন্ত্রণ-বহির্ভূত পরিস্থিতিরও সম্মুখীন হতে পারে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল এ ধরনের আশঙ্কা বিবেচনায় রেখেই ভবিষ্যদ্বাণী করছেন, পরিস্থিতি নির্বাচন অনিশ্চিত করে তুলতে পারে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শক্তির প্রকাশ্য ও নেপথ্য তৎপরতা যতটা আশাবাদী করছে, তার চেয়ে অনেক বেশি সংশয়-শঙ্কার জন্ম দিচ্ছে। বিদ্যমান সীমিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও বহাল থাকবে কি না এবং ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বহাল থাকার অনিশ্চয়তা থেকেই এই শঙ্কা ও হতাশা।
বিপদের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় থাকা বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও অবস্থান করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও একটি নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, নয়াদিল্লিতে সদ্য সমাপ্ত ২০ দেশের মিশনগুলোর প্রধানদের বৈঠকে দেশে দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদী, বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা, তাদের নবরত উত্থান ও সংগঠিত রূপে বিভিন্ন উন্নয়নশীল, অনুন্নত দেশে আত্মপ্রকাশের আশঙ্কা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। সেই দেশে এবং প্রতিবেশী দেশসমূহে এর অশুভ প্রভাবের দিক নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা হয়। কীভাবে চরম অনাকাঙ্খিত এই অবস্থা মোকাবিলা করা যায়, তা বিচার-বিশ্লেষণ করে কর্মপন্থা স্থির করা হয়।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, জাতিসংঘকে অনবহিত রেখে উল্লিখিত দেশগুলোর সমন্বয়ে সংশ্লিষ্ট দেশে হস্তক্ষেপ করার বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। প্রতিবেশী দেশ, দেশসমূহ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট দেশে সরাসরি হস্তক্ষেপের বিষয়ও এতে রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, রাশিয়া, তুরস্ক, জার্মানি, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ের মতো দেশও এতে রয়েছে। কূটনৈতিক মহল মনে করেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ইয়েমেন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক, বিশেষ করে হুতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা, নিরীহ মানুষের প্রাণহানি, পাকিস্তানে মাঝেমধ্যেই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি, সংঘাত-দুর্যোগময় মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বিরাজমান সংকট মোকাবিলায় ২০টি দেশ অভিন্ন অবস্থানে থাকা এবং কূটনৈতিক ও অন্যবিধ যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রশ্নে একমত হয়েছে। যথাযথ পদক্ষেপ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, পরিষ্কার নয়। সামরিক হস্তক্ষেপ হতে পারে কি না জানা যায়নি। তবে সবই করা হবে জাতিসংঘের অবগতিতে শান্তিশৃঙ্খলা, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধানের আবরণে। অপেক্ষাকৃত দুর্বল, দরিদ্র রাষ্ট্রের ওপর কর্তৃত্ব, নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেই কোনো কোনো মহল শঙ্কিত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক এক দশক যাবৎই উন্নত পর্যায়ে রয়েছে। শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াই নয়, গোটা এশিয়ায় ভারত কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। প্রধানত চীনের নেতৃত্বের বিপরীতে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট বিশ্বস্ত শক্তির উত্থান ঘটাতে চায় মার্কিন সরকার। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান এখানে মুখ্য নয়। বাংলাদেশকে ঘিরে ভারতসহ কোনো প্রতিবেশীসহ আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক কোনো মহলেরই ন্যূনতম দুর্ভাবনার কারণ নেই। কারণ বাংলাদেশ কারও শত্রু বা প্রতিপক্ষ নয়। স্বাধীন সত্ত্বায় নিজেকে বিকশিত করার নীতি বরাবর অনুসরণ করে চলছে বাংলাদেশ। আসাম, ত্রিপুরা, অরুণাচল, নাগাল্যান্ডসহ সাতকন্যা বলে অভিহিত সাত রাজ্যের সমস্যা ভারতের নিতান্ত অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ-লাগোয়া বলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিভিন্ন অপশক্তি নানাভাবে উৎসাহিত করতে পারে বিদেশি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী। কিন্তু বাংলাদেশ এই নীতিতে বিশ্বাসী নয়। ভারতীয় কোনো কোনো প্রভাবশালী মহল এতে বাংলাদেশকে নানা কৌশলে জড়াতে সচেষ্ট থাকতে পারে। বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ, কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা, সরকারকে নানাভাবে চাপে রেখে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র কাজ করতে পারে। অভ্যন্তরীণভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য পূরণে আন্দোলন-সংগ্রাম দমনবিরোধী কার্যক্রম চালাতে পারে ক্ষমতাসীনরা। বিক্ষুব্ধ জনতার গণতান্ত্রিক আন্দোলন নৈরাজ্যও সৃষ্টি করতে পারে। ক্ষমতাসীনদের দমন-পীড়নের বিপক্ষে উল্লিখিত আন্তর্জাতিক শক্তিও কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে শান্তিরক্ষী মোতায়েনের প্রস্তাবও তারা দিতে পারে। জাতিসংঘের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতাসীন করার এখতিয়ার থাকবে। আন্দোলনের আড়ালে একটা নৈরাজ্যকর, গোলযোগপূর্ণ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টাও কোনো কোনো মহল থেকে করা হতে পারে, যা বাংলাদেশকে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি করবে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ করা হচ্ছে সুপরিকল্পিতভাবে। মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড সরাসরি এ অভিযোগ করেছেন। সরকার এতে তীব্র আপত্তি ও প্রতিবাদ জানালেও তাতে কাজ হচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই এ-জাতীয় অপপ্রচার সর্বাত্মকভাবে করা হচ্ছে। এসবের উদ্দেশ্য একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041