আভিজাত্যের নেশায় ‘উড়ছে’ শখের নারী, পুরুষের চাপাকান্না

প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৫, ২০:০৫ , অনলাইন ভার্সন
আসিফুল ইসলাম (ছদ্মনাম) সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে আগের পেশা ছেড়ে ট্যাক্সির স্টিয়ারিং ধরেন। মোটা অংকের অর্থ জমিয়ে সাড়ে তিন বছর আগে ময়মনসিংহে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের উচ্চশিক্ষিত ও সুন্দরী তরুণী তানিয়া রহমানকে (ছদ্মনাম) বিয়ে করেন। দুই বছর আগে ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তানিয়া। তাদের সংসারে এক বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। সুখেই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। হঠাৎ কী এমন হলো আসিফুল-তানিয়ার সংসারে শুরু হয়েছে ভাঙনের তাণ্ডব। সেই তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড একটি সুখী পরিবার। 
তানিয়া এখন আর আসিফুলের সংসার করবেন না। ডিভোর্স চান। গ্রিনকার্ডের কন্ডিশন প্রত্যাহারের জন্য ইতিমধ্যে ইমিগ্রেশনে আবেদন করেছেন। চেয়েছেন স্থায়ী গ্রিনকার্ড। এই তথ্য জানার পর স্বামী আসিফুলের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। একটি বারের জন্য অপারগতা প্রকাশ করেননি স্ত্রীর স্থায়ী গ্রিনকার্ডের আবেদনের। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তানিয়ার আইনজীবী এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, তানিয়া রহমান ইমিগ্রেশনে অভিযোগ করেছেন যে তিনি ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার। অনেকবার স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন। এমনকী স্বামীর সংসারে থাকলে তিনি যে কোনো সময় আত্মহত্যা করতে পারেন বলে সাইকিয়াটিস্টের প্রতিবেদন ইমিগ্রেশনে জমা দিয়েছেন। 
স্বামী আসিফুল যখন সব জানলেন, তিনি দিশেহারা হয়ে পড়লেন। স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেও সদুত্তর পেলেন না। পরে ব্যাপক খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলেন তার স্ত্রীর উচ্চাভিলাষি জীবনের পরিকল্পনার কথা। অথচ স্ত্রীর কোনো দাবিই অপূর্ণ রাখেননি তিনি। এর চেয়েও বেশী কিছু চান তানিয়া। পরকীয়া করছেন আসিফুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে, যিনি একজন ব্যবসায়ী। শেয়ারবাজারে বড় বিনিয়োগ রয়েছে এবং নিউইয়র্কে বাড়ি-গাড়ির মালিক। 
আসিফুলের বন্ধু হিসাবে ব্যবসায়ীর সঙ্গে তানিয়ার পরিচয়। এরপর বিভিন্ন সময় তাকে নামী-দামী গিফট দিতেন ওই ব্যবসায়ী বন্ধু। ঘনিষ্ঠতা থেকে পরকীয়ায় মোড় নেয় তাদের সম্পর্ক। স্বামী যখন কাজে যেতেন, তখন ছোট্ট মেয়েকে ডে কেয়ারে রেখে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে লং ড্রাইভে যেতেন তানিয়া। গত ৬ মাস ধরে এমনটি ঘটলেও কিছুই টের পাননি আসিফুল। 
পরকীয়া এবং তানিয়ার অভিযোগ জানার পর নিউজার্সিতে এক মামা শ্বশুরের সাহায্য চেয়েছিলেন আসিফুল। তানিয়াকে নিয়ে তার মামা বসেছিলেন। জানতে চেয়েছেন ঘটনা। তখন তানিয়া অভিযোগ করেছেন- আসিফুল বিয়ের সময় বলেননি যে তিনি কী করেন। বলেছেন- ব্যবসায়ী। এসে দেখেন ক্যাবি। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তানিয়া। আর এ কারণে আসিফুলকে ছাড়তে চান তিনি। 
এ তো গেল উচ্চাভিলাষি নারীর পরকীয়া প্রেমের ঘটনা। স্বামীর সংসারে থেকে সুইটি (ছদ্মনাম) গত চার বছর ধরে উচ্চাভিলাষি জীবন কাটাতে বেছে নিয়েছেন ধর্ণাঢ্য পুরুষদের সঙ্গে চলাফেরা। স্বামীকে তোয়াক্কা না করে অন্য পুরুষের সঙ্গে লং ড্রাইভে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্টেটে যাচ্ছেন ভ্রমণে। মোবাইল ট্র্যাক করে একটি অভিজাত হোটেলে অন্য পুরুষের সঙ্গে হাতেনাতে ধরার পর গত মাসে স্বামী মন্তাজুর (ছদ্মনাম) ডিভোর্স ফাইল করেছেন। 
মন্তাজুরের অ্যাটর্নি জানান, তার চেম্বারে মাসে কমপক্ষে চারটি মামলা আসছে। বিচিত্র সব অভিযোগ। কিছু পরকীয়ার ঘটনা, কিছু উচ্চাভিলাষি জীবনের সামাজিক অবক্ষয়ের কাহিনী। বাংলাদেশি কমিউনিটিতে কিছু উচ্চাভিলাষি নারী তাদের সৌন্দর্যকে পুঁিজ করে উন্নত জীবনের আশায় যেন ‘উড়ে’ বেড়াচ্ছেন। তারা প্রয়োজনে কিছু পুরুষের শয্যাসঙ্গী হচ্ছেন, যারা কথিত ব্যবসায়ীও। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে পাচ্ছেন নগদ অর্থ, ব্রান্ডের দামি ব্যাগ, ঘড়ি, দামি পোশাক, মোবাইল, গহনা ইত্যাদি। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সামাজিক বিশেষজ্ঞ জানান, দেশ থেকে বিয়ে করে আনার দুই বছরের মাথাতেই বহু দাম্পত্য সম্পর্ক টিকছে না। স্বামী যখন জানতে পারেন তার স্ত্রী অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে, তখন আর তিনি স্ত্রীর স্থায়ী গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করেন না। কিন্তু স্ত্রীও নানাভাবে জেনে আইনজীবীর দ্বারস্থ হন গ্রিনকার্ড নবায়নের জন্য। স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের গল্প সাজিয়ে গ্রিনকার্ড নবায়নের আবেদন করেন। এক্ষেত্রে তাদের শতভাগ আবেদন সফল হয়। 
বিশেষজ্ঞ জানান, এক্ষেত্রে পুরুষের বড় কিছু ভুল থাকে। অনেকেই দেশ থেকে কাউকে বিয়ে করে আনার সময় মিথ্যা তথ্য দেন। যিনি ট্যাক্সি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন, তিনি নিজেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী দাবি করেন। ডায়মন্ড ব্যবসায়ী বলে একজন ক্যাবি একজন উচ্চশিক্ষিত নারীকে বিয়ে করে আমেরিকায় আনার পর তাদের সংসার আর টেকেনি। হোমল্যান্ড সিকিউরিটিতে চাকরি করেন দাবি করে একজন সাংবাদিক বাংলাদেশ থেকে একজন উচ্চশিক্ষিত নারীকে বিয়ে করে আমেরিকা আনেন। দুই বছর পর ওই নারী ওয়াশিংটন ডিসিতে বড় একটি চাকরি জোগাড় করে নিউইয়র্ক ছেড়েছেন। ডিভোর্স হওয়ার পর ওই সাংবাদিক এখন মানসিক ভারসাম্যহীন। বর্তমানে থাকেন ব্রুকলিনের একটি শেল্টার হোমে। 
ওই বিশেষজ্ঞের মতে- এ ধরনের মিথ্যা তথ্য বন্ধ হওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্রে কোনো কাজই ছোট নয়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে একজন সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করে আনার পর মেয়েটি যখন সত্যি জানতে পারে, তখন স্বামী যতই ভালো হোক, পরে তা মেনে নিতে পারে না। অন্যদিকে, রূপ সৌন্দর্যের কারণে সমাজের কিছু পুরুষ আছে, যারা এসব দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সহমর্মিতা জানিয়ে পাশে দাঁড়ায়। তখন দাম্পত্য কলহে খুব তাড়াতাড়ি ভাঙনে রূপ নেয়। এই ভাঙনে অসহায় হয়ে পড়ে বাবা-মায়ের সংসারে জন্ম নেওয়া শিশুরা। 
বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে, জানান ওই বিশেষজ্ঞ। 
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078