বুড়ো বাবাদের প্রতি আর কত নিষ্ঠুরতা!

প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৫, ১১:৩১ , অনলাইন ভার্সন
বর্ষপরিক্রমার চাকায় ভর করে ব্যবসায়িক স্বার্থসিদ্ধির অভিপ্রায়ে মুনাফাখোরী বণিক সম্প্রদায় উদ্ভাবিত বিশ্ব পিতৃদিবস আবারও আমেরিকাসহ উন্নত-উন্নয়নশীল বিশ্বের বিত্তশালী যুবক-যবতীদের দ্বারের কড়া নাড়ছে। আগামী ১৫ জুন রোববার আমেরিকাসহ সারা বিশ্বের উন্নাসিক কোটি কোটি যুবক-যুবতী কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থব্যয়ে রং-বেরঙের ফুল, মুখরোচক আহার্য, বাহারি পোশাক-আশাক দিয়ে হসপিস, বৃদ্ধাশ্রমসহ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাসকারী পরাশ্রয়ী বাপদের পিতৃঋণ পরিশোধে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করবে না। স্মরণাতীতকালের পারিবারিক-সামাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সহজাত মানবতাবোধের মানদণ্ডে ভালোবাসা দিবস, পিতা দিবস, মাতা দিবস ইত্যাদিকে উপজীব্য করে নতুন প্রজন্মের মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি তীব্র সমালোচনার দাবি রাখে। মানবতাবোধ বিবর্জিত এ সকল অমানবিক ও নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ড আমাদের মতো অশীতিপরদের অন্তরে রাহুর চিতাসম অশান্তির অনল প্রজ্জ্বলিত করে। তা সত্ত্বেও যার প্রতিকার করা যায় না, তা নীরবে সহ্য করতে হয় বিধায় পিতৃ দিবসের সাফল্য কামনা করতে বাধ্য হচ্ছি।
যাহোক, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে হচ্ছে, জগৎ-সংসারে সর্বাপেক্ষা অসহায় জীব বাবা। যৌবনে দাম্পত্য ও সংসারনীড় রচনার পর থেকে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বাবাকে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় সংসার রথের অচল চাকায় দু-চার বিন্দু তেল জুগিয়ে যেতে হয় কায়ক্লেশে। বোঝা যতই দুর্বহ হোক না কেন, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা-বসন্ত সংসার রথের ঘানি বাবাকে টানতে হয় যেকোনো মূল্যে। অহর্নিশ গায়ে-গতরে খাটার মতো শারীরিক পারঙ্গমতা না থাকলেও স্ত্রী-পুত্র-পরিজনের প্রাত্যহিক চাহিদা মেটানোর গুরুদায়িত্ব পূরণের প্রশ্নে তাকে সকল মরণযন্ত্রণা সহ্য করতে হবে অধোবদনে ও বিনা বাক্য ব্যয়ে। প্রয়োজনে অভাব রাহু নামক নরখেকো বাঘের সঙ্গে লড়তে হবে একান্ত খালি হাতে এবং মৃত্যুকেও আলিঙ্গন করতে হবে হাসিমুখে। এ ক্ষেত্রে পান থেকে চুন খসে পড়ার মতো তুচ্ছ ব্যত্যয়কে কেন্দ্র করে সংসারে রাহুর পদচারণ ঘটবে এবং সোনার সংসার অল্প দিনেই পুড়ে শ্মশানে পরিণত হবে। স্বামী-স্ত্রীর যৌবনের অকৃত্রিম ভালোবাসা দুদিনেই কর্পূরের মতো হাওয়ায় উড়ে যাবে।

অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও অনস্বীকার্য যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আশীর্বাদধন্য একুশ শতকের বিজ্ঞানমনস্ক মানুষগুলো ন্যুব্জদেহ এবং কুব্জপৃষ্ঠ বুড়ো বাবাদের সকল অক্ষমতাকে কৃপার দৃষ্টিতে দেখে। যন্ত্রের আশীর্বাদভোগী আধুনিক সভ্য সমাজের দৃষ্টিতে অপর ১০ জন যা পারে, বয়সের ভারে ন্যুব্জ পলিতকেশ বুড়ো বাবাদেরও তা পারতেই হবে যেকোনো মূল্যে। ব্যর্থতার প্রশ্নে পরিবারের জন্য তিনি বড় অভিশাপ ও বোঝা, জগৎ-সংসারে বেমানান, অকালকুষ্মান্ড ও পুরোপুরি অপাঙ্্ক্তেয়। হাল জমানার বিশ্ববাসী সবকিছুকে বিজ্ঞানের কষ্টিপাথরে যাচাই-বাছাই শেষে গ্রহণ বা বর্জন করে। তাই সনাতনী আবেগ-উচ্ছ্বাস, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মান্ধাতার আমলের রীতিনীতি আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক নতুন প্রজন্মের চিন্তা-চেতনার বারিতে অবগাহনের সুযোগ না পেয়ে প্রায় সর্বাংশে অনাদৃত-উপেক্ষিত ও অবহেলিত হচ্ছে। সৃষ্টির ঊষালগ্নের ধর্মীয় বিধিবিধান, সনাতনী লোকাচার, সামাজিক প্রথা- মূল্যবোধ-কৃষ্টি-সংস্কৃতি বর্তমান নতুন প্রজন্মের মনে তেমন দাগ কাটে না। চিরায়ত ধর্মীয়-পারিবারিক-সামাজিক প্রথাগুলো নতুন প্রজন্মের প্রাত্যহিকতায় আবেদন সৃষ্টি করতে না পেরে বর্তমানে নির্বাসনে যাওয়ার উপক্রম। তাই হিন্দুধর্মাবলম্বী নতুন প্রজন্মের অনেক কিশোর-কিশোরী পিতৃ প্রতিশ্রুতির মর্যাদা রক্ষার খাতিরে ধর্মাবতার রাম চন্দ্রের সস্ত্রীক বনবাসের সিদ্ধান্তের বিরূপ সমালোচনায় পঞ্চমুখ। ধর্মাবতার রামচন্দ্রকে তারা প্রশ্নবানে জর্জরিত করতে পুরোপুরি প্রস্তুত। আবার হজরত ইসমাইল জবিউল্লাহ (আ.) নিতান্ত কৈশোরে নবতিপর বৃদ্ধ পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) এর স্বপ্নাদেশের সত্যতা মনেপ্রাণে স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তাই বিনা বাক্য ব্যয়ে পিতা ইবরাহিম (আ.) এর স্বপ্নাদেশের সঙ্গে মতৈক্য পোষণ করেছিলেন এবং আল্লাহর রাস্তায় কোরবানি হওয়ার বজ্রকঠোর সংকল্প গ্রহণ করেছিলেন। আধুনিক অনেক বাকবাগিশ এবং ইঁচড়ে পাকা মুসলিম কিশোর-কিশোরী হজরত ইসমাইল জবিউল্লাহর ওই সিদ্ধান্তেরও বিরূপ সমালোচনা করছে অবলীলায়।
যাহোক, আদম দম্পতি বেহেশত থেকে বিতাড়িত এবং আরাফার ময়দানে পুনর্মিলিত হওয়ার পর থেকে জোড়ায় জোড়ায় সন্তান প্রসব করতেন বলে ইতিহাস থেকে প্রমাণ মেলে। আদি পিতা আদম (আ.) এবং আদি জননী হাওয়ার (আ.) জীবদ্দশায় তাঁদের প্রথম দফার পুত্রের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার কন্যার এবং দ্বিতীয় দফার পুত্রের সঙ্গে প্রথম দফার কন্যাকে ধর্মীয় বিধান অনুসারে বিয়ে দিতেন। এভাবেই ঊষর মরুভূমিতে জনবসতি গড়ে ওঠে ও সমাজব্যবস্থার ভিত রচিত হয়। অবশ্য সমাজবদ্ধ প্রাণী হিসেবে বন্ধ্যাত্ব কোনো দম্পতি বা যুগলের কাম্য নয়। পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হওয়া কিংবা পাশ্চাত্যের আদলে গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড হিসেবে শয্যাসঙ্গী হওয়ার পর প্রত্যেক যুগলই নির্দিষ্ট সময়ে সংসারে নতুন মুখের আগমন প্রত্যাশা করে। কিন্তু কোনো অজানা কারণে নতুন মুখের আগমন বিলম্বিত হলে নব যুগলের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে। তাদের পরিচিতজনদের মুখে মেঘ উড়তে শুরু করে এবং নানা গুঞ্জনে পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া ভারী হয়ে ওঠে। পরিণয় কিংবা বন্ধুত্বের সূত্রে আবদ্ধ যুগলদের ক্ষেত্রে জগৎ-সংসারে সন্তান-সন্ততি বিশ্ববিধাতার কত বড় আশীর্বাদ, তা বন্ধ্যা যুগলরা সম্যক উপলব্ধি করে থাকেন। তাদের নিশ্বাসে-প্রশ্বাসে পারিপার্শ্বিক আকাশ-বাতাস ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে।

চিকিৎসা ও মনোবিজ্ঞানের ভাষায় পিতা-মাতার উর্বর ডিম্বাণু ও শুক্রাণু মিথুন প্রক্রিয়ায় পরস্পর নিষিক্ত হলেই মাতৃগর্ভে ভ্রƒণের সঞ্চার হয়। কোনো দম্পতি বা যুগলের ডিম্বাণু ও শুক্রাণু উর্বর না হলে তাদের সারা জীবন বন্ধ্যাত্বের অভিশাপ বহন করতে হয়। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান নানা উপায়ে ভ্রƒণ সঞ্চারের চেষ্টা করলেও বিশ্ববিধাতার অপরিসীম ও স্বাভাবিক অনুকম্পার তুলনায় তা আদৌ হিসাবে আসে না। অনবদ্য কারণে অনস্বীকার্য যে, প্রকৃত প্রস্তাবে পিতৃত্ব কিংবা মাতৃত্ব অর্জনের ক্ষমতা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বিশেষ রহমত বা অনুকম্পা। অর্থ-বিত্ত কিংবা ধন-দৌলত কিংবা পার্থিব প্রভাব-প্রতিপত্তির বিনিময়ে এই রহমত হাসিল করা যায় না। অথচ দুর্ভাগ্যক্রমে বিজ্ঞানমনস্কতার দোহাই দিয়ে এবং প্রাগ্রসরতার বুলি আউড়ে একশ্রেণির ব্যবসায়ী নামক ঘৃণ্য নরকের কীট বেশ কিছুকাল থেকে সুকৌশলে স্বর্গীয় পিতৃত্ব এবং মাতৃত্বকে নিয়ে ব্যাপক হারে ব্যবসা শুরু করেছে। অনুন্নত-উন্নত-উন্নয়নশীল তথা গোটা বিশ্বে তারা স্বর্গীয় পিতৃত্ব ও মাতৃত্বের পসরা সাজিয়ে বসিয়েছে। জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে বিশ্ব পিতৃত্ব দিবস (ওয়ার্ল্ড ফাদার’স ডে) নাম দিয়ে দিবসটি উপলক্ষে রং-বেরঙের ফুল, মুখরোচক আহার্য, বাহারি পোশাক-আশাক কেনাবেচার মাধ্যমে একশ্রেণির ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বাণিজ্যের নামে কোটি কোটি টাকা হাতড়ে নিচ্ছে। বিশ্ব পিতৃ দিবস উপলক্ষে চোখ-ধাঁধানো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বিশ্বজুড়ে মধ্যম বয়সী যুবক-যুবতীদের পকেট কাটার ঘৃণ্য প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছে। ব্যবসায়ী মহলের দুরভিসন্ধি এবং ষড়যন্ত্রের যূপকাষ্ঠে পিতা-মাতার প্রতি সন্তান-সন্ততিদের প্রকৃত দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ মাথা ঠুকে মরছে। আমাদের নতুন প্রজন্মের বদ্ধমূল ধারণা, বছরজুড়ে শয্যাসঙ্গী, গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড, নিজ প্রিয়তমা পত্নী, পুত্র-কন্যাকে নিয়ে আলাদাভাবে বাস করার পর শুধু বিশেষ বিশেষ দিবসে পিতা-মাতাকে ফুল দিয়ে বরণ এবং ভূরিভোজে আপ্যায়ন করলেই সন্তান হিসেবে পিতা-মাতার প্রতি তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কড়ায়-গন্ডায় মিটে যায়। দিনে দিনে এই ভ্রান্ত ও অমূলক বিশ্বাস ক্রমশ ডালপালা মেলে বিশাল মহিরুহের আকার ধারণ করছে। ফলে বৃদ্ধাশ্রম, ওল্ডকেয়ার সেন্টার ইত্যাদিতে সারা দুনিয়া ভরে যাচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত অসহায় পিতা-মাতার সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।

অনস্বীকার্য যে, সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অসহায় সৃষ্টি মানবশিশু। এক সাগর অসহায়ত্ব এবং পরনির্ভরশীলতাকে আশ্রয় করে প্রতিটি মানবশিশুর ধরাধামে আগমন ঘটে। বলার অপেক্ষা রাখে না, বানরের শাবক প্রসবের অব্যবহিত পরপরই গাছের ডাল ধরে ঝুলতে শেখে। গরুর বাছুর জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উঠে দাঁড়াতে এবং যত্রতত্র চড়ে বেড়াতে পারে। অথচ শুধু হামাগুড়ি দিয়ে চলতে এবং আলতোভাবে হাঁটতেই প্রত্যেক মানবশিশুর দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগে। শিশুর সেবা-যত্ন, আহার-বিহার, ভরণ-পোষণ, শিক্ষাদান এবং তাদেরকে যুগোপযোগী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পিতা-মাতার অবদানের তুলনা হয় না। এমনতর বাস্তবতার নিরিখে হজরত লোকমান (আ.) তাঁর পুত্রকে বলেছিলেন, ‘হে বৎস! কখনো পিতা-মাতার সাথে উচ্চস্বরে কথা বলো না। তাদের মর্মপীড়ার কারণ হয়Ñএ ধরনের উঁহ্ শব্দটিও মুখে উচ্চারণ করো না। আর তাদের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনাকালে বলবে, রাব্বির হামহুমা কা’মা রাব্বাইয়ানি ছাগিরা।’

ইউরোপ, আমেরিকাসহ পাশ্চাত্য বিশ্বে আত্মনির্ভরশীলতার দোহাই দিয়ে দিনে দিনে ইউনিট ফ্যামিলির সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি বাংলাদেশেও আজকাল বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে সঙ্গে রাখা অনেকেই অহেতুক বিড়ম্বনা এবং ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের অন্তরায় জ্ঞান করেন। আবার অনেক অতি যত্নশীল অভিভাবক বুড়ো পিতা-মাতাকে নিজেদের সন্তান-সন্ততির অন্তর্নিহিত সহজাত গুণাবলির সুষম বিকাশের অন্তরায় ভেবে থাকেন। বর্তমানে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী সিংহভাগ অভিভাবকই নিজেদের সন্তানদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে পিতা-মাতাকে ওল্ডকেয়ার সেন্টারে প্রেরণ করছেন। আবার আমেরিকার সমাজব্যবস্থায় সন্তানদের আদর-আতিথ্যে বৃদ্ধ পিতা-মাতার শেষ বয়স কাটানো কিংবা মারা যাওয়ার নজির আদৌ মেলে না। তাই আজ থেকে ২০-৩০ বছর পর যখন বর্তমানের অতি সাবধানী অভিভাবকগণ ৭০ বছর বয়সে পা দেবেন, তখন নিজেদের অবস্থা কী হবে, তা এখনই দয়া করে একটু ভেবে দেখুন। কারণ তখন বৃদ্ধাশ্রমে এবং ওল্ডকেয়ারে থাকা লোকের সংখ্যা নির্ঘাত তুঙ্গে উঠবে। সেই ন্যুব্জদেহ ও কুব্জপৃষ্ঠধারী আপনার আর আমার আশ্রয় হবে আমেরিকার সড়ক, মহাসড়ক এবং স্ট্রিটে। অধিকন্তু তত দিনে সিঙ্গেল ফাদার এবং সিঙ্গেল মাদারের গুরুভারে বসুন্ধরা তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে। তাই এবারের পিতৃ দিবসে গোটা বিশ্বের পরাশ্রয়ী অসহায় বুড়ো বাবাদের জন্য বিশ্ববিধাতার বিশেষ আশীর্বাদ কামনা করছি। আমিন!
লেখক : সহযোগী সম্পাদক, ঠিকানা, নিউইয়র্ক।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078