আমার সবুজ মা

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ১২:০৮ , অনলাইন ভার্সন
মা এই পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট আর সবচেয়ে বিশাল ভালোবাসার শব্দ। এই দুনিয়ায় খারাপ লোক অনেক আছে, কিন্তু কোনো খারাপ মা নেই। প্রত্যেক মা যখন সন্তান জন্ম দেয়-ভ্রমণ থেকে শুরু করে নয় মাস পর্যন্ত তিন কেজি ওজনের একটা শিশু পেটে নিয়ে স্বাভাবিক সব কাজ রুটিনমতো করে যায়। ঘুমাতে গেলে পেটের সন্তান কখনো পেটে নড়াচড়া করছে, মায়ের পেটে লাথি দিচ্ছে, তখন মায়ের ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। আর মা সঙ্গে সঙ্গে দোয়া করছে আমার সন্তান যেন ভালো থাকে। সে যেন সুস্থভাবে এই পৃথিবীতে আসে-এই হলো মায়ের পরিচয়। সেই মাকে ভালোবাসার জন্য কোনো দিবসের প্রয়োজন নেই। আমরা আমাদের মাকে ভালোবাসব প্রতিদিন।

যত ধর্ম আছে সবখানে মায়ের সম্মানকে সবার উপরে রাখা হয়েছে। ইসলাম ধর্মে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলছেন, মায়ের নাম ধরে শেষ বিচারের দিন মানে কিয়ামতের দিন সন্তানকে ডাকা হবে, কিংবা সন্তানকে পরিচিত করা হবে। এরপর আর কোনো প্রশ্ন থাকে না। মা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম বন্ধু। পৃথিবীর কোনো সম্পদ, টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়ি হারানোর সঙ্গে মাকে হারানোর তুলনা হয় না। মা নিয়ে যুগে যুগে রচিত হয়েছে অসংখ্য কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ। ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’, শওকত ওসমানের ‘জননী’সহ কেবল মাকে কেন্দ্র করেই কত সাহিত্য উঠে এসেছে। আরও বহু রচনা রচিত হবে নিশ্চিত। মোটকথা, যত দিন এ বিশ্ব তার অস্তিত্ব বজায় রাখবে, তত দিন মাকে নিয়ে অনুভূতির কথা, বেদনার কথা নানাভাবে উঠে আসবে। পৃথিবীর সব সম্পর্ক, সব ভালোবাসা একটি সম্পর্কের কাছে এসে মাথা নোয়ায়। তা হলো মা আর সন্তানের সম্পর্ক। কোনো ব্যাখ্যা নেই, কোনো নাম নেই, কোনো লাভ-ক্ষতির হিসাব নেই, পাওয়া বা না পাওয়ার অতৃপ্তি নেই, আছে কেবল পরিপূর্ণতা। এ এক নির্মোহ পবিত্র বন্ধন, যা কেবল মা আর সন্তানের মধ্যে হতে পারে।

মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্ব মা দিবস পালন করা হয়। মাকে নিয়ে আলাদা একটি দিবসের প্রচলন হলেও বস্তুতপক্ষে কোনো নির্দিষ্ট দিনে বা সময়ে বা উপলক্ষ করে মায়ের প্রতি ভালোবাসা হিসাব করা যায় না। মা দিবস চালু হওয়ার পেছনে মূলত কয়েকটি দেশের ভিন্ন ভিন্ন ইতিহাস পাওয়া যায়। ভিন্ন মতগুলো একত্র করে আজকের দিবসে এসেছে। তবু পৃথিবীর সব দেশ কিন্তু একই সঙ্গে এই দিবস পালন করে না। কিছু দেশে আলাদা দিনও রয়েছে। কয়েকটি ইতিহাসের একটি হলো ১৬ শতকে ইংল্যান্ডে মা দিবস পালন করার খবর পাওয়া যায়। আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সেই সময়ে জুলিয়া হাও নামের এক গীতিকার যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে আমেরিকার সব মাকে একত্র করতে চেয়েছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক মা দিবস পালন করতে চাচ্ছিলেন। তিনি আংশিক সফলও হয়েছিলেন। কারণ সারা বিশ্বে না হলেও তার শহরে ঘটা করেই পালিত হতো। ১৯১২ সালে আনা জার্ভিস স্থাপন করেন আন্তর্জাতিক মা দিবস সমিতি এবং ‘মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস’-এর বহুল প্রচলন করেন। আবার হাজার বছর আগেও প্রাচীন রোম ও গ্রিসে তাদের দেবীর বন্দনায় আজকের মা দিবসের কিছুটা মিল দেখা যায়। এ ছাড়া ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে দীর্ঘকাল ধরে মাদারিং সানডের মতো বহু আচার পালন করা হতো মায়েদের এবং মাতৃত্বকে সম্মান জানানোর জন্য।

মা দিবসের প্রচলন অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক। কেননা নিজের ভুলে কিংবা অন্যের প্ররোচনায় আমাদের বাঙালি সমাজ কখনো কেউ কেউ নিজের মাকে অবহেলা করে, বৃদ্ধাশ্রমে রেখে দেয়। সেই সব সন্তানেরা এই মা দিবসের মানে বুঝে নিজেদের ভুল বুঝতে পারে। সন্তান নিজের মায়ের ঋণ কোনো দিন শোধ করতে পারে না। তাই যত যা-ই ঘটুক, যেভাবেই যেখানে থাকেন না কেন, অবশ্যই নিজের মা-বাবাকে নিজের সঙ্গে রাখবেন। আমাদের সমাজব্যবস্থায় মেয়েদের নিজের মা-বাবাকে স্বামী বা শ্বশুরবাড়ি রাখা সম্ভব হয় না। আবার প্রবাসী বা চাকরির সুবাদে অনেক ছেলের পক্ষেও নিজের মা-বাবাকে সঙ্গে রাখা যায় না। এ রকম পরিস্থিতিতে প্রতিদিন মা-বাবার খোঁজ নেবেন। চেষ্টা করবেন মা-বাবার কাছে গিয়ে থাকতে। তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে। মা দিবস হোক মাকে ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম দিন। আর মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা থাকুক বছরের ৩৬৫ দিনই। সকল মাকে সালাম। শুভ হোক প্রত্যেক মায়ের প্রতিটা দিন।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041