
মৌমাছি যেমন গুনগুন করে গান শুনিয়ে যায়, বাংলাদেশে এখন নির্বাচন নিয়েও গুনগুন গান শোনা যাচ্ছে। ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের জুনে নির্বাচনী গুঞ্জন কখনো রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়িয়ে দিচ্ছে, আবার পরক্ষণেই হতাশার পানি সে উত্তাপে ঢেলে দিয়ে সব সম্ভাবনার বাতি নিভিয়ে দিচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে কখনো অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চাপে দেখা যাচ্ছে। কখনো বিএনপিকে চাপে থাকার কথা শোনা যায়। আবার কখনো জামায়াতকে হতাশাগ্রস্ত থাকার খবর প্রকাশ পাচ্ছে খবরের কাগজে।
ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করেছে। সরকারকেও মাঠ গোছাতে দেখা যাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে আলোচনা, উত্তেজনা, মাঠ গোছানোর কাজ সবই চলছে। অন্যদিকে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তাও মাঠপর্যায়ে খুব এড়িয়ে যাওয়ার মতো নয়। দেখা যাচ্ছে, সবার দাবির মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত থাকছে নির্বাচন। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে কারও কারও এমন সব শর্তারোপ করতে দেখা যাচ্ছে, তাতে নির্বাচন আদৌ আয়োজন করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে ভয়ংকর রকমের অনিশ্চয়তা লক্ষ করা যায়।
অনেক রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক নেতা আছেন, যারা বুঝে হোক না বুঝে হোক, ‘ঘোড়ার আগে গাড়ি’ জুড়তে আগ্রহী। বাংলাদেশে এখন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে চলছে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম। সেই সরকার যখন নির্বাচন দেওয়ার কথা বলছে, সে ডিসেম্বরে হোক বা জুনে, তখন কেউ বলছে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। কেউ বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হতে হবে। কারও দাবি আগে গণপরিষদ নির্বাচন করে নতুন করে সংবিধান লিখে গণপরিষদে তা পাস করিয়ে নিয়ে সেই মতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সুতরাং নির্বাচন সবাই চাইলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ বড়ই আঁকাবাঁকা। কন্টকাকীর্ণ নির্বাচনের পূর্বে জামায়াতের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ অপূর্ণ রয়েছে, যা পূরণ না হলে জামায়াতের কাছে সব শর্ত, সব নির্বাচনই অর্থহীন হয়ে যাবে। এক নম্বর শর্ত জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া, দুই. দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে পাওয়া। এ ছাড়া ৩ নম্বর শর্ত জামায়াতের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল শুনানির যে আবেদন জানানো হয়েছিল, তারও কোনো নিষ্পত্তি হয়নি।
শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনকাল, যাকে বলা হচ্ছে ফ্যাসিস্ট আমল, তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার সৃষ্ট অভ্যুত্থানে সেই শাসনের অবসান ঘটার পর আন্দোলনে সকল রাজনৈতিক দল সংগতভাবেই আশা করেছিল, তাদের দুঃসময়ের অবসান ঘটবে। নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে। জনগণ যারা এত দিন কোনো ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি, তারা ভোট দিতে পারবে এবং তাদের ভোটে যারা জয়ী হবেন, তারাই ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে শাসন করার অধিকার লাভ করবেন। সেদিক থেকে জনগণের সর্বাধিক আগ্রহ লক্ষ করা যায় বিএনপি বা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতি।
কিন্তু বর্তমান সময়ের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যেসব ছাত্রনেতৃত্বে অভ্যুত্থান সফল হয়, তাদের অধিকাংশ মিলে নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হবে, তা কারও কল্পনাতেও ছিল না। দেখা গেল, ছাত্রনেতাদের মধ্যে যারা সর্বাধিক সরব ছিলেন, তাদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ ইংরেজিতে যা ‘ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি’ (এনসিপি) গঠিত হয়েছে এবং তাদের প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আশীর্বাদও স্পষ্ট লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে অনেকেই ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’কে কিংস পার্টি বলেও ধারণা করতে শুরু করে। নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তারাও পূর্বশর্ত আরোপ করে বলল, ‘নির্বাচনের আগে গণপরিষদের নির্বাচন হতে হবে।’ এ ছাড়া এনসিপি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নির্বাচনের অনুকূল নয় বলে উল্লেখ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানকে অনিশ্চিত করে তোলে।
তাই নির্বাচন নিয়ে ত্রিমুখী একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা দেখা যাচ্ছে এবং অনেক বোদ্ধা মানুষও মনে করছেন, নির্বাচন নিয়ে কথা অনেক হবে। কিন্তু নির্বাচন আদতে সত্যি কখন অনুষ্ঠিত হবে, তা বুঝি ড. ইউনূস ব্যতীত আর কেউ জানেন না। তাই যত দিন নির্বাচন প্রকৃতই অনুষ্ঠিত না হচ্ছে, তত দিন নির্বাচন স্রেফ গুজব-গুঞ্জন হয়েই থাকবে। আর রাজনীতির মাঠে কেবল অনিশ্চয়তাই বিরাজ করবে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত মুখোমুখি হবে ক্রমাগত।
ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করেছে। সরকারকেও মাঠ গোছাতে দেখা যাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে আলোচনা, উত্তেজনা, মাঠ গোছানোর কাজ সবই চলছে। অন্যদিকে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তাও মাঠপর্যায়ে খুব এড়িয়ে যাওয়ার মতো নয়। দেখা যাচ্ছে, সবার দাবির মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত থাকছে নির্বাচন। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে কারও কারও এমন সব শর্তারোপ করতে দেখা যাচ্ছে, তাতে নির্বাচন আদৌ আয়োজন করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে ভয়ংকর রকমের অনিশ্চয়তা লক্ষ করা যায়।
অনেক রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক নেতা আছেন, যারা বুঝে হোক না বুঝে হোক, ‘ঘোড়ার আগে গাড়ি’ জুড়তে আগ্রহী। বাংলাদেশে এখন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে চলছে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম। সেই সরকার যখন নির্বাচন দেওয়ার কথা বলছে, সে ডিসেম্বরে হোক বা জুনে, তখন কেউ বলছে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। কেউ বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হতে হবে। কারও দাবি আগে গণপরিষদ নির্বাচন করে নতুন করে সংবিধান লিখে গণপরিষদে তা পাস করিয়ে নিয়ে সেই মতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সুতরাং নির্বাচন সবাই চাইলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ বড়ই আঁকাবাঁকা। কন্টকাকীর্ণ নির্বাচনের পূর্বে জামায়াতের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ অপূর্ণ রয়েছে, যা পূরণ না হলে জামায়াতের কাছে সব শর্ত, সব নির্বাচনই অর্থহীন হয়ে যাবে। এক নম্বর শর্ত জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া, দুই. দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে পাওয়া। এ ছাড়া ৩ নম্বর শর্ত জামায়াতের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল শুনানির যে আবেদন জানানো হয়েছিল, তারও কোনো নিষ্পত্তি হয়নি।
শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনকাল, যাকে বলা হচ্ছে ফ্যাসিস্ট আমল, তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার সৃষ্ট অভ্যুত্থানে সেই শাসনের অবসান ঘটার পর আন্দোলনে সকল রাজনৈতিক দল সংগতভাবেই আশা করেছিল, তাদের দুঃসময়ের অবসান ঘটবে। নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে। জনগণ যারা এত দিন কোনো ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি, তারা ভোট দিতে পারবে এবং তাদের ভোটে যারা জয়ী হবেন, তারাই ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে শাসন করার অধিকার লাভ করবেন। সেদিক থেকে জনগণের সর্বাধিক আগ্রহ লক্ষ করা যায় বিএনপি বা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতি।
কিন্তু বর্তমান সময়ের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যেসব ছাত্রনেতৃত্বে অভ্যুত্থান সফল হয়, তাদের অধিকাংশ মিলে নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হবে, তা কারও কল্পনাতেও ছিল না। দেখা গেল, ছাত্রনেতাদের মধ্যে যারা সর্বাধিক সরব ছিলেন, তাদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ ইংরেজিতে যা ‘ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি’ (এনসিপি) গঠিত হয়েছে এবং তাদের প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আশীর্বাদও স্পষ্ট লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে অনেকেই ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’কে কিংস পার্টি বলেও ধারণা করতে শুরু করে। নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তারাও পূর্বশর্ত আরোপ করে বলল, ‘নির্বাচনের আগে গণপরিষদের নির্বাচন হতে হবে।’ এ ছাড়া এনসিপি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নির্বাচনের অনুকূল নয় বলে উল্লেখ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানকে অনিশ্চিত করে তোলে।
তাই নির্বাচন নিয়ে ত্রিমুখী একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা দেখা যাচ্ছে এবং অনেক বোদ্ধা মানুষও মনে করছেন, নির্বাচন নিয়ে কথা অনেক হবে। কিন্তু নির্বাচন আদতে সত্যি কখন অনুষ্ঠিত হবে, তা বুঝি ড. ইউনূস ব্যতীত আর কেউ জানেন না। তাই যত দিন নির্বাচন প্রকৃতই অনুষ্ঠিত না হচ্ছে, তত দিন নির্বাচন স্রেফ গুজব-গুঞ্জন হয়েই থাকবে। আর রাজনীতির মাঠে কেবল অনিশ্চয়তাই বিরাজ করবে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত মুখোমুখি হবে ক্রমাগত।