রাজনীতিতে হতাশা

প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৫, ২০:১৯ , অনলাইন ভার্সন
হতাশা খুবই একটা নেগেটিভ শব্দ। সর্বক্ষেত্রেই হতাশা প্রযোজ্য হতে পারে। যেখানে এই হতাশা দেখা দেবে-সেখানেই আশা, উদ্যম, উদ্যোগ, বিকাশ বাধাগ্রস্ত বা নিম্নমুখী হবে। ব্যক্তিজীবনে হতাশা মানুষকে কর্মোদ্যমহীন করে ফেলে। হতাশাগ্রস্ত মানুষ সব সময় ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখতে পায়। পারিবারিক জীবনে হতাশা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। হতাশাগ্রস্ত মানুষ অনেক সময় বেঁচে থাকার অর্থ হারিয়ে ফেলে। তারা সব সময় মৃত্যুচিন্তা করে। অনেক সময় হতাশায় আক্রান্ত মানুষ আত্মহননের পথও বেছে নেয়। একজনের হতাশার কারণে অনেক সময় পুরো সংসার তছনছ হয়ে যায়।

যে জাতি হতাশায় নিমজ্জিত হয়, সে জাতি আর সামনে অগ্রসর হওয়ার পথ দেখতে পায় না। হতাশাগ্রস্ত জাতির উন্নয়ন-অগ্রগতির চাকা বন্ধ হয়ে যায়। হতাশায় আক্রান্ত জাতি তার নাগরিকদের সামনে অগ্রসর হওয়ার জন্য উজ্জীবিত করতে ব্যর্থ হয়। মনোবিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করে থাকেন, কোনো ব্যক্তি বা পরিবার হতাশায় পড়লে সেই ব্যক্তি বা পরিবারকে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে হতাশামুক্ত করা যায়। কিন্তু যদি রাজনীতিই হতাশায় আক্রান্ত হয়, তা থেকে উদ্ধার পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়ে।

বক্ষ্যমান সম্পাদকীয়তে রাজনীতিতে হতাশা নিয়েই কিছু কথা বলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঠিকানার ২৮ মে সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠার শিরোনাম : ‘রাজনীতিতে বাড়ছে হতাশা’। প্রতিবেদক শফিকুল আলম তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘রাজনীতিতে হতাশা বেড়েই চলেছে। দেশ যেন কিছুতেই গণতন্ত্রের পথে যেতে চাইছে না। না নির্বাচন, না সংস্কার কোনোটাই হচ্ছে না। বিগত তিনটি তত্ত্ববধায়ক সরকার যেখানে ৯৩ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছেÑসেখানে তার তিনগুণ সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। ফ্যাসিস্টদের বিচার চলছে ঢিলেতালে। সব মিলে দেশের রাজনীতেতে নেমে এসেছে চরম এক হতাশা।’

প্রতিবেদক জানিয়েছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই তিনি প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। জনমনে বা রাজনীতিতে এ মুহূর্তে রাজনীতিবিদেরাই একমাত্র জনগণের মনের সঠিক তত্ত্ব জানতে পারেন। বাংলাদেশের বিদ্যমান অবস্থায় রাজনীতিতে হতাশার কথা আর কারও পক্ষে সঠিকভাবে অনুভব করতে পারার কথা নয়।
বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতাই মনে করেন, বর্তমান যে হতাশা দেশজুড়ে ঘন হয়ে এসেছে, তার পেছনের কারণ অন্তর্বর্তী সরকার যেসব কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করবে বলে বারবার বলছে এবং সেসব নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করছে, যেমন সংস্কার, গণতন্ত্র এবং নির্বাচন, এর কোনো একটিরও কোনো অগ্রগতি হয়েছে, এমনটা কেউ বলতে পারছে না। বরং এসব নিয়ে ড. ইউনূস সরকার যত ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছে, জনজীবনে হতাশা ততই বেড়ে চলেছে।

কেউ কেউ বলছেন, আগামী বছরের এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হলেও একটা সংস্কারও সম্পন্ন করতে পারেনি সরকার। ফলে দিন দিন হতাশা বাড়ছে। কেউবা বলছেন, সংস্কার যদি সরকারের অগ্রাধিকার হয়, তবে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব ছিল। কেননা নির্বাচন কমিশন নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আসলে রাষ্ট্রীয় জীবনে যে হতাশা বাড়ছে, তার মূলে রয়েছে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি। অধ্যাপক ড. ইউনূস সরকারের নির্বাচন বিলম্বিত করার ইচ্ছার প্রতিফল ঘটছে রাজনৈতিক হতাশার মধ্য দিয়ে। বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের আকাক্সক্ষা অনুযায়ী সরকার নির্বাচন দিতে না চাওয়ার ফলে রাজনীতিতে হতাশা বাড়ছে। এ অবস্থার অবসান চাইলে সরকারকে অবশ্যই জনগণের আকাক্সক্ষা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078