চতুর্থ দিনে বিক্ষোভ, লস অ্যাঞ্জেলেসে ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েন

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৫, ১০:৩৬ , অনলাইন ভার্সন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়াকড়ি অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় চলমান বিক্ষোভের মুখে। এই পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে লস অ্যাঞ্জেলেসে ৭০০ মার্কিন মেরিন সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য আসা পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবে বলে জানানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার আরো এক ধাপ বৃদ্ধি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

শনিবার থেকে অভিবাসনবিরোধী অভিযান শুরুর পরই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসী বিতাড়নের আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সংঘাতের রূপ নিয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় শত শত বিক্ষোভকারী লস অ্যাঞ্জেলেসের কেন্দ্রস্থলে একটি ফেডারেল আটক কেন্দ্রে জড়ো হলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে শুরু করে। সেখানে আটক রয়েছে বহু অভিবাসী।

জাতীয় রক্ষী বাহিনী মানব প্রাচীর তৈরি করে ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পরে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ ‘লেস লেথাল’ বা কম প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এলএপিডি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশ সদস্যদের দিকে বস্তু নিক্ষেপ শুরু করলে তারা এই অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি পায়। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক বার্তায় পুলিশ জানায়, ‘লেস লেথাল মিউনিশন ব্যথা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

এদিকে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য সরকার জাতীয় রক্ষী ও মেরিন সেনা মোতায়েন ঠেকাতে ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তারা অভিযোগ করেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান এবং রাজ্য সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।

অতীতে মার্কিন মেরিন সেনারা শুধুমাত্র বড় দুর্যোগের সময়—যেমন হারিকেন ক্যাটরিনা ও ৯/১১ হামলার পরে—দেশের অভ্যন্তরে মোতায়েন হয়েছিল। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন অত্যন্ত বিরল ঘটনা। তবে এখন পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসন ১৮০৭ সালের ইনসারেকশন অ্যাক্ট প্রয়োগ করেনি, যা সেনাদের সরাসরি আইন প্রয়োগকারী হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়।

পেন্টাগন সোমবার নিশ্চিত করে, লস অ্যাঞ্জেলেসে ২০০০ জন ন্যাশনাল গার্ড সদস্যের উপস্থিতি বাড়িয়ে ৪০০০ করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আর কোনো উপায় দেখছিলাম না। সহিংসতা যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’

এ ছাড়া ট্রাম্প তার সীমান্ত নিরাপত্তা উপদেষ্টা টম হোম্যানের প্রস্তাবে সমর্থন দেন, যেখানে বলা হয়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসোমকে তার প্রশাসনের অভিবাসন নীতিতে বাধা দেওয়ার জন্য গ্রেপ্তার করা উচিত। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি হলে তাই করতাম। দারুণ প্রস্তাব।’

ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ করেছেন, বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং বেআইনি পদক্ষেপ।

চতুর্থ দিনের বিক্ষোভে উত্তেজনা

চার দিন ধরে চলা বিক্ষোভে কিছু যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে সেলফ-ড্রাইভিং ওয়েমো গাড়িও ছিল। শনিবার ও রবিবার সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্য এবং পাঁচটি পুলিশ ঘোড়া আহত হয়েছে বলে এলএপিডি জানিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা ‘ফ্রি দেম অল’ স্লোগানে ফেডারেল আটক কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেয়। মেক্সিকো ও হন্ডুরাস থেকে আগত অভিবাসী পরিবারে জন্ম নেওয়া মারজিতা সেরাতো (৪২) বলেন, ‘এটা শুধু অভিবাসীদের ব্যাপার নয়—এটা প্রত্যেক আমেরিকানের ব্যাপার, যারা স্বাধীনভাবে বাঁচতে চায়।’

বিক্ষোভে কিছু অংশগ্রহণকারী এক ট্রাম্প সমর্থককে ঘুষি মারে ও ডিম ছুঁড়ে মারে। কেউ কেউ গাড়ি থেকে ফেডারেল ভবনে পেইন্টবলও ছোড়ে। একইদিনে আরো অন্তত ৯টি শহরে বিক্ষোভ হয়—এর মধ্যে নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া ও সান ফ্রান্সিসকো রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন ডেমোক্র্যাটিক শহরগুলোকে দোষারোপ করেছে, যারা নাকি অভিবাসন আইন বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে। ট্রাম্প প্রতিদিন কমপক্ষে তিন হাজার অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। ১৯৯২ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে রডনি কিং কাণ্ডে দাঙ্গার সময় সর্বশেষ ইনসারেকশন অ্যাক্ট প্রয়োগ করা হয়েছিল, যেখানে ৫০ জনের বেশি নিহত হয় এবং এক বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, বিদ্রোহ, বিদ্রোহের আশঙ্কা, কিংবা আইন প্রয়োগে অক্ষমতা দেখা দিলে প্রেসিডেন্ট জাতীয় রক্ষী বাহিনী ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে পারেন। সূত্র : রয়টার্স

ঠিকানা/এএস 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078