‘চোকার্স’ তকমা ঘুচিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৫, ২০:৪৯ , অনলাইন ভার্সন
যুগের পর যুগ এক অভিশাপ পেছনে লেগেছিল। বড় মঞ্চে বারবার ব্যর্থতা, সম্ভাবনার চূড়ায় উঠে ধসে পড়ার বেদনা। সব মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার নামের পাশে একটিই তকমা বসে গিয়েছিল, ‘চোকার্স’। কিন্তু সেই নাম এবার ইতিহাসে ঠাঁই নেবে না আর। দক্ষিণ আফ্রিকার কপালে শিরোপা যেন ছিল মরীচিকা। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল। লর্ডসের সবুজ গালিচায় অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেই গ্লানি মুছে দিয়েছে প্রোটিয়ারা। ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে গেল নতুন পরিচয়—বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা।

২৭ বছর আগে হ্যান্সি ক্রনিয়ের নেতৃত্বে ঢাকার জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শিরোপার মুকুট একবার উঁচিয়ে ধরেছিল প্রোটিয়ারা। সেটা ছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। তৎকালীন সময়ে প্রতিযোগিতাটির নাম ছিল নকআউট টুর্নামেন্ট। উইন্ডিজকে হারিয়ে তারা প্রথমবার পেয়েছিল কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা। তার পর থেকেই শিরোপা খরা। যা তাদের এনে দেয় চোকার্স তকমা। অবশেষে হলো শাপমুক্তি।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। দলের জয়ে সব সংস্করণ মিলিয়ে ৪৩ ইনিংস পর পাওয়া এইডেন মার্করামের লড়াকু সেঞ্চুরি রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

চতুর্থ ইনিংসে প্রোটিয়াদের জয়ের লক্ষ্য ছিল ২৮২। খুব বড় নয়! কিন্তু এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পেসারদের তোপের মুখে আগের তিন ইনিংসে যেভাবে ভেঙে পড়েছে দুই দলের ব্যাটিং লাইনআপ, সেই হিসেবে এই লক্ষ্য শুধু ‘বড়’ই নয়, রীতিমতো দুর্বোধ্য! সেই লক্ষ্য তাড়ায় যেভাবে ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’ পেরিয়েছে প্রোটিয়ারা, অসাধারণই বলা যায়।

২ উইকেটে ২১৩ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। জিততে আজ শনিবার চতুর্থ দিনে তাদের প্রয়োজন ছিল ৬৯ রান, হাতে ৮ উইকেট। তবে দিনের তৃতীয় ওভারেই ঘটে বিপর্যয়। ব্যক্তিগত ইনিংসে ১ রান যোগ করার পরই ফেরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ১৩৪ বলে ৫ চারে ৬৬ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

তৃতীয় উইকেটে মার্করাম-বাভুমার ১৪৭ রানের জুটির কল্যাণেই মূলত জয়ের পথ মসৃণ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার। চতুর্থ উইকেটে ট্রিস্টান স্টাবসের সঙ্গে আবারও জুটি লম্বা করার চেষ্টা করেন মার্করাম। তবে মিচেল স্টার্ক দারুণ এক ইনসুইংয়ে স্টাবসকে (৮) বোল্ড করে ভাঙেন ২৪ রানের জুটি। এক প্রান্তে অবিচল থেকে দলকে জয়ের কাছে পৌঁছে দেন ওপেনিংয়ে নামা মার্করাম।

জয় থেকে যখন ৬ রান দূরে, জশ হ্যাজলউডের বলে শর্ট মিড উইকেটে ট্রাভিস হেডকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মার্করাম। ২০৭ বলে খেলেছেন ১৩৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরির ইনিংসে ছিল ১৪টি চার। দলকে জিতিয়ে শেষ পর্যন্ত ডেভিড বেডিংহাম ২১ ও ভেরেইনা ৪ রানে অপরাজিত থাকেন। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে মিচেল স্টার্ক ৩টি, প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজলউড নিয়েছেন ১টি করে উইকেট। ম্যাচসেরা হয়েছেন এইডেন মার্করাম।

ফাইনালে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কাগিসো রাবাদা-মার্কো ইয়ানসেনদের তোপের মুখে ২১২ রানে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। স্টার্কের দাপটে প্রোটিয়ারাও সুবিধা করতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। ৭৪ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৭ রান করে অস্ট্রেলিয়া। সব মিলিয়ে তাদের লিড হয় ২৮১ রান।

তাতেই প্রোটিয়াদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮২ রানের। তবে সে লক্ষ্য যে ছিল কেবল সংখ্যার খেলা নয়। এ ছিল একটা জাতির বহু বছরের অপ্রাপ্তি পূরণের লড়াই। সেই লড়াইয়ে ব্যর্থতা নয়, এবার বিজয়ের গল্প লিখল দক্ষিণ আফ্রিকা। চোকার্স তকমা ঘুচিয়ে এখন তারা গর্বিত এক নাম—বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।

ঠিকানা/এনআই
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078