পুশইন : বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের সেই পুরোনো তীর

প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৫, ১৯:৫৭ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশে এখন হাজারো সংকট। সংকট সংকট আর সংকট। রাজনীতির সংকট, অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংকটে ভরপুর বাংলাদেশ। ৮ আগস্ট ২০২৪-এ সংকটের সব অবসান ঘটবে বলে আশায় বুক বেঁধেছিল বাংলাদেশের মানুষ। মনে করেছিল, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, তা-ও শান্তিতে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছেন, তখন বাংলাদেশ ৫৪ বছরের হানাহানিতে মেতে থাকলেও, এবার নিশ্চয় দেশের রাজনীতিতে শান্তি ফিরবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতভেদ, হানাহানি, প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধপরায়ণতার অবসান ঘটবে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে যেসব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করে আসছিল, সেসবের অবসান ঘটবে। বিশেষ করে, সবচেয়ে নিকটতম এবং বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে যেসব অনিষ্পত্তি ও অমীমাংসিত বিষয় দীর্ঘদিন পড়ে রয়েছে, সেসব অমীমাংসিত বিষয় মীমাংসার একটা পথ খুঁজে পাবে।
কিন্তু এ পর্যন্ত সেসব নিয়ে কোনো আলাপ-আলোচনা দেখা যাচ্ছে না। বরং পরিস্থিতি জটিল থেকে আরও জটিলতর হতে দেখা যাচ্ছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সংকট আরও ঘনীভূত হতে থাকে। ভারতে অবস্থান করে দেশের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে উদ্দীপক কথাবার্তা বলতে শুরু করেন শেখ হাসিনা, তাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিবাদ জানিয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে সরকারের পক্ষে কিছু পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়। ফলে অবস্থার উন্নতি ঘটার পরিবর্তে ক্রমাগত অবনতির দিকে যেতে থাকে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক।

ভারত সরকার বাংলাদেশ সীমান্তে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে থাকে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিহত হওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশি নাগরিকের তকমা লাগিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করতে শুরু করে ভারত। এই পদক্ষেপ ভারতের অত্যন্ত পুরোনো একটা খেলা, যে খেলায় বাংলাদেশকে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে বিরক্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত করা যায়। যা কোনো সু এবং সৎ প্রতিবেশীর কাজ হতে পারে না। অযৌক্তিক এ কারণে যে, ভারত থেকে যাদের বাংলাদেশে পুশইন করা হয়, তাদের মধ্যে প্রায় সবাই ভারতীয়। যারা বাংলাদেশি, তারাও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বৈধভাবে সেখানে কাজ করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে, ৮ আগস্টের পর বর্তমান ড. ইউনূস সরকারের আমলে মোদি সরকার আরও জোরালোভাবে এই পুশইন পদক্ষেপ শুরু করেছে। এর ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ‘পুশইন সংকট গভীর হচ্ছে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে ঠিকানার ৪ জুন সংখ্যায় প্রথম পৃষ্ঠায়। খবরটিতে বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে ভারত প্রতিদিন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে মানুষ ঠেলে দিচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা, বিজিবি-বিএসএফের বিভিন্ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক কিংবা মৌখিক ও লিখিতভাবে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েও অন্তর্বর্তী সরকার কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। বিষয়টি যেভাবে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে করা হচ্ছে, তা মানবাধিকার লঙ্ঘন জেনেও ভারত পুশইন অব্যাহত রেখেছে।

পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি পুশইন করা হয়েছে মৌলভীবাজার জেলার তিন সীমান্ত দিয়ে। তবে এই সংকট নিরসনের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি খবরটিতে। খবরটিতে কোনোভাবেই সৎ এবং বৃহৎ প্রতিবেশীর পরিচয় মেলে না। এভাবে একদিন সীমা ছাড়িয়ে গেলে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক ভেঙে পড়বে, যা কোনোভাবেই একটি প্রতিবেশী দেশের কাম্য হতে পারে না।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078